আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আনন্দ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। বুধবার (২৩ অক্টোবর) রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে।
এর আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ ও সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে ২১ অক্টোবর বিক্ষোভ ও মশাল মিছিল করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা সংবিধান বাতিল এবং রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন চুপ্পুর পদত্যাগের দাবিও জানান।
সোমবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে মশাল মিছিল শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে আবার রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়। এর আগে, বিকেলে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীদের একাংশ।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক শাখা-২ এর দেয়া প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে বিশেষ করে গত ১৫ বছরের স্বৈরাচারী শাসনামলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হত্যা, নির্যাতন, গণরুমকেন্দ্রিক নিপীড়ন, ছাত্রাবাসে সিট বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নসহ নানা ধরনের জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল এবং এ সম্পর্কিত প্রামাণ্য তথ্য দেশের সব প্রধান গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে এবং কিছু সন্ত্রাসী ঘটনায় সংগঠনটির নেতাকর্মীদের অপরাধ আদালতেও প্রমাণিত হয়েছে।
গত ১৫ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ জনগণকে উন্মত্ত ও বেপরোয়া সশস্ত্র আক্রমণ করে শতশত নিরপরাধ শিক্ষার্থী ও ব্যক্তিকে হত্যা করেছে এবং আরও অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন করেছে। সরকারের কাছে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ রয়েছে যে, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক, ধ্বংসাত্মক ও উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী কাজে জড়িত আছে।
এই অবস্থায় সরকার ‘সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯’ এর ধারা ১৮ এর উপ-ধারা (১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল এবং ওই আইনের তফসিল-২ এ ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’ নামীয় ছাত্র সংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্ত্বা হিসেবে তালিকাভুক্ত করল বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়। এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও জানানো হয়।
খুলনা গেজেট/কেডি