যশোরের কেশবপুরের পল্লীতে সুলতানা ইয়াসমিন (২৭) নামে এক মায়ের বিরুদ্ধে জমজ দুই সন্তানকে ডোবার পানিতে নিক্ষেপ করে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার রাতে কেশবপুর শহরের সাহাপাড়া এলাকার নতুন মসজিদের পাশে স্বামীর সঙ্গে পারিবারিক কলহের জের ধরে এ ঘটনাটি ঘটে।
বুধবার সকালে পুলিশ ডোবার পানি থেকে ওই জমজ শিশু দুটির মরদেহ উদ্ধার ও ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে সুলতানা ইয়াসমিনকে আটক করে। সুলতানা ইয়াসমিন পৌর শহরের সাহাপাড়ায় তার বাবা আব্দুল লতিফের বাড়িতে স্বামী আবু বক্কর সিদ্দিককে নিয়ে বসবাস করতেন। নিজ জমজ দুই সন্তানকে সুলতানা ইয়াসমিন ডোবার পানিতে নিক্ষেপ করে হত্যা করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইন।
পুলিশ জানায়, ২০২১ সালের ২৪ এপ্রিল সুলতানা ইয়াসমিনের সঙ্গে আবু বক্করের বিবাহ হয়। দু’জনই এর আগে বিবাহিত ছিলেন। সুলতানার প্রথম পক্ষের সংসারে অহনা ইয়াসমিন (১১) নামে একটি মেয়ে রয়েছে। আবু বক্কর সিদ্দিকের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার পর সুলতানা বুঝতে পারে তার স্বামীর সাথে অন্য নারীর সম্পর্ক আছে। এ কারণে তাদের মধ্যে কলহ লেগে ছিল। সুলতানা স্বামীকে সুপথে ফেরাতে বাচ্চা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। গত ১০ নভেম্বর রাতে কেশবপুর শহরের মাতৃমঙ্গল ক্লিনিকে সিজারের মাধ্যমে সুলতানা ইয়াসমিনের জমজ সন্তান হয়। এর মধ্যে একটি ছেলে ও একটি মেয়ে।
পারিবারিক কলহের কারণে সুলতানা ইয়াসমিন গত ২১ নভেম্বর (মঙ্গলবার) রাত দেড়টার দিকে প্রথমে আরাফ নামে ছেলে সন্তানকে বাড়ির সামনের একটি ডোবার পানিতে নিক্ষেপ করে। পরে ঘরে ফিরে তাসনীম নামে মেয়ে সন্তানকেও ওই রাতেই একই ডোবায় ফেলে দেয়। এরপর ঘরে ফিরে বাচ্চাদের পাওয়া যাচ্ছে না বলে মিথ্যা কাহিনী তৈরি করে পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে খোঁজা খুজির এক পর্যায়ে ওই ডোবা থেকে জমজ বাচ্চা দুটিকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন।
বুধবার সকালে সুলতানা ইয়াসমিনসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সুলতানা ইয়াসমিন তার জমজ বাচ্চা দুটিকে ডোবার পানিতে নিক্ষেপের কথা স্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইন বুধবার দুপুরে বলেন, প্রাথমিক তদন্তে সুলতানা ইয়াসমিন স্বামীর সঙ্গে পারিবারিক কলহের জের ধরে মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত হয়ে নিজ সন্তানদের ডোবার পানিতে নিক্ষেপ করে হত্যা করার কথা স্বীকার করেন। এ বিষয়ে কেশবপুর থানায় মামলা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/ টিএ