৩৩তম ওভারে ব্যাটিং ধসের শিকার বাংলাদেশ। প্রথম বলে আল্লাহ গজনফরের ক্যারম বল মারতে গিয়ে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে আসলেন মুশফিকুর রহিম। ইকরাম্ আলীখিল বল হাতে নিয়েই স্টাম্প ভেঙে দিলেন। মাত্র ১ রান করে আউট বাংলাদেশের ব্যাটার। একই ওভারের পঞ্চম বলে রিশাদ হোসেনের বিরুদ্ধে এলবিডব্লিউর আপিলে সফল হন গজনফর। বাংলাদেশি ব্যাটার রিভিউ নিলেও আম্পায়ার্স কলে বিদায় নেন। পরের বলে তাসকিন আহমেদকে বোল্ড করে নিজের পঞ্চম উইকেট পান গজনফর। ১৮ রানের ব্যবধানে ছয় উইকেট হারিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হারালো বাংলাদেশ। ১৪০ রানে নেই ৯ উইকেট।
২৩৬ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে ১২ রানে ওপেনার তানজিদ হাসান তামিমের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দলীয় ৬৫ রানে আরেক ওপেনার সৌম্য সরকারও আউট হন। এরপর হাল ধরেন শান্ত-মিরাজ। আজমতউল্লাহর দুর্দান্ত ক্যাচে থামেন মিরাজ।
২ উইকেটে ১২০ রান করা বাংলাদেশ ১৫ রানের ব্যবধানে তিন উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়েছে। মোহাম্মদ নবীর বলে নাজমুল হোসেন শান্তর (৪৭) দারুণ ইনিংসের সমাধি ঘটে। তারপর মেহেদী হাসান মিরাজও (২৮) ফিরে গেছেন দ্রুত। সবশেষ রশিদ খানের গুগলিতে বোল্ড হলেন মাহমুদউল্লাহ। ১৩৫ রানে ৫ উইকেট হারালো বাংলাদেশ। ৫ বল খেলে মাত্র ২ রান করেন মাহমুদউল্লাহ।
শান্তর সঙ্গে দারুণ জুটি গড়েছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। বাংলাদেশ অধিনায়ক ফেরার পর বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি। আল্লাহ গজনফরের বলে ৩১তম ওভারে আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের দুর্দান্ত ক্যাচে মাঠ ছাড়লেন তিনি। শর্ট ফাইন লেগ থেকে বাঁ দিকে দৌড়ে গিয়ে ফাইন লেগের কাছে বল লুফে নেন আফগান ফিল্ডার। ৫১ বলে ১ ছয়ে ২৮ রান করেন মিরাজ। ৩০.৪ ওভারে ১৩২ রানে চার উইকেট হারালো বাংলাদেশ।
বুধবার আরব আমিরাতের শারজা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে ৪৯.৪ ওভারে ২৩৫ রানে অলআউট হয় আফগানিস্তান।
ইনিংসের শুরু থেকেই কঠিন চাপের মুখে ছিল আফগানরা। ৩৫ রানে ৫ উইকেট হারানো আফগানিস্তান ৭০ রানে হারায় পঞ্চম উইকেট।
সেই অবস্থা থেকে দলকে টেনে চ্যালেঞ্জিং স্কোর উপহার দিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন আফগানিস্তানের বর্তমান ও সাবেক দুই অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদি ও মোহাম্মদ নবি। তাদের ১০৪ রানের জুটি কারণেই দুইশ ছাড়িয়ে আড়াইশ রানের দোর গোড়ায় গিয়ে পৌঁছায় আফগানিস্তান।
দলের হয়ে ৮৪ ও ৫২ রান করে করেন মোহাম্মদ নবি ও হাশমতউল্লাহ। বাংলাদেশ দলের হয়ে ৪টি করে উইকেট নেন মোস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদ।
টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় আফগানরা। প্রতিপক্ষ শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন তাসকিন আহমেদ। এই গতিময় পেসারের বলে উইকেট থেকে বেরিয়ে ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ।
তাসকিনের ফুল লেংথের বল এজ হয়ে চলে যায় উইকেটকিপার মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসে। ১.৫ ওভারে দলীয় ৭ রানে ফেরেন গুরবাজ। তার আগে ৭ বলে এক বাউন্ডারিতে করেন ৫ রান।
এক উইকেটে আফগানিস্তানের সংগ্রহ ছিল ৩০ রান। এরপর আফগান শিবিরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি দুই ওভার বোলিং করে মাত্র ৫ রান খরচ করে ৩ উইকেট তুলে নেন।
ইনিংসের অষ্টম ওভারে বোলিংয়ে এসেই রহমত শাহকে ফেরান মোস্তাফিজ। ঠিক পরের ওভারে সাদিকুল্লাহ অটল ও আজমত উল্লাহকে ফেরান কাটার মাস্টার।
১০ ওভারে ৩৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় আফগানরা। এই চাপ সামলাতে গুলবাদিন নায়েবকে সঙ্গে নিয়ে ৬১ বলে ৩৬ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদি।
সেই জুটির বিচ্ছেদ ঘটনা তাসকিন। তার বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন নায়েব। তার বিদায়ে ২০ ওভারে ৭১ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় আফগানরা।
দলকে টেনে তোলার জন্য রীতিমতো লড়াই করেন হাশমতউল্লাহ শহীদি ও মোহাম্মদ নবি। ষষ্ঠ উইকেটে তারা ১২২ বল মোকাবেলা করে ১০৪ রানের জুটি গড়েন। এই জুটিতেই জোড়া ফিফটি তুলে নেন তারা।
অনেক চেষ্টার পর এই জুটি ভাঙতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ। মোস্তাফিজুর রহমানের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন হাশমতউল্লাহ। তার আগে ৯২ বল মোকাবেলা করে দুই বাউন্ডারিতে ৫২ রান করেন হাশমত। তার বিদায়ে ৪০.২ ওভারে ১৭৫ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারায় আফগানিস্তান।
এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে নবির সঙ্গে ১৪ রানের জুটি গড়েই ফেরেন সাবেক আরেক অধিনায়ক রশিদ খান। অষ্টম উইকেটে ফের ৩০ রানের জুটি গড়েন নবি।
৪৭.৩ ওভারে দলীয় ২১৯ রানে তাসকিনের বলে ক্যাচ তুলে দেন নবি। তার আগে ৭৯ বলে চারটি চার আর ৩টি ছক্কার সাহায্যে দলীয় সর্বোচ্চ ৮৪ রান করেন নবি।
নবি আউট হওয়ার পর স্কোর বোর্ডে ১৬ রানের বেশি যোগ করতে পারেনি আফগানিস্তান। ৪৯.৪ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে তারা করে ২৩৫ রান।
খুলনা গেজেট/কেডি