পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে যশোরে নিরাপত্তা জোরদার করেছে পুলিশ প্রশাসন। জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সাতশ’র অধিক পুলিশ মোতায়েনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
এসব পুলিশি টিমের মধ্যে রয়েছে, ২৫টি ফুট প্যাট্রোল টিম, ৬০টি মোবাইল টিম, ১৩টি পিকেট টিম, ২৭টি বাইক মোবাইল ডিউটি টিম। আটটি উপজেলার পাশাপাশি শহর ও শহরতলীর অপরাধ প্রবন এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে যশোর পুলিশ বিভাগ। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) দুপুর ২ টায় পুলিশ সুপারের কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার নূর-ই-আলম সিদ্দিকী।
তিনি বলেন, যশোর শহর এবং শহরতলীতে ২৮টি মোবাইল টিম কাজ করবে, যারা শহরের প্রধান সড়ক, অলিগলি এবং গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে টহল দেবে। চুরি, ছিনতাই ও অন্যান্য অপরাধ প্রতিরোধে ৪টি বিশেষ পিকেট টিম এবং ৭টি ফুট প্যাট্রোল টিম সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে।
ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার বলেন, রমজান মাস এবং ঈদুল ফিতরকে ঘিরে যশোর জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে জেলা পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশি টহল এবং গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, রমজানের শেষ দশকে এবং ঈদের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও কঠোরভাবে নজরদারি করা হবে। মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের অপরাধ প্রতিরোধে পুলিশ সর্বোচ্চ তৎপর থাকবে।
তিনি বলেন, যশোরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে সাদা পোশাকে পুলিশের বিশেষ দল মোতায়েন থাকবে, যাতে অপরাধীদের দ্রুত চিহ্নিত করা যায় এবং প্রয়োজনে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি থানায় কুইক রেসপন্স টিম (QRT) গঠন করা হয়েছে। এছাড়া, যশোর কোতোয়ালী থানা এলাকা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একাধিক দল প্রয়োজনে দ্রুত অভিযানে নামবে। যে কোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশের একাধিক বাইক টিমও সক্রিয় থাকবে।
তিনি আরও বলেন, রমজান ও ঈদের সময় শহরে মানুষের সমাগম এবং যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পায়। এ কারণে বিশেষ ট্রাফিকিং পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার বলেন, শহরের যানজট কমানোর জন্য ট্রাফিক পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সার্বক্ষণিক মাঠে থাকবে। রাস্তা দখলমুক্ত রাখতে ব্যবসায়ী, রিকশা-ভ্যান শ্রমিক ও মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। রমজান মাসে ছিনতাই ও অন্যান্য অপরাধ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রবণতা থাকে। এ বিষয়টি মাথায় রেখে যশোর জেলা পুলিশ বিশেষ টিম গঠন করেছে। বিশেষ করে ব্যাংক, শপিং মল ও গুরুত্বপূর্ণ বাজার এলাকায় পুলিশের বিশেষ নজরদারি থাকবে।
তিনি আরও বলেন, যারা বড় অঙ্কের আর্থিক লেনদেন করবেন, তাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে। কোনো ধরনের সন্দেহজনক কিছু মনে হলে নিকটস্থ পুলিশ স্টেশন বা হটলাইন নম্বরে জানানোর অনুরোধ করেন।
ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার নূর-ই-আলম সিদ্দিকী বলেন, আমাদের প্রধান লক্ষ্য হলো যশোরবাসীর জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা, যাতে তারা নিশ্চিন্তে রমজান পালন এবং ঈদ উদযাপন করতে পারে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) আবুল বাশার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) রুহুল আমিন, সিনিয়র এএসপি (নাভারন সার্কেল) নিশাত আল নাহিয়ান, যশোর ডিবি পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মনজুরুল হক ভূঁইয়া, যশোর ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর মাফুজুর রহমানসহ জেলা পুলিশের উধ্বতন কর্মকর্তারা।
খুলনা গেজেট/এএজে