যশোরের চাঁচড়া চেকপোস্ট এলাকায় সড়কে বাস আড় করে জনভোগান্তি ও সেনা সদস্যদের সাথে অশোভন আচরণ করেছে পরিবহন শ্রমিকরা। এ ঘটনায় ৪ শ্রমিক নেতাকে হেফাজতে নিয়েছে সেনা সদস্যরা। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে শুরু হওয়া এ ঘটনা নিয়ে সন্ধ্যায় একটি বৈঠকও হয় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে। এ নিয়ে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত যশোরের পুলেরহাট সেনা ক্যাম্পে শ্রমিক নেতা ও বাস মালিক সমিতির কয়েক নেতার সাথে বৈঠক চলছিল।
যশোর জেলা প্রশাসন ও সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ সূত্রে জানা যায়, এদিন সকালে যাত্রী নামানো ও উঠানোর স্থান নিয়ে বেনাপোলে ইজিবাইক শ্রমিক ও বাস শ্রমিকদের সাথে গোলযোগ হয়। এসময় বেনাপোলের কয়েকজন বাস শ্রমিককে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় দুপুরে যশোর-বেনাপোল সড়কের চাঁচড়া চেকপোস্ট এলাকায় বাস আড় করে দিয়ে প্রতিবাদ জানায় পরিবহন শ্রমিকরা। এসময় জনভোগান্তি ও যাত্রী ভোগান্তি শুরু হয়। খবর পেয়ে সেনা সদস্যদের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে বাস সরিয়ে রাস্তা পরিস্কার করতে বলেন শ্রমিকদের। এছাড়া যে কোনো অনাকাঙ্খিত ঘটনা থেকে বিরত থাকার আহবান জানান। এসময় কয়েকজন উচ্ছৃংখল শ্রমিক সেনা সদস্যদের সাথে অশোভন আচরণ করেন। তারা সেনা সদস্যদের উদ্দেশ্যে ইট-পাটকেল ছোড়েন। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করলেও শ্রমিকরা আরো মারমুখি আচরণ করতে থাকে। ঘটনাটি সেনা সদস্যরা উর্ধŸন কর্মকর্তাদের জানান। এরপর সেনাদের আরো একটি টিম এসে যশোর জেলা সড়ক পরিবহন সমিতির সভাপতি বিশ্বনাথ বিশু, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, অপর নেতা রফিকুল ইসলাম ও ঝড়ুকে হেফাজতে নেয়। এরপর শ্রমিকরা যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে জড়ো হয় এবং শ্রমিক নেতাদের মুক্তি দাবি করেন। এসময় শ্রমিক নেতা, জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনা অফিসার কর্ণেল মোস্তফা কামালসহ কয়েকজন উপস্থিত হয়ে আলোচনা করেন। কিন্তু এখানে ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান হয়নি।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, সন্ধ্যায় আলোচনা ফলপ্রসু না হওয়ায় সবাই ফিরে যান। আর অনাকাঙ্খিত ঘটনায় জড়িতদের আটকের চেষ্টা অব্যাহত রাখেন সেনা সদস্যরা।
যশোরের শ্রমিক নেতা মাহবুবুর রহমান মজনু বলেছেন, শ্রমিকনেতা বিশু-মিজান, রফিক ঝড়ুসহ ৪ নেতাকে সেনা সদস্যরা আটক করেছে বলে তিনি শুনেছেন। ডিসি অফিসে তিনিও ছিলেন। শ্রমিকদের দাবি ছিল নেতাদের মুক্তি, আর সেনা অফিসারের দাবি ছিল চড়াও হওয়া শ্রমিকদের ধরিয়ে দিতে হবে। এ কারণে সভায় কোন সমাধান হয়নি।
এদিকে রাতে বাস ও মিনিবাস মালিক সমিতির একটি সূত্র জানিয়েছে, শ্রমিকদের এ সমস্যা সামাধানে সেনা ক্যাম্পে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সভা চলছিল। সেখানে বাস মালিক সমিতির সভাপতি মুসলিম উদ্দিন পাপ্পুসহ আরো কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ক্যাম্পে আলোচনা চলছিল। পরবর্তী পরিস্থিতি শ্রমিক নেতৃবৃন্দ গণমাধ্যমকে জানাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
খুলনা গেজেট/কেডি