জামায়াতে ইসলামীর খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেছেন, যাদের রক্তের বিনিময়ে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে তাদেরকে নিয়ে এখন পর্যন্ত কারো ভাবনা চোখে পড়েনি। একমাত্র আমীরে জামায়াতের নির্দেশে প্রত্যেক শহীদ পরিবারকে ২ লাখ টাকা করে এবং আহতদের খুঁজে-খুঁজে চিকিৎসা ও পুনবার্সনের উদ্যোগ নিয়েছে। এর সাক্ষী উপস্থিত শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহত-পঙ্গুত্ব বরণকারী ভাই-বোন। তিনি আরো বলেন, আমীরে জামায়াত বলেছেন, ১৯৫২, ১৯৬৯, ১৯৭১, ১৯৯০ সহ আমাদের সকল আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাস বিকৃত হয়েছে। ২০২৪ এর ইতিহাস বিকৃত করা যাবে না। এজন্য শহীদদের স্মরণে ১০ খন্ডে ২৫০০ পৃষ্ঠার বই প্রকাশ করা হয়েছে। এই বইতে শহীদদের পরিচয়, গণ-অভ্যুত্থানে ভূমিকা ও শহীদ হওয়ার ঘটনা এবং স্থান সংরক্ষণ করা হয়েছে।
শনিবার (১২ জুলাই) সকালে নগরীর আল ফারুক সোসাইটিতে খুলনা মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে জুলাই-আগষ্ট ’২৪ গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ মতবিনিময় ও দোয়া অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, এই গণ-অভ্যুত্থানের ইতিহাস মুছে যেতে দিবে না জামায়াতে ইসলামী। তিনি উপস্থিত শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহত-পঙ্গুত্ব বরণকারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, নতুন বাংলাদেশ আপনাদের। আপনাদেরই গণ-অভ্যুত্থানের অর্জন ধরে রাখতে হবে। তিনি বলেন, জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের স্মৃতিবাহী সময়ে আগামী ১৯ জুলাই ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘জাতীয় সমাবেশ’ জাতীয়ভাবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আসন্ন জাতীয় সমাবেশ সফল করতে তিনি সর্বস্তরের জনশক্তি ও দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
মহানগরী সহকারী সেক্রেটারি প্রিন্সিপাল শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলালের পরিচালনায় বক্তৃতা করেন ও উপস্থিত ছিলেন মহানগরী নায়েবে আমীর অধ্যাপক নজিবুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট শাহ আলম, মীম মিরাজ হোসাইন, মাওলানা শেখ মো. অলিউল্লাহ, মাওলানা শাহারুল ইসলাম, জাহিদুর রহমান নাঈম, মো. মশিউর রহমান রমজান, শহীদ সাকিব রায়হানের গর্বিত পিতা মো. আজিজুর রহমান, আহত মো. সিরাজুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম উজ্জল, এস এ মুকুল প্রমুখ।
মহানগরী আমীর আরো বলেন, জামায়াতে ইসলামী ঘোষিত ৭ দফা আদায়ের মাধ্যমেই ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের সফলতা অর্জন করতে হবে। জামায়াতের ৭ দফা দাবি হলো-সব গণহত্যার বিচার, প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার, জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসন, পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান, প্রবাসীদের ভোট প্রদানের ব্যবস্থা এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণ।
মহানগরী আমীর আরও বলেন, যারা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের হাত থেকে জাতিকে মুক্ত করতে গিয়ে আহত-পঙ্গুত্ব বরণ করেছে তারা ইসলামের দৃষ্টিতে গাজী এবং গণহত্যার শিকার সকলে শহীদ। তিনি উপস্থিত সকলকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় রাজপথে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান
সভাশেষে গণহত্যার শিকার পরিবারকে হত্যাকারীদের বিচার দেখার সুযোগ দান এবং বাংলাদেশের জন্য আগামীতে ন্যায়-পরায়ন শাসক কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এ সব উপস্থিত শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহত-পঙ্গুত্ব বরণকারীরা আমীন কন্ঠে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
খুলনা গেজেট/এসএস