খুলনা, বাংলাদেশ | ১২ পৌষ, ১৪৩১ | ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  মারা গেছেন ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং
  চট্টগ্রামে শাহ আমানত বিমানবন্দরে চোরাচালানের স্বর্ণ বহনের অভিযোগে যাত্রী আটক, বিমান জব্দ
দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন

আয়নাঘরের দুঃস্বপ্নের সেই সব দিন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

দেশে ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনে ১৭ কোটি মানুষের সামনে খুলেছে এক নতুন ভবিষ্যতের দুয়ার। ওই ঘটনায় একই সঙ্গে বেরিয়ে এসেছে তাঁর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ‘আয়নাঘর’ নামে পরিচিত গোপন কারাগারে রাজবন্দীদের ওপর অমানুষিক নির্যাতনের কাহিনি।

নির্যাতন সইতে না পেরে আয়নাঘরের কোনো কোনো বন্দী প্রায় উন্মাদ হয়ে গেছেন। কেউ বা বরণ করেছেন মৃত্যুকে। হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এই বন্দিশালা থেকে ছাড়া পেয়েছেন কয়েকজন। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর আক্রোশের শিকার হওয়ার গল্প শুনিয়েছেন নিউইয়র্ক টাইমসকে।

একসময় জাতির গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে ক্ষমতায় এলেও শেখ হাসিনা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্বৈরাচারী মনমানসিকতা ও দমন-পীড়ন বেছে নেন। ক্ষমতায় টিকে থাকতে যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তিনি ব্যবহার করেন রাষ্ট্রযন্ত্রকে।

শেখ হাসিনার ক্ষমতা কুক্ষিগত করার চেষ্টায় জোরপূর্বক গুম করা ছিল তাঁর নেওয়া কৌশলগুলোর অন্যতম। এ অপচেষ্টায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে অপহৃত শত শত মানুষের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এসব ব্যক্তিকে ধরা হয়েছে সাধারণ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, যেমন বিক্ষোভ-সমাবেশ আয়োজন, রাস্তা অবরোধ, এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিক্ষুব্ধ কোনো মন্তব্য করার জন্য।

শেখ হাসিনার ক্ষমতা কুক্ষিগত করার চেষ্টায় জোরপূর্বক গুম করা ছিল তাঁর নেওয়া কর্মসূচিগুলোর অন্যতম। এ অপচেষ্টায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে অপহৃত শত শত মানুষের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এসব ব্যক্তিকে ধরা হয়েছে সাধারণ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, যেমন বিক্ষোভ-সমাবেশ আয়োজন, রাস্তা অবরোধ, এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিক্ষুব্ধ কোনো মন্তব্য করার জন্য।
ভুক্তভোগীদের অনেককে মেরে ফেলা হয়েছে। অন্যদের কণ্ঠ রোধ করতে আয়নাঘরের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে বছরের পর বছর আটকে রাখা হয়েছে। সেখানেও মারা গেছেন অনেকে। সৌভাগ্যক্রমে এই বন্দিশালা থেকে বের হতে সক্ষম হয়েছেন কয়েকজন। টাইমসকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তাঁদেরই কেউ কেউ।

আয়নাঘরের জীবন নিয়ে অনুভূতি প্রকাশ করা এই ব্যক্তিদের একজন মীর আহমেদ কাসেম আরমান। গত আগস্টে আয়নাঘর থেকে ছাড়া পান তিনি। বন্দীদের মধ্যে তাঁর মতো আইনজীবী ছাড়াও ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, কূটনীতিক, এমনকি মানবাধিকারকর্মীরা।

আয়নাঘর থেকে মুক্ত বন্দীদের একজন কয়েকবার স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন। এর আগে জানতে পারেন যে তিনি মারা গেছেন ভেবে তাঁর স্ত্রী আরেকজনকে বিয়ে করেছেন। মুক্তি পাওয়া আরেকজন জানতে পেরেছেন, তাঁর খোঁজে বাবা কয়েক বছর মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে শেষমেশ মারা গেছেন।

আয়নাঘরে থেকে মারা যাওয়া মানুষের সংখ্যা কত, তা এখনো অজানা। তবে গুম হওয়া ব্যক্তিদের বহু স্বজন আজও তাঁদের ফেরার অপেক্ষায় দিন গুনছেন। তাঁদের দাবি, নিখোঁজ স্বজনদের ফিরিয়ে দেওয়া হোক, আর না পাওয়া গেলে গুমের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচার করা হোক।

নিখোঁজ স্বজনের অপেক্ষায় থাকা এমন ব্যক্তিদের একজন তাসনিম শিপরা। তিনি বলেন, ‘কী ঘটেছে, আমরা সেই জবাব চাই।’ তাসনিম জানান, তাঁর চাচা বেলাল হোসেন ২০১৩ সালে নিখোঁজ হন। সম্ভবত তিনি আর এ দুনিয়ায় নেই।

সাবেক বন্দীদের তিনজনকে আয়নাঘরের একটা ছবি আঁকার অনুরোধ জানিয়েছিল দ্য টাইমস। তাঁদের আঁকা ছবিতে (স্কেচ) দেখা যায়, একটা লম্বা করিডর। আধা ডজন কক্ষ। একটি অপরটি থেকে দূরে, তবে মুখোমুখি। করিডরের দুই প্রান্তে শৌচাগার। একটি দাঁড়িয়ে ব্যবহারের, অন্যটি বসার। প্রতিটি কক্ষে ছিল একটি বড় এগজস্ট ফ্যান। এমন ফ্যান থাকার কারণ, যাতে নিরাপত্তারক্ষীদের আলাপ শোনা না যায় এবং বন্দীদের মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত করে তোলা যায়।

কারারক্ষীরা একদিন ভোর হওয়ার আগেই আহমেদ কাসেম আরমানের কক্ষে ঢোকেন, ওই সময় তাঁর মনে হয়েছিল, এ–ই মনে হয় সব শেষ।

আরমানকে জানালাবিহীন একটি কারাপ্রকোষ্ঠে আট বছর বন্দী রাখা হয়েছিল। ওই কক্ষে একেকটা দিনও ছিল যেন অন্তহীন অন্ধকার রাত। তবে ওই দিনটা ছিল ভিন্ন রকমের। ভোরের আলো ফোটার আগেই নিরাপত্তারক্ষীরা কক্ষে ঢুকে তাঁকে নামাজ শেষ করতে বলেন। খুলে দেন চোখের পুরু বাঁধন। খুলে ফেলেন হাতকড়াও।

আমি সব সময় স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করেছি, এ পৃথিবীতে যদি আমাদের (স্ত্রী ও দুই কন্যা) আর দেখা না-ও হয়, বেহেশতে যেন একত্র হতে পারি।
মীর আহমেদ কাসেম আরমান, আয়নাঘর থেকে মুক্তি পাওয়া বন্দী আরমান ভেবেছিলেন, তাঁকে মেরে ফেলে হয়তো লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হবে, নয়তো ডোবায় ফেলা দেওয়া হবে। সেদিন তিনিসহ আরও কয়েকজনকে একটি ছোট ভ্যানগাড়িতে তুলে শুইয়ে বেঁধে দেন রক্ষীরা। দুজনের নিচে লুকিয়ে রাখা হয় তাঁকে। তাঁদের নিয়ে গাড়ি ছুটে চলে এক ঘণ্টা।

কিন্তু দেশের অন্য অনেক রাজনৈতিক বন্দীর মতো ভাগ্য বরণ করতে হয়নি মীর আহমেদ কাসেম আরমানকে। তিনি বলেন, তাঁকে নিয়ে রাজধানী ঢাকার একপ্রান্তে নির্জন মাঠে ফেলে চলে যান ওই নিরাপত্তারক্ষীরা।

মীর আরমানকে ২০১৬ সালে তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু সদস্য। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে কোনো অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল না। দৃশ্যত, ইসলামি আন্দোলনের একজন কর্মী ও প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীর (মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া মীর কাসেম আলী) ছেলে হওয়ায় তাঁকে আটকে রাখা হয়েছিল।

আরমান (৪০) বলেন, দীর্ঘ অন্ধকার বন্দিজীবনে একটি বিষয়ই তাঁকে পাগল হওয়া থেকে বাঁচিয়েছে। তা হলো, তাঁর স্ত্রী এবং বর্তমানে ১১ ও ১২ বছর বয়সের দুই কন্যার চিন্তা। তাঁর কথায়, ‘আমি সব সময় স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করেছি, এ পৃথিবীতে যদি আমাদের আর দেখা না–ও হয়, বেহেশতে যেন একত্র হতে পারি।’

গোপন বন্দিশালায় বিরামহীন যন্ত্রণা ভোগের বর্ণনা দিয়েছেন আবদুল্লাহিল আমান আজমি।

সাবেক উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তা আজমিকেও দৃশ্যত তাঁর বাবার কারণে (বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রয়াত আমির গোলাম আজম) ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে যাওয়ার পর তিনিও ওই সামরিক কারাগার (আয়নাঘর) থেকে ছাড়া পান।

আমান আজমি আট বছর বন্দী ছিলেন। আজমির অনুমান, ওই কয়েক বছরে অন্তত ৪১ হাজারবার তাঁর চোখ বাঁধা এবং হাতকড়া পরানো হয়েছে।

আমান আজমি বলেন, ‘আমি (বন্দিজীবনে) সৃষ্টিকর্তার আকাশ, চন্দ্র, সূর্য, ঘাস, গাছপালা দেখিনি।’ তিনি আরও বলেন, ‘বন্দী হওয়ার পর প্রথম দিকে আমি দুটি ছোট ভেন্টিলেটর দিয়ে সূর্যের আলো দেখার চেষ্টা করি। কিন্তু সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ার পর তারা (কর্তৃপক্ষ) সেগুলো বন্ধ করে দেয়।’

জীবনধারণের মতো পরিবেশ না থাকা কারাগারটিতে চলত কঠোর নজরদারি। শারীরিক পরীক্ষা–নিরীক্ষা করা হতো নিয়মিত। চুল কাটা হতো প্রতি চার থেকে ছয় মাসে একবার। জিজ্ঞাসাবাদের প্রাথমিক দিনগুলোয় চলত শারীরিক নির্যাতন। বেশি হতো মানসিক নির্যাতন।

কাতার ও ভিয়েতনামে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন মারুফ জামান। ২০১৯ সালে তিনি আয়নাঘর থেকে ছাড়া পান। এর আগে এ বন্দিশালায় এক বছরের বেশি সময় (৪৬৭ দিন) ছিলেন তিনি।

আয়নাঘরের ছবি আঁকার জন্য দ্য টাইমসের অনুরোধে মারুফ জামান গুগল ম্যাপ খুলে দেখান। জুম করলে দেখা যায়, ঢাকার একটি সামরিক ঘাঁটি। সেখানেই আয়নাঘরের অবস্থান। এ গোপন বন্দিশালার নাম প্রথম জানা যায় ২০২২ সালে বিদেশে বাংলাদেশি গণমাধ্যম নেত্র নিউজের একটি প্রতিবেদন থেকে।

মারুফ জামান ও মুক্তি পাওয়া অন্য বন্দীরা বলেন, তাঁরা বন্দী অবস্থায় একটি সামরিক ঘাঁটিতে থাকার বিষয়টি বুঝতে পেরেছিলেন। কেননা, ভোরবেলায় সেখানে কুচকাওয়াজের শব্দ শুনতেন তাঁরা। জানতেন, ধারেকাছেই কর্মকর্তাদের আবাসিক ভবন আছে আর সেখানকার জীবনযাত্রাও স্বাভাবিক। সেখান থেকে প্রতি শুক্রবার ভেসে আসত বাচ্চাদের গানের সুর।

শেখ হাসিনার কর্মকাণ্ড, বিশেষ করে তাঁর ভারতীয় স্বার্থরক্ষার বিষয়ে সমালোচনা করতেন মারুফ জামান। আয়নাঘরে জিজ্ঞাসাবাদকালে তাঁর মুখে অনবরত ঘুষি মারা হতো বলে জানান তিনি। এতে তাঁর দুটি দাঁত পড়ে যায়। জিজ্ঞাসাবাদকারীরা তাঁর সামনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ব্লগে নিজের দেওয়া সব পোস্ট প্রিন্ট করে আনতেন। পোস্টগুলোর নির্দিষ্ট কিছু প্যারা সম্পর্কে জেরা করতেন।

জিজ্ঞাসাবাদকারীদের একজন জামানকে একদিন জিজ্ঞাসা করেন, ‘আপনার পোস্ট প্রিন্ট করতে আমরা অনেক অর্থ খরচ করেছি। আপনার বাবা কি এসব অর্থ আমাদের ফেরত দেবেন?’

ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর অধিকারকর্মী মাইকেল চাকমা। আগস্টের কোনো এক দিন কয়েক ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে তাঁকে চোখ বাঁধা অবস্থায় একটি জঙ্গলে ছেড়ে যাওয়া হয়।

মাইকেল চাকমা বলেন, ‘পাঁচ বছরের মধ্যে এই প্রথম আমি দিনের আলো দেখলাম। যখন দেখছিলাম, দুবার পরীক্ষা করছিলাম, আমি কি এ আলো স্বপ্নে দেখছি, নাকি বাস্তবেই।’

ঢাকায় ২০১৯ সালে একটি ব্যাংকে ঢোকার পর অপহৃত হন মাইকেল চাকমা। কারাগারের ভেতর তিনি জিজ্ঞাসাবাদকারীদের কাছে জানতে চাইতেন, কেন সেখানে তাঁকে রাখা হয়েছে। সবচেয়ে কাছাকাছি যে জবাব পেয়েছেন তা হলো, রাজনৈতিক প্রতিশোধ।

সাবেক বন্দীদের তিনজনকে আয়নাঘরের একটা ছবি আঁকার অনুরোধ জানিয়েছিল দ্য টাইমস। তাঁদের আঁকা ছবিতে (স্কেচ) দেখা যায়, একটা লম্বা করিডর। আধা ডজন কক্ষ। একটি অপরটি থেকে দূরে, তবে মুখোমুখি। করিডরের দুই প্রান্তে শৌচাগার। একটি দাঁড়িয়ে ব্যবহারের, অন্যটি বসার। প্রতিটি কক্ষে ছিল একটি বড় এগজস্ট ফ্যান। এমন ফ্যান থাকার কারণ, যাতে নিরাপত্তারক্ষীদের আলাপ শোনা না যায় এবং বন্দীদের মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত করে তোলা যায়।

প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে শেখ হাসিনা নিজের দল আওয়ামী লীগের একটি সমাবেশে অংশ নিতে একবার চট্টগ্রামে গিয়েছিলেন। সে সময় মাইকেল চাকমার দলীয় ছাত্রসংগঠন সড়ক অবরোধ করেছিল। সেদিন প্রধানমন্ত্রী হুমকি দিয়ে সমাবেশে তাঁর বক্তৃতা শেষ করেন। বলেছিলেন, এ বিক্ষোভের পেছনে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের তিনি দেখে নেবেন।

মাইকেল চাকমা বলেন, ওই ঘটনা তাঁকে (শেখ হাসিনা) ক্ষুব্ধ করেছিল। তিনি আরও বলেন, ‘আমি সব সময় তাঁদের কাছে জানতে চাইতাম, আমার কী অপরাধ? আমি কী করেছি? আমি কি দোষী? তাঁরা বলতেন, আওয়ামী লীগ সরকারকে নিয়ে আমি অসৎ উদ্দেশ্যে রাজনীতি করছি।’

উল্লেখ্য, সাবেক সেনাকর্মকর্তা আজমি সাক্ষাৎকারে আয়নাঘরে চালানো নির্যাতন প্রসঙ্গে দ্য নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, বড় কাপড় দিয়ে কখনো কখনো তাঁর চোখ এমনভাবে বাঁধা হতো যে নাক আটকে গিয়ে শ্বাস নিতে কষ্ট হতো। ব্যথা হতো চোখেও। আবদ্ধ ঘরে থেকে থেকে ক্ষয়ে যায় তাঁর দাঁত, ত্বকে দেখা দেয় ঘা।

এত সব নির্যাতনের বাইরেও সারাক্ষণ একটা আতঙ্ক তাঁকে তাড়া করে বেড়াত বলে জানান আজমি। তিনি বলেন, তাঁর মনে হতো, একদিন রাতে তাঁকে বাইরে নিয়ে হত্যার পর কোথাও ফেলে দেওয়া হবে, আর পরদিন পত্রিকার পাতায় গল্প ছাপা হবে, পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন তিনি।

আজমি বলেন, তিনি সৃষ্টিকর্তার কাছে মনেপ্রাণে চাইতেন, তাঁর মরদেহ যেন কুকুর–বিড়ালে খেয়ে না ফেলে। মরদেহ যেন তাঁর পরিবার ও স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

এক সংবাদ সম্মেলনে আজমি বলেছেন, ‘যে অপমান ও যন্ত্রণা আমি ভোগ করেছি, তা কোনো ভাষায় বর্ণনা করার মতো নয়।’

সূত্র : নিউইয়র্ক টাইমস




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!