সীমান্ত হত্যা কমাতে নন-লিথাল ওয়েপন (প্রাণঘাতী নয় এমন) ব্যবহারের বিষয়ে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ-ভারত। সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ভারতে প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফর শেষে সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এ তথ্য জানান।
মন্ত্রী বলেন, সীমান্ত হত্যা নিয়ে আলোচনা করেছি। নন-লিথাল ওয়েপন ব্যবহার অপারেশনাল করার বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এছাড়া নিরাপত্তা সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে।
তিনি আরও বলেন, যদি নন-লিথাল ব্যবহার হয় তাহলে সীমান্তে যে হত্যা হয়, সেটা হবে না। অনেকটা কমে যাবে। সেটি কিভাবে অপারেশনাল করা যায় এবং সীমান্ত হত্যা কমানো বিষয়ে আলোচনা করেছি। আমরা ঐক্যমত হয়েছি।
তিস্তা ও গঙ্গা চুক্তি
আগামী মাসে ভারতের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ভারতের নির্বাচনের পর দীর্ঘদিন আটকে থাকা তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তিসহ গঙ্গা চুক্তি নবায়ন নিয়ে ঢাকা ও দিল্লি কাজ করবে সম্মত হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিস্তা চুক্তি এবং গঙ্গা চুক্তি নবায়ন নিয়ে আলোচনা করেছি। তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কোনো সমস্যা নেই। সমস্যাটা রাজ্যের। ভারতের নির্বাচন আগামী মাসে। তার (ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী) সঙ্গে যেটা আলোচনা হয়েছ, নির্বাচনের পর এই বিষয়ে আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যাব এবং একইভাবে গঙ্গার পানি বণ্টনের নবায়নের বিষয়টি নিয়ে ভালোভাবে আলোচনা করেছি।
মিয়ানমার ইস্যু
দিল্লি সফরে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল এবং দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে পৃথক বৈঠকে মিয়ানমারের চলমান পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন হাছান মাহমুদ।
মিয়ানমার ইস্যুতে আলোচনার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছি। মিয়ানমারে এখন যে সংঘাত চলছে এটা আমাদের অঞ্চলে সমস্যা সৃষ্টি করছে সেটা থেকে উত্তরণে আমরা একযোগে কাজ করব কিভাবে, সেটা নিয়ে আলোচনা করেছি। রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে ভারতের সহায়তা চেয়েছি।
মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ-ভারত কীভাবে কাজ করবে জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, দুই দেশ তাদের (মিয়ানমারের) সঙ্গে সীমান্ত শেয়ার করি। সুতরাং, মিয়ানমারে কোনো পরিস্থিতি হলে সেটা আমাদের যেভাবে ক্ষতিগ্রস্থ এবং উদ্বিগ্ন করে তাদেরও (ভারতকে) করে। প্রতিবেশীকে নিয়ে দুজনের উদ্বেগ। আমাদের অনেকগুলো বিষয় আছে, একসঙ্গে কাজ করার মতো। বিশেষ করে, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে সবসময় ভারতের সহায়তা চেয়েছি, এবারও চেয়েছি।
ভিসা ইস্যু
ভারতের ভিসা পেতে বাংলাদেশিদের বিভিন্ন সময়ে যেসব বিড়ম্বনায় পড়তে হয়, সে বিষয়টি দিল্লি সফরে তুলছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এই প্রসঙ্গে মন্ত্রী জানান, দুই দেশের মানুষে মানুষের সঙ্গে কীভাবে যোগাযোগ বাড়ানো যায়, সেটা নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছি। ভিসা ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেছি। ভিসা দেয়ার পরিমাণ বাড়ছে, কিন্তু ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে যে ধরণের বিড়ম্বনার স্বীকার হতে হয় সেগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি; যাতে আরও সহজ করা যায়।
খুলনা গেজেট/কেডি