বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আনিন্দ ইসলাম অমিত বলেছেন, রাজনীতির আকাশে কালো মেঘ দেখা যাচ্ছে। আমাদের মধ্যে উদ্বেগ উৎকন্ঠা কাজ করছে। কিন্তু এই কালো মেঘতো দেখা যাবার কথা ছিল না। শনিবার (২৪ মে) দুপুরে বাগেরহাট শহরের স্বাধীনতা উদ্যানে বাগেরহাট পৌর বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুথ্যানের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশ ছাড়া করেছে। এরপরে ফ্যাসিব্যাদ বিরোধী সকল শক্তি অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনে রায় দিয়েছি। আমরা প্রফেসর ইউনুসের নেতৃত্বাধীণ সরকারকে সমর্থন দিয়েছি। সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল জাতীয়তাবাদী দল। যে দলের শুধু সাত শতাধিক নেতাকর্মী গুম হয়েছে। বাংলাদেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার লড়াই দলের অনেক নেতাকর্মী খূন হয়েছে, বিচার বহির্ভূত হত্যার স্বীকার হয়েছে। সেই দল হিসেবে আমরা একক কৃতিত্ব দাবি করিনি। কিন্তু বর্তমান সরকার আমাদের হতাশ করেছে।
তিনি আরও বলেন, যেখানে গেল ১৬ বছর বাংলাদেশের মানুষ ভোট দিতে পারেনি। সেখানে তারেক রহমান, তাদের কর্মীদের জন্য ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচনের সুযোগ করে দিয়েছেন। তৃণমূলের নেতা নির্বাচনে বিএনপির মধ্যে যে গণতান্ত্রিক চর্চা, এই পদ্ধতি থেকে অন্য রাজনৈতিক দলও শিখতে পারে। আমি মনে করি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও নির্বাচন কমিশনেরও এ থেকে শেখার আছে, কিভাবে সুষ্ঠ নির্বাচন করতে হয়।
বাগেরহাট পৌর বিএনপির আহবায়ক এসকেন্দার হোসেনের সভাপতিত্বে সম্মেলনে জেলা বিএনপির আহবায়ক এটিএম আকরাম হোসেন তালিম, সদস্য সচিব মোজাফফর রহমান আলম, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও জেলা বিএনপির সমন্বয়ক এমএ সালাম, জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক লায়ন ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম, জেলা বিএনপি নেতা শেখ মুজিবুর রহমান, অ্যাডভোকেট শেখ অহিদুজ্জামান দিপু, কামরুল ইসলাম গোরা, শমসের আলী মোহন, খান মনিরুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার মাসুদ রানা, ব্যারিস্টার শেখ জাকির হোসেন, অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান, ডা.হাবিবুর রহমান সিদ্দিকী, ওয়াহিদুজ্জামান পল্টুসহ জেলা ও উপজেলা ও কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে দীর্ঘ ১৭ বছর পর প্রকাশ্যে পৌর বিএনপির সম্মেলন ও নেতা নির্বাচনে প্রত্যক্ষ ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ায় নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসাহ-উদ্দিপনা বিরাজ করছে। দুপুর সাড়ে ১২টায় জাতীয় সংগীত ও পায়রা উড়িয়ে সম্মেলন শুরু করেন নেতাকর্মীরা। সম্মেলন শেষ হয় দুপুর ২টায়।সভা শেষে শহরের বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ভোট গ্রহন শুরু হয়। ভোট গ্রহন চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। ভোট গ্রহন শেষে সন্ধ্যার মধ্যে ফলাফল ঘোষনা করা হবে। এরপর নেতাকর্মীরা বরণ করে নেবেন বিজয়ী প্রিয় নেতাকে।
দলীয় সূত্রে থেকে জানা গেছে, তফসিল অনুযায়ী তিনটি পদ অর্থ্যাৎ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নির্বাচন হবে। এসব পদে পৌরসভার বিএনপিতে ১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে মোট ৬৩৯ জন ভোটার রয়েছেন।
ভোটার ও কয়েকজন বিএনপি নেতা জানান, দীর্ঘ ১৭ বছর নেতাকর্মীরা এভাবে একত্রিত হতে পারেননি। যখনই তারা একত্রিত হওয়ার চেষ্টা করেছেন তখনই আওয়ামী লীগ সরকারের প্রশাসন দ্বারা নানাভাবে হয়রানীর শিকার হয়েছেন। কিন্তু এখন প্রেক্ষাপট পাল্টে যাওয়ায় নির্ভয়ে দলীয় নেতাকর্মীরা একত্রিত হচ্ছেন। পছন্দের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে ছুটছেন ভোটারদের কাছে। গণতান্ত্রিক পন্থায় নেতা নির্বাচনের উদ্যোগকে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা সাধুবাদ জানিয়েছেন। তবে আগামী দিনে পৌর বিএনপির হাল কে ধরছেন তা নিয়ে শুরু হয়েছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
খুলনা গেজেট/এএজে