যশোর-১ (শার্শা) আসনের নৌকা প্রতীকের সমর্থকদের হামলায় জেলা অওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক স্বতন্ত্রপ্রার্থী আশরাফুল আলম লিটনসহ ১০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। এসময় শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে প্রায় এক ঘণ্টা বন্দরের পণ্য খালাস কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়ে।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বেনাপোল বন্দরের ২ নম্বর গেটের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এসময় বন্দরের সামনের একটি মার্কেটে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে স্বতন্ত্রপ্রার্থী ও তার সমর্থকরা। পরে পুলিশ এসে অবরুদ্ধদের উদ্ধার ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এঘটনায় উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে অভিযুক্ত ৩ শ্রমিক নেতাকে ৫ হাজার টাকা করে মোট ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করে সতর্ক করে দেন।
আহতরা হলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম লিটন, আওয়ামী লীগ নেতা আজিবর রহমান, শাহাবুদ্দিন মন্টু, ইয়াসিন আরাফাত শান্ত ও রায়হান রহমান সহ ১০ জন।
এদিকে এ হামলার প্রতিবাদে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা বন্দর সড়কে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এতে আওয়ামী লীগের একাংশের নেতাকর্মীরা অংশ নেয়। এ ঘটনায় নির্বাচনী প্রচার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম লিটন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম লিটন জানান, প্রধানমন্ত্রী ভোটকে উৎসবমুখর করতে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নির্বাচন করার স্বাধীনতা দেওয়ায় তিনি নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। আজ সকালে তিনি তার সমর্থকদের নিয়ে চেকপোস্ট থেকে ভোট চাইতে চাইতে বন্দরের দুই নম্বর গেটের সামনে আসলে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসী প্রকৃতির কয়েকজন শ্রমিক নেতা তাকেসহ তার সর্থকদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে আহত করে।
খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার ও আহতদের হাসপাতালে পাঠায়। ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য এটা পরিকল্পিত হামলা বলে অভিযোগ তুলে তিনি আরও বলেন, আগামীতে সুষ্ঠু নির্বাচন ও ভোট প্রচারণায় তিনি নিরাপত্তা শঙ্কায় ভুগছেন। তবে তার ওপর যতই বাধা আসুক না কেন নির্বাচনে অংশ নিবেন আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বেনাপোল-৯২৫ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ওহিদুজ্জামান ওহিদ শ্রমিকদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে জানান, বেনাপোল বন্দরে দুটি শ্রমিক ইউনিয়নে প্রায় ২ হাজার শ্রমিক রয়েছে। তাদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার উদ্দেশ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম লিটন তার দলবল নিয়ে পরিকল্পিত ভাবে বন্দর শ্রমিক ইউনিয়নে প্রবেশ করে। এসময় উত্তেজিত শ্রমিকরা তাদের প্রতিরোধ করতে গেলে কয়েকজন আহত হয়। এতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর হামলায় দুইজন শ্রমিক আহত হয়েছেন।
যশোর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসেন জানান, স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারে বাধার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলে ৩ শ্রমিক নেতাকে অভিযুক্ত করা হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে তিনজনকে ৫ হাজার টাকা করে ১৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নয়ন কুমার রাজবংশী জানান, হামলার সঙ্গে জড়িত ৩ শ্রমিক নেতাকে অর্থদণ্ড দিয়ে সর্তক করা হয়েছে। এছাড়া আগামীতে যাতে এ ধরনের হামলার ঘটনা না ঘটে এবং প্রার্থীরা স্বাধীনভাবে যেন ভোট প্রচারণা করতে পারে তার জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে।
খুলনা গেজেট/ এএজে, টিএ