‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইক লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদাহ ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মূল্ক’ ধ্বনিতে মুখরিত পবিত্র কাবা চত্বর। বিশ্বের নানা প্রান্তের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে হাজির হয়েছেন পবিত্র মক্কায়।
তীব্র গরম উপেক্ষা করেই হজের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। সৌদি সময়ানুযায়ী আগামীকাল ১৪ জুন, ৮ জিলহজ শুক্রবার মিনার উদ্দেশে যাত্রার মধ্য দিয়ে হজের মূল কার্যক্রম শুরু হবে। আর ১৮ জুন, ১২ জিলহজ মঙ্গলবার শয়তানকে পাথর নিক্ষেপের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ৫ দিনের হজের কার্যক্রম।
ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভ হজ পালনের জন্য ইতোমধ্যে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে হজযাত্রীরা সৌদি আরব পৌঁছেছেন। এবার বিশ্বের ১৮০টির বেশি দেশের প্রায় ২০ লাখ মানুষ পবিত্র হজ পালন করবেন। বাংলাদেশ থেকে হজ পালন করবেন ৮৫ হাজার ২৫৭ জন। শুক্রবার থেকে পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। তবে হজযাত্রীর সংখ্যা বিবেচনায় সৌদি মুয়ালিমরা আজ বৃহস্পতিবার রাতেই হজযাত্রীদের তাঁবুর শহর মিনায় নেয়া শুরু করবেন। এশার নামাজের পর মক্কার নিজ নিজ আবাসন থেকে ইহরামের কাপড় পরে মিনার উদ্দেশে রওনা হবেন হাজীরা। এ সময় গুঞ্জরিত হবে তালবিয়া-‘লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক। লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক। ইন্নালহামদা ওয়াননি’মাতা লাকা ওয়াল মূলক, লা শারিকা লাক।’
মিনায় পৌঁছে হাজীরা ফজর থেকে শুরু করে এশা অর্থাৎ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবেন নিজ নিজ তাঁবুতে। তবে খায়েফ ও কুয়েতি মসজিদের কাছাকাছি তাঁবু থাকলে মসজিদে গিয়েও নামাজ আদায় করতে পারেন হাজীরা।
মূলত ৯ জিলহজ আরাফাতের ময়দানে অবস্থানের দিনকেই হজের দিন বলা হয়। এ দিনের নাম ইয়াইমুল আরাফা। ১৫ জুন ৯ জিলহজ শনিবার সূর্যোদয়ের পর হাজীদের আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশে যাত্রা করার কথা থাকলেও আগামীকাল রাতেই নিয়ে যাবেন মুয়ালিমের দায়িত্বশীলরা। সেখানে আগে পৌঁছে গেলে ফজর এবং জোহর-আসর আদায় করবেন আরাফাতের ময়দানে। এখানে মসজিদে নামিরা থেকে হজের খুতবা দেবেন খতিব। চলতি বছর আরাফাতের ময়দানে হজের খুতবা দেবেন মসজিদুল হারামের জনপ্রিয় ইমাম ও খতিব শায়খ ড. মাহের বিন হামাদ বিন মুয়াক্বল আল মুয়াইকিলি। একই সাথে মসজিদে নামিরাতে নামাজও পড়াবেন তিনি। তবে বাংলাদেশের হজযাত্রীদের তাঁবু বেশ খানিকটা দূরে থাকায় তাদের পক্ষে মসজিদে নামিরায় যাওয়া সম্ভব হয় না। এ ক্ষেত্রে নিজ নিজ তাঁবুতেই তারা নামাজ আদায় করে নেন। আরাফাতের ময়দানে অবস্থানের পর হাজীরা মিনায় প্রত্যাবর্তন করবেন। ১৬ জুন ১০ জিলহজ সৌদি আরবে ঈদুল আজহা পালিত হবে।
ইসলামের বিধান অনুসারে, ১০ জিলহজ মিনায় প্রত্যাবর্তনের পর হাজীদের পর্যায়ক্রমে চারটি কাজ সম্পন্ন করতে হয়। শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ, আল্লাহর উদ্দেশে পশু কোরবানি, মাথা মুণ্ডন করা এবং তাওয়াফে জিয়ারত। এর পর ১১ ও ১২ জিলহজ অবস্থান করে প্রতি দিন তিনটি করে শয়তানকে প্রতীকী পাথর নিক্ষেপ করবেন হাজীরা। সবশেষে কাবা শরিফকে বিদায়ী তাওয়াফের মধ্য দিয়ে শেষ হবে হজের আনুষ্ঠানিকতা।
খুলনা গেজেট/এইচ