মধ্যপ্রাচ্যের গৃহযুদ্ধ কবলিত দেশ ইয়েমেনের অস্ত্র ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্যের বিজ্ঞাপন ও বিক্রির জন্য খোলাখুলিভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স ব্যবহার করছেন। অটোমেটিক কালাশনিকভ, বিভিন্ন রেঞ্জের পিস্তল, গ্রেনেড, রকেট-লাঞ্চারসহ বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র বিক্রি হচ্ছে এক্সের মাধ্যমে।
রাজধানী সানা এবং হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠী নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোর অস্ত্র ব্যবসায়ীদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি দেখা যাচ্ছে। সাবেক ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত এবং বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা কাউন্টার এক্সট্রিমিজম প্রোজেক্টের কর্মকর্তা এডমুন্ড ফিটন-ব্রাউন এজন্য হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর ছত্রছায়া ও পৃষ্ঠ-পোষকতাকে দায়ী করেছেন।
বিবিসিকে তিনি বলেন, “বর্তমানে ইয়েমেনে যেসব ব্যক্তি অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন, তাদের সবাই কোনো না কোনো ভাবে হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে কোনো না কোনোভঅবে সম্পর্কিত এবং তাদের আশীর্বাদপুষ্ট। তারা যে অবাধে তাদের পণ্য বিক্রির জন্য এক্স ব্যাবহার করতে পারছেন, তার মূল রহস্য এখানে।”
সম্প্রতি যুক্তরাজ্যেভিত্তিক দৈনিক দ্য টাইমস একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় ইয়েমেনে ব্লু টিকধারীদের সংখ্যা অস্বাভাবিক মাত্রায় বেশি।
এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়ে এক্স কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল বিবিসি, কিন্তু কেউই মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে এক্স কোম্পানির একটি সূত্র জানিয়েছে, ২০২২ সালে ইলন মাস্ক কোম্পাটি কিনে নেওয়ার পর বহু সংখ্যক কন্টেন্ট মডারেটর (কন্টেন্ট পোস্টযোগ্য কি না- তা যাচাই করেন যারা) চাকরি হারিয়েছেন। তাদের স্থলে নতুন কর্মী এখনও সেভাবে নিয়োগ করা হয়নি।
ইয়েমেনে এক্সে যেসব অস্ত্রের বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে, ক্রেতাদের সুবিধার জন্য সেসব বিজ্ঞাপনের অধিকাংশেই আরবি ভাষা ব্যবহার করা হচ্ছে। অস্ত্রের কার্যকারিতা প্রদর্শনের জন্য ভিডিও কন্টেন্টও সমানতালে পোস্ট করা হচ্ছে।
একটি বিজ্ঞাপনে দেখা যাচ্ছে, একজন বিক্রেতা নিজের স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের কার্যকারিতা প্রদর্শনের জন্য ৩০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ছেন।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক এনজিও সংস্থা টেক এগেইনস্ট টেরোরিজম জানিয়েছে, শিগগিরই এসব বিজ্ঞাপনের প্রচার বন্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে চিঠি দেবেন তারা।
সূত্র : বিবিসি
খুলনা গেজেট/এএজে