স্বাস্থ্যজ্জ্বল ও সুন্দর চুল পেতে চাইলে নিয়মিত তেল ব্যবহারের কোনও বিকল্প নেই। চুলে পর্যাপ্ত পুষ্টি সরবরাহ করে তেল। এতে চুল গোড়া থেকে মজবুত থাকে। চুলের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা মেটাতে পারে তেল। যেমন চুল পড়ে যাওয়া, খুশকি, রুক্ষতা- সবকিছুরই সমাধান মেলে তেল ব্যবহারে। তবে চুলের ধরন ও প্রয়োজন অনুযায়ী নির্বাচন করতে হবে তেল। যেমন যাদের চুল তৈলাক্ত তাদের হালকা তেল প্রয়োজন। আবার যাদের চুল শুষ্ক প্রকৃতির, তাদের দরকার ভারি তেল। মাথার ত্বকে অ্যালার্জি থাকলে প্রয়োজন অন্য ধরনের তেল। বিভিন্ন ধরনের তেল কিন্তু খুব সহজে ঘরেই বানিয়ে ফেলতে পারেন। জেনে নিন কোন চুলের জন্য কেমন তেল বানাবেন।
পেঁয়াজের রস
পেঁয়াজের রসে রয়েছে সালফার, যা মাথার ত্বকে কোলাজেন অর্থাৎ প্রোটিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। এই কোলাজেনই মাথায় নতুন হেয়ার ফলিকল তৈরি করে। তবে শুধু পেঁয়াজের রস মাথায় লাগালে চুল শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে নারকেল তেল কিংবা অলিভ অয়েলের সঙ্গে পেঁয়াজের রস মিশিয়ে মাথায় মাখা যেতে পারে।
জবা ফুলের তেল
চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যায় ভুগলে জবা ফুল দিয়ে তেল বানিয়ে নিন। এজন্য জবা ফুল আর জবা পাতা থেঁতো করে নারিকেল তেলে মিশিয়ে চুলায় বসান। কম আঁচে রেখে দিন কিছুক্ষণ। ফুটে উঠলে ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে বোতলে রেখে দিন। সপ্তাহে তিন দিন চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত লাগাবেন এই তেল।
আমলকীর তেল
ঝলমলে ও মজবুত চুল পেতে আমলকীর তেল বানিয়ে নিন। বাজারে আমলকীর গুঁড়া কিনতে পাওয়া যায়। হাতের কাছে না পেলে আমলকী ধুয়ে টুকরো করে কেটে রোদে শুকিয়ে গুঁড়া করে নিন। আমলকীর পাউডার, নারিকেল তেল, মেথি, কালোজিরা আর কারিপাতা দিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে নিন। ফুটিয়ে নেওয়ার পর সেই তেল ঠান্ডা করে বোতলে ভরে রাখুন। সপ্তাহে দুই দিন চুলে ব্যবহার করুন আমলকীর তেল।
তুলসীর তেল
মাথায় অ্যালার্জি থাকলে তুলসীর তেল বানিয়ে নিন। তুলসী পাতা পানিতে ধুয়ে বেটে নিন। এবার নারিকেল তেলের মধ্যে বাটা তুলসী ও সামান্য মেথি দিয়ে ফুটিয়ে নিন। ঠান্ডা হলে ছেঁকে বোতলে রেখে দিন। ব্যবহার করুন প্রয়োজন মতো।
কমলা আর লেবুর তেল
খুশকির উপদ্রবে অস্থির হয়ে পড়েছেন? কমলা আর লেবুর খোসা রোদে শুকিয়ে গুঁড়া করে নিন। ১০০ মিলি নারিকেল তেল বা অলিভ অয়েল গরম করে তাতে ১ টেবিল চামচ খোসার গুঁড়া দিন। তেল ফুটে গেলে নামিয়ে ছাঁকনিতে ছেঁকে ব্যবহার করুন।
নারকেল তেলের সঙ্গে কারি পাতার তেল
নারকেল তেলে রয়েছে লরিক অ্যাসিড, যা চুলে প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে। চুলের বৃদ্ধির জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করেতে পারে এই তেল। এক কাপ খাঁটি নারকেল তেলের সঙ্গে এক মুঠো কারি পাতা দিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে নিন। গোসেলের আধাঘণ্টা আগে এই তেল মেখে নিন। তার পরে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
অলিভ অয়েলের সঙ্গে কালোজিরে
কালোজিরেতে ভিটামিন ও জিঙ্ক, আয়রন ও পটাশিয়ামের মতো খনিজ থাকে। এই সব উপাদান নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। কালোজিরে গুঁড়ো করে অলিভ অয়েলের সঙ্গে মিশিয়ে মাথায় মাখতে পারেন। নতুন চুল গজাবে, চুলের পুষ্টিও হবে।
খুলনা গেজেট/ এএজে