একদিকে যেমন তার চোখ ধাঁধানো অভিনয়, তেমনই আবার পরিচালক হিসেবেও অঞ্জন দত্তের কাজ মন ছুঁয়েছে বাঙালির। সংগীতের দুনিয়ায়ও তার অনবদ্য খ্যাতি রয়েছে। তবু নাটকের সঙ্গে যে অদ্ভুত শিকড়ের টান।
যা ছেড়ে যাওয়ার কথা ভাবলেও পিছিয়ে গিয়েছেন বারবার। সত্যিই কি তবে এবার মঞ্চ ছাড়তে চলেছেন বরাবরের মতো অঞ্জন দত্ত? সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্ট দিয়েছেন অঞ্জন দত্ত।
যেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘যত দিন যাচ্ছে, আফসোস হচ্ছে এটাই আমার শেষ নাটক। কিন্তু আমার কাছে নাটক মানে অভিনেতার শরীর, আর আমার শরীরের বয়স অনেক বেড়ে গেছে। কিন্তু, নাটক দিয়েই আমার জীবনের শুরু। সার্ত্রে থেকে পিটার ওয়েইস, বার্টোল্ট ব্রেখট, হয়ে শেষ শেক্সপিয়ার। সেই কবে খুবই বিশিষ্ট মাস্টারের কাছে অভিনয় শেখা পেশাগত ভাবে। তারপর ওয়েস্ট বার্লিনে নাটকের কোম্পানিতে চাকরি। নিজের মতো করে নাটক মাধ্যমকে বুঝতে, দেখতে শেখা।’
মৃণাল সেনের ছবিতে তার বড়পর্দায় অভিনয়ের শুরু। রোজগারের জন্য গান, সিনেমা তৈরি করেন তিনি। এরপর নাটক বন্ধ হয়ে যায়। তিনি বলেন, ‘বন্ধুত্ব, ভালবাসা, প্রচলিত বাংলা নাট্য চর্চার বিরুদ্ধে যাওয়া, আর্থিক বিপর্যয়, ব্যর্থতা কত বিদেশি নাট্যকারের সঙ্গে কাজ করেছি। আমার জীবনের একটা অচেনা, অজানা দিক বলতে পারেন। সে দিক শেষ হতে চলেছে।’ তিনি পিটার ব্রুক, পিটার জাদেক, গ্রোটোভস্কি, বার্গম্যান, ব্রেখট, বাদল সরকারের কাছ থেকে শিখেছেন।
তবে অঞ্জনের কথায়, ‘নিজের অভিনয় সত্তা বাদ দিয়ে নাটক করতে পারি না। সম্ভব নয়, সিনেমার ক্ষেত্রেও পারি না। শুরুর দিকের নাটক বা সিনেমায় শুধু নির্দেশনা দিয়েছি। পরের দিকে নিজের অভিনয় সত্তাকে বাদ দিতে পারিনি। নাটকের ক্ষেত্রে তো নয়ই। এটা আমার অক্ষমতা বলতে পারেন। আমার নাটকের আঙ্গিকে অভিনয় এবং অভিনেতার শরীর সর্বস্ব। সেই শরীর কোনও লিমিটেশনের পরোয়া করে না। সংলাপেরও ঊর্ধ্বে শরীর।’
এখন আর তার শরীর এত ধকল নিতে পারছে না বলেই তার মত। অভিনেতা লেখেন, ‘যদিও পারা মুশকিল, সিনেমা করতে পারব। কিন্তু, নাটক নয় আর একটা বছর। তাই কিং লিয়ার।’
খুলনা গেজেট/এএজে