দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে উত্তরের জেলা দিনাজপুরে। রাত থেকে শুরু করে সকাল ১১টা পর্যন্ত বৃষ্টির মতো পড়ছে শিশির। কয়েকদিন ধরে দেখা মিলছে না সূর্যের।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, সকাল ৯টায় দিনাজপুরে ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯৭ ভাগ। চলতি বছরে এটি জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। জেলার ওপর দিয়ে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। চলতি সপ্তাহে জেলায় স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভবনা আছে।
গত কয়েকদিন ধরেই উত্তরাঞ্চলের জেলাটিতে বেড়েছে শীতের দাপট। শীতের সকালে ছিন্নমূল আর গ্রামীণ মানুষ খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ।
কৃষক রুবেল সরকার বলেন, গত কয়েকদিনের লাগাতার ঘন কুয়াশার আর শীতল বাতাসের কারণে আমার বীজতলার ধানের গাছগুলো হলুদ বর্ণ হয়ে গেছে। এর থেকে প্রতিকার পেতে অতিরিক্ত খরচ করে স্প্রে করতে হচ্ছে। এতে করে বোরো ধান আবাদে অতিরিক্ত খরচ গুণতে হচ্ছে।
গ্রাম থেকে কাজের সন্ধানে দিনাজপুর শহরের ষষ্ঠীতলা মোড়ে এসেছেন হায়দার আলী তিনি বলেন, শতীতের সকালে গত দুই দিন ধরে এখানে বসে থেকে থেকে চলে যাচ্ছি কাজ পাচ্ছি না। এ কনকনে ঠান্ডায় কাজ না পেয়ে তাই আজকেও ফিরে যাচ্ছি বাড়িতে।
অটোচালক বাবুল ইসলাম বলেন, যে শীত শুরু হইছে কেমন করি মানুষ বাড়ি থেকে বের হইবে।আগে সকাল ১০ টা বাজতে বাজতে দেড় থেকে ২০০ টাকা ইনকাম হইত আর এই শীতের সকাল ১০ টা পার হয়ে গেলেও ১০০ টাকা ভাড়া মারতে পারি নাই। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ বাড়ি থেকে বের না হয়। তাই প্রতিদিনের আয় কমছে। কষ্ট করে সংসার চালাতে হচ্ছে।
জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, শনিবার দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯৭ ভাগ। চলতি বছরে এটি জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। জেলায় এ সপ্তাহে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হতে পারে। বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা আরো কমে যেতে পারে।
জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা রয়েছে সূর্য। সকাল থেকে বিরাজ করছে মেঘাচ্ছন্ন পরিবেশ। তীব্র শীতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের পেশাজীবিরা। পাথর-চা শ্রমিক, দিনমজুর, থেকে নানান শ্রমজীবী মানুষ। কমে গেছে তাদের দৈনন্দিন রোজগার। পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিনযাপন করছেন তারা। প্রয়োজন ছাড়াও অনেকে ঘর থেকে বের না হলেও জীবিকার তাগিদে শীত উপেক্ষা করেই কাজে বেড়িয়েছেন নিম্ন আয়ের পেশাজীবিরা। বিপাকে পড়েছেন চাষিরাও। তারাও ঠান্ডার প্রকোপের কারণে খেতখামারে কাজ করতে পারছেন না। শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষদের মিলছে না প্রয়োজনীয় গরম কাপড়।
এদিকে শীতের কারণে নিউমোনিয়া, অ্যাজমা, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়াসহ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু থেকে বয়স্ক মানুষ। জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোর আউটডোরে ঠান্ডাজনিত রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসার পাশাপাশি শীতজনিত রোগ থেকে নিরাময় থাকতে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করছেন চিকিৎসকরা।
এদিকে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে উত্তরের জেলা দিনাজপুরে। রাত থেকে শুরু করে সকাল ১১টা পর্যন্ত বৃষ্টির মতো পড়ছে শিশির। কয়েকদিন ধরে দেখা মিলছে না সূর্যের। আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, সকাল ৯টায় দিনাজপুরে ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯৭ ভাগ। চলতি বছরে এটি জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। জেলার ওপর দিয়ে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। চলতি সপ্তাহে জেলায় স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভবনা আছে।
খুলনা গেজেট/এনএম