খুলনা জেলা পরিষদে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে যমুনা টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি রাশেদ নিজামকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (৮ জুন) দুপুরে খুলনা জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এস এম মাহবুবুর রহমানের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের নিকট লিখিত অভিযোগ এবং খুলনা সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছে ভূক্তভোগী সাংবাদিক রাশেদ নিজাম। তবে লাঞ্ছিত করার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এস এম মাহবুবুর রহমান।
জিডিতে তিনি উল্লেখ করেন, খুলনার চুকনগরে জেলা পরিষদের স্থানে মার্কেট নির্মাণ হচ্ছে। সেখানে দোকান বরাদ্দ নিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ আছে। যার বড় অংশের সঙ্গে খুলনা জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এস এম মাহবুবুর রহমান জড়িত আছে মর্মে জানতে পারি। আমি ক্যামেরাম্যানসহ আজ দুপুর ১২টার দিকে জেলা পরিষদে তার কক্ষে সাক্ষাৎকার নিতে যাই। এসময় তিনি হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে আমাকে এবং আমার ক্যামেরাম্যানকে শারীরিকভাবে আঘাত করেন। ধাক্কা দিয়ে রুম থেকে বের করে দেন এবং ক্যামেরার মেমোরি কার্ড ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে এবং আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে আমি এবং আমার টিমের লোকজন সামাজিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি।
যমুনা টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি রাশেদ নিজাম বলেন, চুকনগরে জেলা পরিষদের একটি মার্কেট নিয়ে ভুয়া বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এবং আর্থিক অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে। জেলা পরিষদের যে বিধিমালা সেই বিধিমালার বাইরে গিয়ে সেখানে মার্কেট করা হচ্ছে। এটার অভিযোগ আমরা পেয়েছি, এখানকার প্রশাসনিক কর্মকর্তার এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। এ বিষয় নিয়ে আমরা মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলাম, জিজ্ঞেস করছিলাম। তার কাছে যখন জানতে চেয়েছি, তখন তিনি আমাদের ওপর চড়াও হয়েছেন এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন। উনার সহযোগী এবং উনি নিজেই আমাদেরকে আঘাত করে কক্ষ থেকে বের করে দিয়েছেন। এ বিষয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। তারা বলেছেন বিষয়টি দেখবেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে খুলনা জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এসএম মাহবুবুর রহমান বলেন, যমুনা টেলিভিশনের সাংবাদিক রাশেদ নিজাম ও তার ক্যামেরাম্যান আসলে তাদের আমার কক্ষে নিয়ে আসি। তিনি কিছু কাগজপত্র নিয়ে আমাকে প্রশ্ন করছিলেন, আমি উত্তর দিচ্ছিলাম। তখন ক্যামেরাম্যান আমার দিকে ক্যামেরা ঘুরিয়ে দেন। আমি বললাম আমার দিকে ক্যামেরা দিয়েন না, আমি এই অফিসের পঞ্চম গ্রেডের অফিসার। আমার ওপরে আরও চারজন কর্মকর্তা রয়েছেন। চেয়ারম্যানের অনুমতি না নিয়ে আমি টিভিতে সাক্ষাতকার দিতে পারি না। তখন আমি কাগজটা নিয়ে উল্টে দিয়েছি, বলেছি আপনারা এখন আসেন (যান)। উনি (রাশেদ নিজাম) আমার ওপর চাপ সৃষ্টি করছিলেন। আমাকে উত্তেজিত করতে উল্টাপাল্টা প্রশ্ন করছিলেন। তখন আমি বললাম ভাই চলেন যাই, আপনি এখানে বসেন না। আপনি চেয়ারম্যানের কাছে যান, চেয়ারম্যান অনুমতি দিলে আমি উত্তর দেব। তখন উনার এবং ক্যামেরাম্যানের হাতটা ধরে উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। লাঞ্ছিত করার কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, কসম দিয়ে বলছি এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।
খুলনা গেজেট/এমএম