দ্বিতীয় ধাপে খুলনার তিনটি উপজেলা পরিষদের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (২১) মে সকাল ৮টায় তেরখাদা, দিঘলিয়া ও ফুলতলা উপজেলায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। এবারের নির্বাচনে ১৩৮টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৯৫টিকে ঝুঁকিপূর্ণ ও ৪৩টিকে সাধারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। সাধারণ কেন্দ্রের তুলনায় ঝুকিপূর্ণ কেন্দ্রে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা এ টি এম শামীম মাহমুদ জানান, তেরখাদা উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী ২ জন, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ৪ জন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ৪ জন। দিঘলিয়া উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী ৪ জন, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ৭ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ৩ জন। ফুলতলা উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী ৪ জন, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ৩ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ২ জন।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, মোট ১৩৮টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে তেরখাদা উপজেলায় রয়েছে ৪৩টি, দিঘলিয়ায় ৫২টি ও ফুলতলায় ৪৩টি। জেলা পুলিশ সূত্র বলছে, তিন উপজেলায় তাদের আওতাধীন এলাকায় ভোটকেন্দ্র রয়েছে ১১২টি। এর মধ্যে ৬৯টিকে ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করা হয়েছে।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ জানায়, তিন উপজেলার মধ্যে দিঘলিয়া ও ফুলতলার ২৬টি কেন্দ্র তাদের আওতাধীন। তারা সবগুলো কেন্দ্রকেই ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করেছে। বেশ কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করে এই তালিকা করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা, কোনো প্রার্থীর বাড়ির কাছে কেন্দ্র কিনা, প্রভাব বিস্তারের আশঙ্কা এবং যাতায়াত ব্যবস্থা প্রভৃতি নেওয়া হয়েছে বিবেচনায়।
পুলিশ জানায়, প্রতিটি সাধারণ ভোটকেন্দ্রে ৩ জন পুলিশ ও ১৭ জন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। ঝুঁকিপূর্ণ প্রতিটি কেন্দ্রে থাকবেন ৪ জন পুলিশ ও ১৭ জন করে আনসার সদস্য। এ ছাড়া পুলিশ ও র্যাবের টহল টিম দায়িত্ব পালন করবে।
খুলনার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান জানান, সাধারণের তুলনায় ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তা ও নজরদারি থাকবে। তবে সাধারণ কেন্দ্রেও নিরাপত্তার কোনো ঘাটতি থাকবে না।
তেরখাদা সরকারি ইখড়ি কাটেংগা ফজলুল হক মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মহিলা কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার কপিল দেব বসাক জানান, সকাল ৮টায় কেন্দ্রের ছয়টি বুথে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। কেন্দ্রটির ২২২৯ জন ভোটারের মধ্যে সকাল ১০টা পর্যন্ত ২ ঘন্টায় ভোট দিয়েছেন ১৯৮ জন। কেন্দ্রটিতে ভোট পড়েছে ৯ শতাংশ।
এদিকে দিঘলিয়া উপজেলার ব্রক্ষগাতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে সকাল পৌনে ৯টায় ভোট প্রদান করেন উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ মারফুল ইসলাম। তিনি আনারস প্রতিক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। সকাল থেকে এখানে ভোটার উপস্থিতি বেশী। পুরুষ ভোটারদের চেয়ে মহিলা ভোটারদের উপস্থিতি বেশি।
ভোট প্রদান শেষে শেখ মারুফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হচ্ছে। স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটাররা ভোট দিতে এসেছে। আমি পুনরায় জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।
সকাল আটটায় একই কেন্দ্রে ভোট প্রদান করেছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সৈয়দ জামিল মোর্শেদ মাসুম। চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ জাকির হোসেনও একই কেন্দ্রে ভোট দিবেন।
পূর্ব সেনহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট প্রদান শেষে বিল্লাল হোসেন বলেন, সুষ্ঠুভাবে ভোট দিয়ে এলাম। রাস্তায় আসার সময় ভোট দিতে কেউ বাধা সৃষ্টি করেনি। ভোট শান্তিপূর্ণ হচ্ছে।
একই কেন্দ্রের ভোটার সীমা খাতুন ভোট প্রদান শেষে বলেন, সুন্দরভাবে ভোট হচ্ছে। ভোট দিয়ে এলাম। কোন বাধা নেই।
সেনহাটি ইউনিয়নের বাতিভিটা ১নং ওয়ার্ডের ভোটার মোঃ আবুল কালাম আজাদ ভোট প্রদান শেষে বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হয়েছে। ভোটার উপস্থিতিও ভালো। যেহেতু আমাদের এই কেন্দ্রে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছে সেহেতু এ কেন্দ্রে ৬০ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি আশা করছি।
পূর্ব সেনহাটি সরকারি বিদ্যালয়ে ১০ টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ১০ শতাংশ। কেন্দ্রটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ৩৩৭৩ জন। কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার পলাশ চন্দ্র মন্ডল এ তথ্য জানিয়েছেন।
সেনহাটি ইউনিয়নের উত্তর চন্দনিমহল বগদিয়া আলহাজ্ব মকবুল হোসেন নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় মহিলা কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ২৬৬১ জন। সকাল দশটা পর্যন্ত ভোট দিয়েছেন ২৩০ জন। ভোটার উপস্থিতির ৯ শতাংশ বলে তথ্য দিয়েছেন কেন্দ্রের ডিজাইনিং অফিসার মানস কুমার ঢালী।
সেনহাটি ইউনিয়নের চন্দনীমহল শিল্প সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পুরুষ কেন্দ্রে মোট ভোটারের সংখ্যা ২৬০৯ জন। সকাল ১০ টা পর্যন্ত মোট ভোট প্রদান করেছেন ৩৩২ জন। ভোটার উপস্থিতি ১১ শতাংশ বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মঙ্গল চন্দ্র ঢালী।
খুলনা গেজেট/এমএম/এনএম