ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতের তিন দিন পরও পানির নিচে খুলনার কয়রা, দাকোপ ও পাইকগাছার বিভিন্ন গ্রাম। এসব স্থানে বাঁধের ভাঙা অংশ মেরামতে তিন দিন ধরে কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও স্থানীয় মানুষ। সকালে মেরামতের পর দুপুরের জোয়ারের চাপে বিকল্প বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে। এতে প্লাবিত হচ্ছে আশপাশের গ্রাম। গতকাল বুধবার সকালে বাঁধ মেরামতের পর দুপুরে একই ঘটনা ঘটে।
পাউবো কর্মকর্তা ও স্থানীয়রা জানান, রিমালের আঘাতে খুলনার তিন উপজেলার আট পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে যায়। এতে প্লাবিত হয় শত শত বাড়িঘর, মাছের ঘের ও ফসলি জমি।
বিরামহীন চেষ্টার পর পাঁচটি পয়েন্টে বাঁধ মেরামত সম্ভব হয়েছে। তবে কয়রার মহারাজপুর ইউনিয়নের দশহালিয়া, দাকোপের তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের দক্ষিণ কামিনীবাসিয়া এবং পাইকগাছার দেলুটি ইউনিয়নের পেড়িখালী গ্রামের ভাঙা বাঁধ দিয়ে এখনও পানি ঢুকছে।
সরেজমিন দেখা যায়, দাকোপের দক্ষিণ কামিনীবাসিয়া গ্রামে বাঁধ মেরামতের জন্য সকাল থেকে কাজ শুরু হয়। বাঁধের প্রায় ৬০ শতাংশ কাজ শেষ হতেই জোয়ার চলে আসে। জোয়ারের চাপে এক পর্যায়ে পানিতে ভেসে যায় বিকল্প বাঁধ। এতে তিলডাঙ্গা ও পানখালী ইউনিয়নের ২০ থেকে ২২টি গ্রাম তলিয়ে যায়। একই দৃশ্য দেখা গেছে কয়রার দশহালিয়া গ্রামে। বুধবার সকালে দুই শতাধিক মানুষ মূল ভাঙনে কাজ শুরু করেন। দুপুরের আগেই বাঁধটির ৮০ শতাংশ মেরামত কাজ শেষ করা হয়। দুপুর পৌনে ২টার দিকে নদীতে পূর্ণ জোয়ারের সময় পানির চাপে তা ভেঙে যায়। এতে ওই গ্রামের শতাধিক বাড়িঘর ফের পানিতে তলিয়ে যায়।
ওই স্থানে বাঁধ মেরামত কাজে অংশ নিয়েছিলেন স্থানীয় গ্রাম্য চিকিৎসক নুরুল ইসলাম। তিনি জানান, কাজ করার জন্য প্রচুর সংখ্যক মানুষের উপস্থিতি ছিল। তবে সময়মতো কাজের সরঞ্জাম জোগান দিতে পারেননি পাউবো কর্মকর্তারা। বিশেষ করে বালুভর্তি বস্তার অভাবে মেরামত করার পরও বাঁধটি টিকিয়ে রাখা যায়নি।
পাউবোর খুলনা নির্বাহী প্রকৌশলী-২ আশরাফুল আলম বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে আট স্থানে বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢোকে। প্রথম দিন পাঁচ স্থানে বিকল্প বাঁধ নির্মাণ সম্ভব হয়। তবে তিনটি স্থানে তিন দিন চেষ্টা করেও বাঁধ টিকিয়ে রাখা যাচ্ছে না। আমরা চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। তিনি বলেন, আপাতত বিকল্প বাঁধ তৈরি করে পানি ঢোকা বন্ধ করাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। পরে ক্ষতিগ্রস্ত স্থান স্থায়ীভাবে মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
খুলনা গেজেট/হিমালয়