অনলাইনে ৭৬ হাজার ভুয়া শপের মাধ্যমে ইতোমধ্যে প্রতারকচক্র হাতিয়ে নিয়েছে আট লাখের বেশি ক্রেতার অর্থ ও ব্যক্তিগত তথ্য। ধারণা করা হচ্ছে এটি এখন পর্যন্ত বিশ্বে সবচেয়ে ভয়াবহ এবং ব্যাপক আকারের অনলাইনভিত্তিক প্রতারণা। চক্রটি গত তিন বছরে ৫ কোটি ইউরো হাতিয়ে নিয়েছে।
চীন থেকে পরিচালিত ডিজাইনার ব্র্যান্ড নামক শপের অন্তরালে এমন জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগীদের অধিকাংশ ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা।
সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের অনুসন্ধানে ওঠে এসেছে, ৭৬ হাজার জাল ওয়েবসাইট দিয়ে তৈরি বিশাল চক্রের অস্তিত্ব। যুক্তরাজ্যের চার্টার্ড ট্রেডিং স্ট্যান্ডার্ডস ইনস্টিটিউট একে সবচেয়ে বড় স্ক্যাম হিসেবে উল্লেখ করেছে।
প্রতিবেদক এবং আইটি বিশেষজ্ঞরা এসব তথ্য পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণ করে জানিয়েছেন, সংঘবদ্ধ চক্রটি অত্যন্ত সংগঠিত, প্রযুক্তিগতভাবে অতি উন্নত।
অনলাইনে এটি বিশাল পরিসরে শিল্পগোষ্ঠীর আদলে কাজ করে তারা। ডিয়র, নাইকি, লাকোস্টে, হুগো বস, ভারসেজ এবং প্রাডার মতো আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের বিভিন্ন পণ্যের ওপরে বড় ধরনের ছাড় দিয়ে বিক্রির ঘোষণা দেয়া হয় এসব শপের ওয়েবসাইটে।
ইংরেজি, জার্মান, ফ্রেঞ্চ, স্প্যানিশ, সুইডিশ এবং ইতালীয় ভাষায় প্রকাশিত ওয়েবসাইটগুলো ক্রেতাদের সহজে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করে এবং তারা সেখানে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন এবং সংবেদনশীল ব্যক্তিগত তথ্য দিতেও শঙ্কিত হন না। এইসব ভুয়া সাইটগুলোর সঙ্গে তারা যে ব্র্যান্ডগুলো পণ্য বিক্রির দাবি করে তার সঙ্গে কোনও সংযোগ নেই। এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গ্রাহকরা তাদের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে বলেন, অর্ডার দেয়া কোনও আইটেমই হাতে পাননি তারা।
ইন্টারনেটে প্রথম দিককার এই ভুয়া শপগুলো ২০১৫ সালে চালু করা হয়। গত তিন বছরে ১০ লাখেরও বেশি ‘অর্ডার’ প্রক্রিয়া করা হয়েছে। কোন অর্ডারই সফলভাবে প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি। এই চক্রটি ৫ কোটি ইউরো হাতিয়ে নিয়েছে। এদের অনেক শপ এখন আর অনলাইনে খুঁজে পাওয়া না গেলেও এক তৃতীয়াংশ বা সাড়ে ২২ হাজারের বেশি আজও সক্রিয় রয়েছে।
খুলনা গেজেট/কেডি