খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ কার্তিক, ১৪৩১ | ২৬ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা সফর শেষে দেশে ফিরেছেন সেনাপ্রধান
  সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের দিন ৩ ও ইসি সচিব হেলালুদ্দীন ৪ দিনের রিমান্ড

সনাতন জাগরণ মঞ্চের ঢাকা অভিমুখে লংমার্চের ঘোষণা

গেজেট ডেস্ক

আট দফা দাবিতে চট্টগ্রাম নগরের লালদীঘি মাঠে গণসমাবেশ করেছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সংগঠন বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ। শুক্রবার বিকেলে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সমাবেশ শেষে ঢাকা অভিমুখে লংমার্চের ঘোষণা দেওয়া হয়।

সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ও পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। তিনি বলেন, ‘সনাতনীদের এ দেশ থেকে উৎখাতের চেষ্টা হলে পরিণতি ভয়াবহ হবে। যে মঞ্চ থেকে স্বাধীনতার ছয় দফা দাবি উঠেছিল, সেই মাঠে বাংলাদেশের সব মঠ–মিশনের সাধুরা সমবেত হয়েছেন সনাতনীদের দাবি আদায়ে। সনাতনীদের ওপর যতই নিপীড়ন হবে, আমরা তত বেশি ঐক্যবদ্ধ হব। দাবি আদায়ে বিভাগ ও জেলায় সমাবেশ শেষে আমরা ঢাকা অভিমুখে লংমার্চ করব।’

ট্রাইব্যুনাল গঠন করে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচার, সংখ্যালঘু কমিশন সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন এবং দুর্গাপূজায় পাঁচ দিন ছুটি আট দফা দাবির মধ্যে অন্যতম।

‘আমার মাটি আমার মা, এ দেশ ছেড়ে কোথাও যাব না’সহ নানা স্লোগান দিয়ে হাজার হাজার নারী-পুরুষ মিছিল এবং দল বেঁধে এই সমাবেশে যোগ দেন। বেলা আড়াইটার পর থেকে চট্টগ্রাম নগর এবং বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে লোকজন সমাবেশে আসতে শুরু করেন। বেলা তিনটার মধ্যে লালদীঘি মাঠ ভর্তি হয়ে আশপাশে ছড়িয়ে পড়েন মানুষ। বকশিবিট থেকে শুরু করে কে সি দে রোড, জেল রোড, লালদীঘির চারপাশ ও কোতোয়ালি মোড় পর্যন্ত ছিল লোকে লোকারণ্য। সমাবেশে যোগদানকারীদের হাতে ছিল বিভিন্ন স্লোগানের ব্যানার–ফেস্টুন।

প্রধান বক্তা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী আরও বলেন, ‘কেউ যদি আমাদের উৎখাত করে শান্তিতে থাকার চেষ্টা করেন, তাহলে এ ভূমি আফগানিস্তান হবে, সিরিয়া হবে। সাম্প্রদায়িক আচরণ করে বাংলাদেশের কোনো গণতান্ত্রিক শক্তি রাজনীতি করার সুযোগ পাবে না। ক্ষমতার পটপরিবর্তন হচ্ছে বারবার, এ দেশে স্থিতিশীলতা আসছে না। কারণ, সহনশীলতা লুপ্ত হচ্ছে। সম্মানবোধ হারিয়ে যাচ্ছে, শিক্ষককে পদত্যাগ করানো হচ্ছে। শুধু সংখ্যালঘু পরিচয়ে ৯৩ জনকে পুলিশের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ভেটেরিনারি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে হিন্দুদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। মাঝখানে কিছুদিন এমন অপকর্ম থেমে গিয়েছিল। এখন মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। আমরা আর নীরব থাকব না।’

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বলেন, ‘এটা সুশৃঙ্খল আন্দোলন, রাজনৈতিক আন্দোলন নয়। আজকের সমাবেশে নানা প্রোপাগান্ডা করা হয়েছে। আমাদের সমাবেশকে রাজনৈতিক ট্যাগ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।’

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বলেন, ‘এ দেশের জনসংখ্যার ১৩ শতাংশ রয়েছি এখনো, নিঃশেষিত হইনি। এলাকায় এলাকায় একেকটা যুব গোষ্ঠী গড়ে তুলুন। আমাদের দেবালয় আমরা পাহারা দেব।’

পটিয়া পাঁচরিয়া তপোবন আশ্রমের অধ্যক্ষ রবীশ্বরানন্দ পুরী মহারাজ বলেন, ‘এই দেশ আমার, এই মাটি আমার। এখানকার স্বাধিকারের জন্য বিপ্লবী সূর্য সেনরা জীবন দিয়েছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকব। এই আন্দোলন আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার আন্দোলন।’ আন্দোলন চালিয়ে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন মঠ–মন্দিরের মহারাজ, পুরোহিতদের সমন্বয়ে একটা কমিটি গঠন করা হয় বলে জানান তিনি।

সমাবেশে কৈবল্যধাম আশ্রমের মহারাজ কালিপদ ভট্টাচার্য বলেন, ‘সনাতনী সমাবেশ যাতে উজ্জীবিত হয়, এ জন্য ঐক্যবদ্ধ হোন। সনাতনী সম্প্রদায়ের কাছে আবেদন, ৮ দফা দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে।’

গোপীনাথ দাস ব্রহ্মচারী বলেন, যে নতুন বাংলাদেশ গঠন করা হলো, সেখানে প্রশাসনের ব্যবস্থা থাকার পরও কেন ষষ্ঠী পূজার দিন প্রতিমা ভাঙা হলো? বিসর্জনে কেন ঢিল ছোড়া হলো? এসবের জবাব দিতে হবে।

গৌরাঙ্গ দাস ব্রহ্মচারীর সঞ্চালনায় গণসমাবেশে আরও বক্তব্য দেন শংকর মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ তপনানন্দ গিরি মহারাজ, ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলারাজ গৌর দাস ব্রহ্মচারী, বাঁশখালী ঋষিধামের মোহন্ত সচিদানন্দ পুরী মহারাজ, কৈবল্যধামের মহারাজ কালিপদ ভট্টাচার্য, স্বামী গোপীনাথ মহারাজ প্রমুখ।

খুলনা গেজেট/কেডি

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!