দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে খুলনার রূপসা উপজেলার ৩ নম্বর নৈহাটি ইউনিয়নের কর্ণপুর থেকে ইলাইপুর মোড় পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সড়ক যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। এরই মধ্যে সড়কটির বিভিন্ন স্থানের পাথর ও পিচ উঠে গেছে। সড়কের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। সড়কটি দীর্ঘদিনেও সংস্কার না হওয়ায় চলাচলের অনূপযোগী হয়ে পড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ছোট-বড় গাড়ি। এতে প্রায় সময় দুঘর্টনার কবলে পড়ছে পথচারী ও যাত্রীরা।
সরেজমিনে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানাগেছে, এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষের যাতায়াত। বছর তিনেক আগে রাস্তাটি সংস্কার করা হয়। সংস্করের কিছুদিন পর থেকে সড়কের পিচ (বিটুমিন) উঠে যেতে শুরু করে। এরই মধ্যে সড়কটির বিভিন্ন স্থানের পাথর ও পিচ উঠে গেছে। দেখে বোঝার উপায় নেই এটি কাঁচা সড়ক নাকি পাকা সড়ক। একটু বৃষ্টিতেই সড়কটি কাঁদা-পানিতে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ভ্যান, সাইকেল, মোটরসাইকেল চলাচলও কঠিন হয়ে পড়ে। হেঁটে চলতেও ভোগান্তির শিকার হন বয়োবৃদ্ধ ও স্কুল-কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া ওই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকারও হচ্ছেন পথচারীরা।
নৈহাটি ইউনিয়নের কর্ণপুর এলাকার বাসিন্দা আবু আরমান খুলনা গেজেটকে বলেন, ‘প্রতিনিয়ত আমরা জনগণের দুর্ভোগ দেখে আসছি। বর্ষাকালে বেশি ভোগান্তির শিকার হতে হয়। ইজিবাইক এই সড়ক দিয়ে যেতে গেলে উল্টে যায়। জনসাধারণের এই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে খুব কষ্ট হয়।’
ওই এলাকার আরেক বাসিন্দা কাউসার শেখ খুলনা গেজেটকে বলেন, ‘রূপসা-বাগেরহাট পুরাতন সড়ক থেকে খুলনা-মোংলা মহাসড়কে দ্রুত যেতে এই সড়ক ব্যবহৃত হয়। সড়কটি দিয়ে ছোট যানবাহন চলাচলের কথা থাকলেও ভারী যানবাহন চলাচল করে। এ কারণে বর্তমানে সড়কের অবস্থা খুব খারাপ। দীর্ঘদিন ধরে সড়কের বেহাল অবস্থা থাকার পরেও সংস্কার করা হচ্ছে না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জরুরি ভিত্তিতে রাস্তাটি পাকা করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।’
ইজিবাইক চালক তাইফুর রহমান খুলনা গেজেটকে বলেন, ‘বর্তমানে সড়কের যে অবস্থা। তাতে যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে ভয় করে। এক সপ্তাহ আগে যাত্রী নিয়ে যাওয়ার পথে গর্তে পড়ে ইজিবাইক উল্টে যায়। তবে সবাই সুস্থ ছিল। যে কারণে আপাতত ওই সড়ক দিয়ে ইজিবাইক নিয়ে চলাচল করছি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বেহাল এ রাস্তার কারণে প্রায়ই গাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। নাটবোল্ট খুলে পড়ে। এতে আমাদের লোকসানের মুখে পড়তে হয়।
ওই সড়কে চলাচলকারী শিক্ষার্থী আরিফা খাতুন খুলনা গেজেটকে বলেন, ‘সড়কটির বেশির ভাগ স্থানই বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। একটু বৃষ্টিতেই সড়কটি কাঁদা-পানির কারণে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবী জানাচ্ছি।’
ভ্যানচালক কামরুল ইসলাম খুলনা গেজেটকে বলেন, ‘সড়কের অবস্থা খুব খারাপ আগে কর্ণপুর থেকে ইলাইপুর মোড়ে আমরা অল্প সময়ের মধ্যে পৌঁছে যেতাম। এখন অনেক দূর ঘুরে চলাচল করতে হয়।’
নৈহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) ইলিয়াস শেখ খুলনা গেজেটকে বলেন, ‘সড়কটির জন্য ওই এলাকার মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। প্রায় সড়কটিতে দূর্ঘটনা ঘটছে। নতুন সড়ক তৈরি না হওয়া পর্যন্ত এ সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে না।’
রূপসা উপজেলা প্রকৌশলী শোভন সরকার খুলনা গেজেটকে বলেন, সড়কটির অবস্থা খুব খারাপ। জনদুর্ভোগ কমাতে সড়কটির যেসব স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সেগুলো ইটবালু দিয়ে বন্ধ করে দেওয়ার কাজ চলছে। আমি নিজে সরেজমিনে রাস্তাটি পরিদর্শন করে এসেছি। রাস্তাটি নতুন করে তৈরি করতে হবে। বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এমএম