প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের ষষ্ঠ দফার যাচাই-বাছাই শুরু হয়েছে। অমুক্তিযোদ্ধাদের আত্মসমর্পণের জন্য মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় ওয়েবসাইটে নির্ধারিত ফরম ছেড়েছে। ইতিমধ্যেই রূপসার ২ জন মন্ত্রণালয়ের ডাকে সাড়া দিয়েছেন। রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখতে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের খুলনা মহানগর ও জেলা ইউনিট অমুক্তিযোদ্ধাদের সামাজিকভাবে বয়কটের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের পর মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা চূড়ান্ত করেছে। সংজ্ঞা উল্লেখ করা হয়েছে, রণাঙ্গনের শত্রুকে মোকাবেলা করার জন্য সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধারাই প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। এতে মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন সংগঠনের দীর্ঘদিনের দাবি আদায় হয়েছে। সংজ্ঞা চূড়ান্ত করার পরে মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই শুরু হয়েছে। বলা হয়েছে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অমুক্তিযোদ্ধারা আত্মসমর্পণ না করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পাঁচ আগষ্ট পট পরিবর্তনের পর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের খুলনা জেলা ও মহানগর ইউনিট বাতিল হয়ে যায়। অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে স্থানীয় উদয়ণ ক্লাবে জেলার মুক্তিযোদ্ধাদের এক সভায় নয়া সাংগঠনিক কাঠামো দাঁড় করানো হয়। নয়া কমিটি গঠনের পরে তারা সিদ্ধান্ত নেন অমুক্তিযোদ্ধাদের সামাজিকভাবে বয়কট করা হবে। প্রথম পদক্ষেপে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে শিল্পকলা একাডেমিতে জেলা প্রশাসন আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা অনুষ্ঠানে অমুক্তিযোদ্ধাদের দাওয়াত দেওয়া হয়নি। জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে নগরীর মাষ্টারপাড়া এলাকায় সদর উদ্দিনের পুত্র শেখ নজরুল ইসলাম মারা গেলে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেউ গার্ড অব অনার অনুষ্ঠানে হাজির হননি। পক্ষান্তরে তারা জেলা প্রশাসনকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন অমুক্তিযোদ্ধাদের গার্ড অব অনার অনুষ্ঠান আয়োজন না করা।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সূত্র বলছে, মাস্টারপাড়া সদরউদ্দিন শেখ এর তিন পুত্র যথাক্রমে শেখ সিরাজুল ইসলাম ও শেখ কামরুল ইসলাম ও শেখ আমিরুল ইসলাম মুক্তিযুদ্ধের সাথে সম্পৃক্ত নন। তারা ৯৬ সালে মুক্তিযোদ্ধা সনদ গ্রহণ করেন।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদের জেলা আহবায়ক মোঃ আবু জাফর বলেছেন, অমুক্তিযোদ্ধাদের জাতীয় অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেওয়া হবে না। তাদেরকে সামাজিকভাবে বয়কট করার জন্য নগরবাসীকে আহবান জানানো হয়েছে।
নগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক ও কেসিসির সাবেক মেয়র মোঃ মনিরুজ্জামান মনি বলেছেন, শীঘ্রই অমুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। তার আগে বিষয়টি নগরবাসীর কাছে প্রকাশ করা হবে।
অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, অমুক্তিযোদ্ধা আমেরিকা প্রবাসী মিয়াপাড়ার সন্তান আবুল কালাম আজাদ, তৃতীয় জাতীয় সংসদের হুইপ অধ্যাপিকা হাসিনা বানু শিরিন, জিয়া পরিষদের নগর আহবায়ক এডভোকেট আবুল হোসেন হাওলাদার ও শাহীন আজাদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। কোন সহযোদ্ধা স্বাক্ষী না দেওয়ায় এবং রণাঙ্গনের যোদ্ধা হিসেবে কোন প্রমাণ না পাওয়ায় খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মরহুম এ্যাড এস আর ফারুকের ভাতা ও সনদ বাতিল করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/ টিএ