খুলনা, বাংলাদেশ | ১৫ কার্তিক, ১৪৩১ | ৩১ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  অভিনেতা মাসুদ আলী খান আর নেই
  রাজধানীর মিরপুরে গার্মেন্টস কর্মীদের সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষ, নারীসহ ২ পোশাক শ্রমিক গুলিবিদ্ধ

‘চোখের সামনে আব্বা ও চাচাকে হত্যা করেছে, আমি বেঁচে গেছি’

গেজেট ডেস্ক 

‘আমি, আমার আব্বা নজরুল ইসলাম ও আমার চাচা আব্দুল হামিদ বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সাতারপাড়া বাজারে বসে চা খাচ্ছিলাম। এ সময় সামাজিক দ্বন্দ্ব ও পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষ পিয়াদা, বিশ্বাস ও প্রামানিক বংশের লোকজন পিস্তল, রামদা, চাপাতি ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে হামলা করে। আমার চোখের সামনে আব্বা ও চাচাকে হত্যা করেছে, আমি বেঁচে গেছি। প্রকাশ্য দিবালোকে তারা এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে।’

কথাগুলো বলছিলেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার সাতারপাড়া গ্রামের বাজারে হামলায় নিহত নজরুল ইসলামের ছেলে সুরুজ আলী।

তিনি আরও বলেন, যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের সবাইকে আমি চিনি। ৫ মিনিটের মধ্যে হত্যা করে পালিয়ে গেছে তারা। বাজারের সবাই তাদের চেনেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আমাদের চারজন। আমার আব্বা ও চাচা ঘটনাস্থলেই মারা যান।

সুরুজ আলী বলেন, ফরিদের ছেলে র‍্যানিস, মৃত হারান বিশ্বাসের ছেলে মনির উদ্দিন মনো, তার ছেলে ওয়াসিম, মাসুদ, রনির ছেলে রাসেল, আজাবুল, মহাবুলের ছেলে ফারুক, সোহান, সুমন, ইকরামুল, রুবায়ত, আলামিন সহ ও তাদের ১০-১৫ জন এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে। আমার চোখের সামনে আগে আমার আব্বাকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। তারপর আমার চাচাকে কুপিয়ে হত্যা করে। তারা পিয়াদা, বিশ্বাস ও প্রামানিক বংশের লোকজন। আর আমরা গাইন বংশের লোক। সামাজিক দ্বন্দ্ব ও পূর্ব শত্রুতার জেরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আমার বাবা ও চাচাকে যারা হত্যা করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

গতকাল বুধবার (৩০ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার সাতারপাড়া গ্রামের বাজারে সামাজিক দ্বন্দ্ব ও পূর্ব শত্রুতার জেরে আপন দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষের লোকজন।

এলোপাতাড়ি কুপিয়ে, গুলি করে ও মারধর করে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। তাদের মধ্যে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আসমত, সাইফুল ও জামান। গুরুতর আহত আকবর ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তাদের সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

নিহতরা হলেন- দৌলতপুর উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের সাতারপাড়া গ্রামের রমজান মন্ডলের ছেলে হামিদ (৫০) ও নজরুল ইসলাম মন্ডল (৪৫)। নজরুল ব্যবসা করতেন আর হামিদ কৃষক।

নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সামাজিক দ্বন্দ্ব ও পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষ পিয়াদা, বিশ্বাস ও প্রামানিক বংশের লোকজনদের সাথে গাইন বংশের দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক দ্বন্দ্ব ছিল। এরই জেরে গাইন গ্রুপের ওপর পূর্ব পরিকল্পিতভাবে প্রতিপক্ষ গ্রুপের লোকজন হামলা করে।

এদিকে দুই ভাইকে হত্যার ঘটনায় এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সামাল দিতে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। নিহতের পরিবার হত্যাকারীদের দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

কুষ্টিয়ার সহকারী পুলিশ সুপার (ভেড়ামারা সার্কেল) আবদুল খালেক বলেন, সামাজিক দ্বন্দ্ব ও পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অপরাধীদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!