Edit Content
খুলনা বাংলাদেশ
বুধবার । ২৩শে জুলাই, ২০২৫ । ৮ই শ্রাবণ, ১৪৩২

ই-পেপার

Edit Content

গলাটিপে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ ইবি ছাত্রলীগকর্মীর বিরুদ্ধে

ইবি প্রতিনিধি

বাসের ছিটে বসাকে কেন্দ্র করে গলাটিপে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রলীগকর্মীর বিরুদ্ধে। এসময় ভুক্তভোগীর চোখে আঙ্গুল ঢুকিয়ে দেওয়াসহ প্রায় ১০ সেকেন্ড গলা চেপে ধরলে মারা যেতেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। এ ঘটনায় শনিবার প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয় ভুক্তভোগী মোহাম্মদ আবু জাহেদ। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

অভিযুক্তরা হলেন উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রতন রায় ও রিহাব রিদোয়ান। তারা শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাতের অনুসারী বলে জানা গেছে।

অভিযোগপত্র সূত্রে জানা যায়, গত ২২ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাস থেকে কুষ্টিয়া শহরে যাওয়ার জন্য দুপুর তিনটার বাসে উঠে ভুক্তভোগী। ভুক্তভোগীর বন্ধু তার জন্য দুইটি সিট ধরে। এসময় ভুক্তভোগী একটা সিটে বসে আর অন্য সিটটা আরেক জনকে দিয়ে দেয়। যাকে সিট দেয় সে অভিযুক্ত রতন। কিছুক্ষণ পরে সে নিচে গিয়ে কয়েকজন বন্ধু/বান্ধুবী নিয়ে আসে এবং ভুক্তভোগীকে বলে ‘ওপাশে চাপেন’। তখন ভুক্তভোগী বলেন, ‘ভাই এই সিটটা আমার ভালো লাগে এজন্য আমি বসছি’। তখন অভিযুক্ত তাকে বলেন, ‘ওই চাপ’। ভুক্তভোগী বলেন, ‘ভাই আমি এই সিটে বসি’। তখন অভিযুক্ত বলেন, ‘ওই তোর সেশন কত রে’। যখন ভুক্তভোগী পুরো পরিচয় দিবে তৎক্ষনাত অভিযুক্ত রতন আচমকা তার গলাটিপে ধরে এবং আরেক অভিযুক্ত রিহাব রিদোয়ান তার চোখে আঙ্গুল ঢুকিয়ে দেয়। এসময় ভুক্তভোগী হাত সরানোর চেষ্টা করছিল কিন্তু অভিযুক্তরা কিছুতেই ছাড়ছিল না। পরে ভুক্তভোগী সিট থেকে ওঠে গেলেও তারপরেও তারা ছাড়িনি। এসময় ভুক্তভোগীর কথা বলা বন্ধ হয়ে যায়। বাসের সবাই চিল্লাপাল্লা শুরু করে তারা ভুক্তভোগীকে ছাড়িয়ে নেয়। আর ৯/১০ সেকেন্ড থাকলে মারা যেতেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন ভুক্তভোগী। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।

এদিকে একই ঘটনায় প্রক্টর বরাবর অভিযোগ দিয়েছে অপরপক্ষ। সেখানে তারা উল্লেখ করেন, ওই শিক্ষার্থীকে ভালোভাবে সরে বসতে বলা হয়। কারণ মধ্যের সিটে মেয়ের জন্য বসা অস্বস্তিকর। কিন্তু ওই ছেলে অন্য সিটে যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। পরে আবার অনুরোধ করা হলে সে উগ্র আচরণ করে। এ জন্য তার পরিচয় জানতে চাই তারা। কিন্তু জাহেদ পরিচয় না দিয়ে তাদেরকে তেড়ে আসে। ফলে তার জার্সির হাতের একপাশ ধরে তাকে অন্য সিটে বসায় রতন, রিদোয়ানরা। অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ করেন, তাদের বিরুদ্ধে জাহেদ যে অভিযোগ এনেছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, বানোয়াট এবং মিথ্যা। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা উন্মোচনের দাবি জানান তারা।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত রিদোয়ান বলেন, তাকে ফিজিক্যালি কোন টার্চ করা হইনি। সে উগ্র আচরণ করছিল। শুধু তার জার্সির কলার ধরা হইছিল। চোখে আঙ্গুল দেওয়ার মতো কোন ঘটনা ওখানে ঘটেনি।

আরেক অভিযুক্ত রতন বলেন, পাশে মেয়ের সিট থাকার কারণে ওই মেয়ে বসতে ইতস্ততবোধ করছিল। এজন্য তাকে আমরা সরে যেতে বললে সে আমাদের সাথে উল্টো বাজে আচরণ করেছিল। তার গলা টিপা হইনি। সে মিথ্যা বলছে।

ভুক্তভোগী আবু জাহেদ বলেন, তারা যেগুলো বলছে তা সম্পুর্ণ মিথ্যা। বরং তারা গলাটিপে ধরে ও চোখে আঙ্গুল ঢুকিয়েছে। আমি তাদের বিচার চাই।

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। ছাত্রলীগের কর্মীদের দ্বারা এ ধরনের ঘটনা কখনোই কাম্য নয়।

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, শিক্ষার্থীর অভিযোগটি আমলে নিয়ে প্রক্টর অফিসে মিটিং করেছি। মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগটি প্রেরণ করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন