নতুন মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়েছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আবদুর রাজ্জাক, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকসহ ১৫ জন মন্ত্রী। এ ছাড়া ১৩ জন প্রতিমন্ত্রী এবং দুজন উপমন্ত্রী বাদ পড়েছেন।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটায় বঙ্গভবনে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও ২৫ জন পূর্ণ মন্ত্রী (দুজন টেকনোক্রেট) ও ১১ জন প্রতিমন্ত্রীর নাম জানিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও ২৫ জন মন্ত্রী, ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী এবং তিনজন উপমন্ত্রী ছিলেন। তফসিল ঘোষণার পর টেকনোক্র্যাট (সংসদ সদস্য নন এমন) দুজন মন্ত্রী ও একজন প্রতিমন্ত্রী পদত্যাগ করেন। তাঁরা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম। এর মধ্যে নতুন মন্ত্রিসভায় শুধু ইয়াফেস ওসমান আছেন। স্থান পাননি মোস্তাফা জব্বার ও শামসুল আলম।
এ ছাড়া এবারের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাননি তিনজন প্রতিমন্ত্রী। তাঁরা হলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। এই তিনজনও নতুন মন্ত্রিসভায় নেই।
মন্ত্রিসভার বাকি সবাই সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে তিনজন প্রতিমন্ত্রী এবারের নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন। তাঁরা হলেন বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য এবং ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান। এই তিনজনের নামও নেই নতুন মন্ত্রিসভায়।
এ ছাড়া বর্তমান মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যে যাঁরা নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান পাননি, তাঁদের মধ্যে কৃষিমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছাড়াও আছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ. ম রেজাউল করিম, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু বিষয়কমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদূর উশৈসিং, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চোধুরী, রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ।
প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে যাঁরা বাদ পড়েছেন তাঁদের মধ্যে আরও আছেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বেগম ফজিলাতুন নেছা। এছাড়া দুজন উপমন্ত্রী বাদ পড়েছেন। তারা হলেন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার এবং পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম। অপর উপমন্ত্রী (শিক্ষা) মহিবুল হাসান চৌধুরী পদোন্নতি পেয়ে এবার পূর্ণ মন্ত্রী হচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রীসহ বিদায়ী মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা ৪৮ জন (পদত্যাগ করা টেকনোক্র্যাট তিনজনসহ)। সেখানে নতুন মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও ৩৬ মন্ত্রী–প্রতিমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
তবে এবারের মন্ত্রিসভায় পুরনোদের পাশাপাশি বেশ কয়েকজন নতুন মুখ দেখা যাচ্ছে। তারা হলেন:-
পূর্ণমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া নতুন মুখ : নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন (নরসিংদী-৪), মুহাম্মদ ফারুক খান (গোপালগঞ্জ-১), আবুল হাসান মাহমুদ আলী (দিনাজপুর-৪), আব্দুস শহীদ (মৌলভীবাজার-৪), জনাব র, আ, ম, উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩), মো আব্দুর রহমান (ফরিদপুর-১), নারায়ন চন্দ্র চন্দ (খুলনা-৫), আব্দুস সালাম (ময়মনসিংহ-৯), মো. ফরিদুল ৭ হক খান (জামালপুর-২), মো জিল্লুল হাকিম (রাজবাড়ী-২), সাবের হোসেন চৌধুরী (ঢাকা-৯), জাহাঙ্গীর কবির নানক (ঢাকা-১৩), নাজমুল হাসান (কিশোরগঞ্জ-৬)।
প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া নতুন মুখ
বেগম সিমিন হোমেন রিমি (গাজীপুর-৪), মোহাম্মদ আলী আরাফাত (ঢাকা-১৭), জাহিদ ফারুক (বরিশাল-৫), কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা (খাগড়াছড়ি), বেগম রুমানা আলী (গাজীপুর-৩), শফিকুর রহমান চৌধুরী (সিলেট-২), আহসানুল ইসলাম (টিটু) (টাঙ্গাইল-৬)।
প্রসঙ্গত, গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়। বিএনপি- জামায়াত বিহীন এ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পায় আওয়ামী লীগ। ২৯৯টি আসনের মধ্যে ২৯৮টি আসনের বেসরকারি ফলাফল পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ২২২টিতে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল–জাসদ ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি একটি করে আসনে জয় পেয়েছে।
খুলনা গেজেট/কেডি