খুলনা, বাংলাদেশ | ৫ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২০ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০৩৪
  যাত্রাবাড়িতে ব্যাটারিচালিত অটো রিকশাচালকদের সড়ক অবরোধ, সংঘর্ষে দুই পুলিশ আহত

ভোটের আলোচনায় সমঝোতা-পুন:তফসিল !

গেজেট ডেস্ক

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট পেছানো নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ নির্বাচন পেছাতে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। ওই আহ্বানের পর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।

এ আলোচনার প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশন সূত্র জানিয়েছে, রাজনৈতিক সমঝোতা হলে এবং বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে তারা পুনঃতফশিলের বিষয়টি বিবেচনা করবে। তবে তা আগামী ১০ দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় শেষ হওয়ার পর পুনঃতফশিল করা হলে আইনি জটিলতা তৈরি হতে পারে।

অন্যথায় বিদ্যমান তফশিল অনুযায়ী আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্তে তারা অনড় রয়েছেন। সোমবার (২০ নভেম্বর) পর্যন্ত নির্বাচন পেছাতে ইসির কাছে কোনো পক্ষ থেকে অনুরোধও আসেনি। ইসি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

একাধিক নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ভোট শেষ করতে চায়। বর্তমান কমিশন কোনোভাবেই সংবিধানের বাইরে যাবে না। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতৈক্য হলে পুনঃতফশিলের কথা বিবেচনা করবে।

তারা আরও জানান, রাজনৈতিক সমঝোতায় পুনঃতফশিলের নজির একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও রয়েছে। ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বর তফশিল ঘোষণার চার দিনের মাথায় ওই বছরের ১২ নভেম্বর পুনঃতফশিল করা হয়। ভোটগ্রহণের তারিখ ২৩ ডিসেম্বর থেকে পিছিয়ে ৩০ ডিসেম্বর করা হয়।

এবারও বিএনপি নির্বাচনে এলে পুনঃতফশিল করার জন্য সময় ইসির হাতে রয়েছে। কারণ জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত ভোটের তারিখ নির্ধারণ করার সুযোগ রয়েছে।

নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা সোমবার তার বক্তব্যে ভোট পেছানোর ইঙ্গিত দেন। নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উনারা (বিএনপি) যদি ভোটে আসেন আমরা ওয়েলকাম করব। বিএনপি নির্বাচনে এলে আইন মেনে সুযোগ সৃষ্টি করা হবে।

কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিতে পুনঃতফশিল চাইলে ইসি কোনো পদক্ষেপ নেবে কী না-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উনারা সিদ্ধান্ত নিয়ে নির্বাচনে আসতে চাইলে অবশ্যই আমরা ওয়েলকাম করবো। উনারা নির্বাচনে আসতে চাইলে আমরা ফিরিয়ে দেব-এটা হবে না।

তিনি আরও বলেন, উনারা (বিএনপি) যদি (নির্বাচনে) ফিরতে চান, তাহলে কিভাবে কী করা যায় তা আমরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।

এর আগের দিন রোববার নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর নির্বাচনে অংশ নিতে চাইলে বিএনপিকে সহায়তা দেওয়ার কথা জানান। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মো. আলমগীর বলেছেন, বিএনপি যদি বলে আমরা নির্বাচন করব, আমাদের সহায়তা করেন তাহলে অবশ্যই করব। তবে রাজনৈতিক দলকে কন্ট্রোল করার দায়িত্ব আমাদের না। যারা নির্বাচনে অংশ নেবে তাদের জন্য যতরকম চেষ্টা করা, তা করা হবে। যারা নির্বাচনে আসবে না, তাদের ব্যাপারে কিছু করার নেই।

সংবিধান অনুযায়ী, জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে ভোট করার বিধান রয়েছে। গত ১ নভেম্বর থেকে ওই ৯০ দিন ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে। আগামী ২৯ জানুয়ারির আগেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ, নির্বাচিতদের ফলাফলের গেজেট প্রকাশসহ সব প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে।

জানা গেছে, কমিশন আগামী ১১ জানুয়ারির মধ্যে সব প্রক্রিয়া শেষ করার পরিকল্পনা নিয়েছে। ওই পরিকল্পনায় আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ এবং ৯ জানুয়ারি নবনির্বাচিতদের গেজেট প্রকাশের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। পরের দিন ১০ জানুয়ারি গেজেট জাতীয় সংসদে পাঠাবে।

ওই গেজেট অনুযায়ী জাতীয় সংসদ সচিবালয় নবনির্বাচিত সংসদ-সদস্যদের শপথ পড়ানোর পদক্ষেপ নেবে।

ইসির কর্মকর্তারা জানান, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার কারণে পুনঃতফশিল হলে ইসি নতুন করে কর্মপরিকল্পনা তৈরি করবে। ওই কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা কষ্টসাধ্য কোনো বিষয় নয়। বরং আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টির মতো বড় দলগুলো নির্বাচনে অংশ নিলে ভোটকেন্দ্রে তাদের পোলিং এজেন্ট থাকেন। পোলিং এজেন্টরাই ভোট সুষ্ঠু করতে সহায়ক হিসাবে কাজ করেন। এতে নির্বাচনে কার্যক্রম পরিচালনা করা কমিশনের জন্য সহজ হয়।

ইসি সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার পর্যন্ত এ নির্বাচনে অন্তত ১৫টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল অংশ নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে নির্বাচন কমিশন। ইসিতে চিঠি দিয়ে এ দলগুলো নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা জানিয়েছে।

ওই দলগুলোর মধ্যে রয়েছে-বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল), গণতন্ত্রী পার্টি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, জাতীয় পার্টি (জেপি), তৃণমূল বিএনপি, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি-বিএসপি, গণফ্রন্ট, গণফোরাম এবং ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপি।

ইসিতে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে ৪৪টি। বিএনপিসহ বাকি দলগুলোর অবস্থান সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে তথ্য পায়নি ইসি। তবে কমিশন মনে করছে, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে বাকি দলগুলো ভোটে আসবে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিসহ ৩৯টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছিল।

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!