থিবো কোর্তোয়া– প্রজন্মের অন্যতম সেরা গোলরক্ষক হিসেবে তার নামটা বলা যায় অনায়াসে। এইতো দিনদুয়েক আগেও অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে দিয়েছিলেন দুর্দান্ত পারফরম্যান্স। যদিও জাতীয় দল থেকে অবসর গিয়েছিলেন ২০২৩ সালে। সেই অবসরটাও অবশ্য অভিমানে।
২০২৩ সালের জুনে ইউরো বাছাইয়ে অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে শেষবার বেলজিয়ামের জার্সিটা গায়ে চড়িয়েছিলেন কর্তোয়া। দমেনিকো তেদেসকো তখন বেলজিয়ামের কোচ। কিন্তু জার্মান এই কোচের সঙ্গে মোটেই বনিবনা ছিল না কোর্তোয়ার। তখনই কোর্তোয়া বিদায় জানান বেলজিয়াম জাতীয় দলকে। আর ইউরো শুরুর আগে তেদেসকোও জানান, তার পরিকল্পনায় নেই কোর্তোয়া।
আর এই জটিলতার সুবাদেই কপাল খুলে যায় কোয়েন কাস্তেলসের। বেলজিয়ামের নাম্বার ওয়ান গোলরক্ষক হয়েছেন। ইউরো খেলেছেন। কিন্তু তেদেসকার অধীনে বেলজিয়াম ছিল ছন্নছাড়া। ইউরোতে কোয়ার্টারেও যেতে না পারায় চলতি বছরের জানুয়ারিতে ছাঁটাই হন তেদেসকা। নতুন কোচ হিসেবে আসেন রুডি গার্সিয়া। আর তারপরেই কোর্তোয়া জানালেন, তিনি বেলজিয়ামের জার্সিতে আবার মাঠে ফিরতে রাজি।
এটাই মূলত পছন্দ হয়নি কাস্তেলসের। যিনি ব্যক্তিগত কারণে দল ছেড়েছেন, তিনিই ফের ফিরে আসবেন সেটা কাস্তেলসের পছন্দ না। তবে এরচে বড় সত্য, কোর্তোয়াকে পাশ কাটিয়ে কাস্তেলসের পক্ষে বেলজিয়ামের নাম্বার ওয়ান গোলরক্ষক হওয়াটাও খুব কঠিন। সব মেনেই তাই ক্ষুব্ধ কাস্তেলস বিদায় বললেন আন্তর্জাতিক ফুটবলকে।
বেলজিয়ান পডকাস্ট মিডমিডকে বলেন, ‘এটা অদ্ভুত যে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে তাকে বরণ করে নিতে লালগালিচা বিছিয়ে রাখছে।’ তার কথায় ক্ষোভের প্রকাশ ছিল স্পষ্ট।
‘প্রথমত আমি মনে করি এটা খুবই অদ্ভুত যে কোর্তোয়া নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারছে সে দলে ফিরবে কি না। এটায় মূলত কোর্তোয়ার প্রতি কোনো কথা বলছি না। বলছি ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের প্রতি। আমি একটা দলীয় খেলা বা খেলাধুলার কোনো সংগঠনের জন্য আদর্শ এবং মূল্যবোধ থাকা উচিত বলে মনে করি, তার সঙ্গে মোটেই খাপ খায় না। আজকের পর থেকে জাতীয় দলের জন্য আমি আর নেই।’
আগামী ২০ ও ২৩ মার্চ ইউক্রেনের বিপক্ষে দুই লেগের প্লে–অফ ম্যাচ খেলবে বেলজিয়াম। নেশনস লিগের এই প্লে–অফ সামনে রেখে বেলজিয়ামের ২৬ সদস্যের দলে কোর্তোয়াকে ফিরিয়েছেন গার্সিয়া। সেখানে চার গোলরক্ষক রাখা হয়েছে, তাতে কাস্তেলস নেই।
তবে এখানেই দ্বন্দ্ব থামছে না। জাতীয় দলের সব খেলোয়াড় যে ড্রেসিংরুমে কোর্তোয়ার ফেরা ভালোভাবে নিচ্ছেন, এমন ভাবার সুযোগ কম। স্কোয়াড ঘোষণার সংবাদ সম্মেলনে গার্সিয়া অবশ্য বলেছেন, কোর্তোয়ার বিষয়ে তিনি ‘সবকিছু নতুন করে শুরু’ করতে চান। কিন্তু একবার নিজ থেকে সরে যাবার পর কোর্তোয়ার এমন প্রত্যাবর্তন নতুন শুরুর বদলে বিতর্ক উসকে দেবে কি না– সেটাই বড় প্রশ্ন।
খুলনা গেজেট/এএজে