খুলনায় তিনটি প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবিতে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির নেতৃবৃন্দ। রোববার (১৯ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১ টায় খুলনা প্রেস ক্লাবের হুমায়ুর কবীর বালু মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- আগামী ২২ জানুয়ারী বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় প্রধান উপদেষ্টা বরাবর এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয় বরাবর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি, শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৩ টায় খালিশপুর পিপলস্ চত্তরে মানববন্ধন ও শনিবার (২৫ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় খুলনা প্রেসক্লাবে খুলনার সকল নাগরিক সংগঠন, পেশাজীবী, সাংবাদিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে মতবিনিময় সভা। এসময় কমিটির নেতারা খুলনায় নভোথিয়েটার, জিয়া হল ও আধুনিক কসাইখানা প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান।
সংগঠনের সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান বলেন, খুলনায় ৫৫৩ কোটি টাকার নভোথিয়েটার প্রকল্প বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয়। গত ৩০ ডিসেম্বর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোকাব্বির হোসেনের সভাপতিত্বে প্রজেক্ট স্টিয়ারিং কমিটির (পিএসসি) সভায় প্রকল্পটির কার্যক্রম অসমাপ্ত রেখে সমাপ্ত ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শেষ মুহূর্তে মন্ত্রণালয়ের এমন সিদ্ধান্তে আমরা হতবাক হয়েছি। এতে খুলনার প্রতি চরম বৈষম্য পরিলক্ষিত হয়েছে বলে আমরা মনে করি। নগরীর সিএন্ডবি কলোনি এলাকায় নভোথিয়েটারটি নির্মাণ হওয়ার কথা ছিল। নাম এবং স্থান পরিবর্তন করে খুলনায় নভোথিয়েটার স্থাপনের কথা ছিল। তবুও কেন প্রকল্পের নাম এবং জোড়াগেট সিএন্ডবি কলোনিবাসীর আপত্তির অজুহাত তুলে কার্যক্রম বন্ধ করা হলো?
তিনি আরও বলেন, গত ১২ ডিসেম্বর খুলনায় নভোথিয়েটার প্রকল্প বাস্তবায়ন সংক্রান্ত একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সিএন্ডবি কলোনির পরিবর্তে বিকল্প স্থানে খুলনা নভোথিয়েটার স্থাপনের দাবি উঠেছিল। তাহলে কেন প্রকল্প বাতিলের এমন সিদ্ধান্ত হলো? খুলনায় নভোথিয়েটারের স্থান নির্ধারণ-সংক্রান্ত জটিলতা কাটিয়ে ২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি একনেকে প্রকল্পটি অনুমোদন পায়। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল ও রংপুরে নভোথিয়েটারের কাজ শুরু হয়েছে। ২০২২ সালে নগরীর সিএন্ডবি কলোনির ১০ একর জমিতে নভোথিয়েটার নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সরকারি অর্থায়নে প্রকল্পের ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ৫৫৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। খুলনা নভোথিয়েটার প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ৩৬ মাস। গত ১৯ ডিসেম্বর প্রকল্পটি বাস্তবায়নের টেন্ডারও আহ্বান করা হয়েছিল। এ ছাড়া প্রকল্পের জন্য এ পর্যন্ত প্রায় পৌনে এক কোটি টাকার মতো খরচ হয়েছে কিন্তু শেষ সময়ে এসে প্রকল্প থেকে পিছু হটেছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। একই সাথে জিয়া হলের অবকাঠামো উন্নয়নে ১৫ শত কোটি টাকার প্রকল্প ও ৮৩ কোটি টাকার আধুনিক কসাইখানা নির্মানের সিদ্ধান্ত বাতিল হয়েছে। আমরা এই ৩টি প্রকল্প অনুমোদন ও বাস্তবায়নের জোর দাবি জানাচ্ছি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির মহাসচিব এ্যাড.শেখ হফিজুর রহমান হাফিজ, সহ-সভাপতি মো. নিজামউর রহমান লালু, মিনা আজিজুর রহমান, শাহীন জামাল পন, মিজানুর রহমান বাবু, মো. খলিলুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব সরদার রবিউল ইসলাম রবি, সৈয়দ এনামুল হাসান ডায়মন্ড, মনিরুল ইসলাম (মাস্টার), সাংগঠনিক সম্পাদক মতলুবুর রহমান মিতুল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক প্রকৌশলী রফিকুল আলম সরদার, শিক্ষা সম্পাদক বিশ্বাস জাফর আহমেদ, সংস্কৃতি সম্পাদক মো. হায়দার আলী, দপ্তর সম্পাদক রকিব উদ্দিন ফারাজী, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক শিকদার আব্দুল খালেক, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মো. ইলিয়াস মোল্লা, খন্দকার মোসাদ্দেক হোসেন বিলি, সালমা জাহান মনি, নাজমুল তারেক তুষার প্রমুখ।
খুলনা গেজেট/এএজে