খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  কুমিল্লায় ট্রেনের ধাক্কায় অটোরিকশার ৫ যাত্রী নিহত
  মানবতাবিরোধী অপরাধ : চিফ প্রসিকিউটর দেশে না থাকায় ফখরুজ্জামান ও সাত্তারের জামিন শুনানি ২ সপ্তাহ পেছাল আপিল বিভাগ
  আজ থেকে জাতীয় ছাত্র সংহতি সপ্তাহ শুরু
  অ্যান্টিগা টেস্ট: শেষ দিনে বাংলাদেশের দরকার ২২৫ রান, হাতে ৩ উইকেট

কপিলমুনিতে হিজড়া চন্দনার মৃত্যু, অন্তরালে ছিল অসম প্রেম!

পাইকগাছা প্রতিনিধি

বাবা-মায়ের সংসারে শৈশব পার করলেও বয়োসন্ধিকালে নিজেকে তৃতীয় লিঙ্গের আবিষ্কারের পর থেকেই ছাড়তে হয় চিরচেনা পৈত্রিক ভিটা। বাবা-মায়ের আদর যত্ন, ভালবাসাও রয়ে যায় অধরা। তৃতীয় লিঙ্গ পরিবারের সদস্য হিসেবে নাম লেখাতে হয় তাকে। এরপর নিবাস হয় তাদেরই কোন পাড়া বা বস্তিতে। এরপর কোন কোন পরিবার তাদের সাথে যোগাযোগ রাখলেও তা হয় অত্যন্ত সঙ্গোপনে! এ যেন নিয়তির নির্মম পরিহাস। প্রতিজন হিজড়ার জীবনে এটাই নিষ্ঠুর বাস্তবতা। জৈবিক চাহিদা না থাকলেও পেটের তাগিদে সখিদের সাথে নবজাতকের দুয়ারে দুয়ারে নেচে-গেঁয়ে দিন পার করলেও সন্ধ্যায় নীড়ে ফিরে ভর করে একাকিত্ব। কোন রকম বেঁচে থাকতে নি:সঙ্গ জীবনে খানিকটা হলেও ভালবাসার কাঙ্গাল হয়ে ওঠে ওরা। জীবনের বাঁকে কখনো কখনো তাই বিপরীত লীঙ্গ (পুরুষের) প্রতি দূর্বল হতে দেখা যায় কারো কারো। কেউ কেউ জড়িয়ে পড়েন অসম প্রেমে। তবে সংসার করতে দেখা যায়- এমনটা চোখেমেলা ভার।

এমনই এক হতভাগ্য মানব কপিলমুনির গোলাবাটিস্থ আশ্রয়ণের বাসিন্দা চন্দনা (২০)। শনিবার (২৩ নভেম্বর) রাতে রহস্যজনক জীবনাবসান হয়েছে তার। সাথিদের সাথে বাজার থেকে বাসায় ফেরার পর আকষ্মিক চলমান জীবনের ছন্দপতন। শুরু হয় বমি। এক পর্যায়ে সঙ্গা হারিয়ে ফেরেনি আর। সাঙ্গ হয় চন্দনার ভবলীলা। খবর পেয়ে স্থানীয় ফাঁড়ির পুলিশ তার লাশ উদ্ধারের পর সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। রোববার লাশ ফিরলে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। শেষ বারের মত ক্ষত-বিক্ষত চন্দনার নিথর দেহ গ্রামের বাড়ি কয়রার চান্নিরচক এলাকায় পৌঁছানোর পর স্থানীয় শ্মশানে তার সৎকার সম্পন্ন হয়।

ধারণা করা হচ্ছে, অতিরিক্ত ঘুমের ট্যাবলেট বা পয়জন জাতীয় কিছু খেয়ে কিশোর থেকে কিশোরী বনে যাওয়া চন্দনা নিজেকে শেষ ঠিকানায় পৌঁছায়। তবে কেন? পারিবারিক নিঃসঙ্গতা কি তাকে খুব বেশি পীড়া দিচ্ছিল? নাকি অন্তরালে রয়েছে কোন অসম প্রেম! এক সাথে থাকা সাথীরা ইঙ্গিত করলেন তেমন কিছুর।

চন্দনার সাথে কপিলমুনির এক যুবকের ফোনে কথা হতো নিয়মিত। হয়তো চন্দনা তাকে নিয়ে রঙিন স্বপ্নও দেখেছিল। তবে বিপরীত প্রান্তের যুবকের কাছে বিষয়টা ছিল নিছক টাইম পাস! রঙিন স্বপ্নে আকষ্মিক বিচ্ছেদের শুর কানে ভাসতেই প্রায় আড়াই মাস আগে চন্দনা নিজেকে শেষ করে দিতে হারপিক পান করেছিল। যদিও সেবার সাথী (সখিদের) প্রানান্তকর প্রচেষ্টায় প্রাণে বেঁচে যায় সে। তবে এবার আর শেষ রক্ষা হয়নি তার। চিরতরে পাড়ি জমিয়েছে না ফেরার দেশে। তবে কে সেই প্রেমিক যুবক? তা নিয়ে শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন। আর শনিবার রাতে বাসায় ফেরার আগে তার সাথে ঠিক কি ঘটেছিল? এমন নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে আশ্রয়ণ পল্লীর বাসিন্দা, একসাথে বসবাসকারী সখিসহ স্থানীয়দের। যদিও ঝামালে এড়াতে তার পরিবারের পক্ষে কারো প্রতি নেই কোন অভিযোগ।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!