সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার ছুটিতে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত ভ্রমণে পাসপোর্টধারীদের যাতায়াত বেড়েছে। চারদিনের ছুটিতে পরিবার পরিজন নিয়ে পূজা উপভোগ ও দর্শনীয় স্থান ভ্রমণে ভারতে ছুটছেন যাত্রীরা। অনেকে আবার ভারত থেকে বাংলাদেশে আসছেন। এদিকে যাত্রীদের অভিযোগ, ভ্রমণ কর ও প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল চার্জ দিন দিন বাড়লেও সেবার মান একদম বাড়েনি। পাশাপাশি রয়েছে দালালের হয়রানি ও প্রতারণা। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, সেবা বাড়াতে জায়গা অধিগ্রহণসহ নানান কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
শনিবার (২১ অক্টোবর) সকালে বন্দর এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বেনাপোল স্থলবন্দর জুড়ে ভারতমুখী পাসপোর্টধারী যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। লম্বা ছুটিতে কেউ যাচ্ছেন পরিবার নিয়ে পূজা উদযাপনে, কেউ আবার চিকিৎসা আবার কেউ যাচ্ছে ব্যবসায়িক কাজে।
যাত্রীরা জানায়, বিগত কয়েক বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে নানা বিধিনিষেধ থাকায় পাসপোর্টধারীরা তাদের ইচ্ছেমত ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত করতে পারেনি। এখন নিষেধাজ্ঞা না থাকায় ভারত ভ্রমণে আর কোনো সমস্যা নেই। এবার পূজায় বাংলাদেশে ছুটির সময় কম থাকলেও ভারতে টানা ৪ দিন সরকারি ছুটি থাকছে। দুই দেশ মিলে ২০ অক্টোবর থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত টানা ৫ দিন ছুটি পড়েছে। লম্বা ছুটি পেয়ে পরিবার নিয়ে পূজা উপভোগ, দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ আবার কেউ চিকিৎসা ও ব্যবসায়িক কাজে ছুটছেন ভারতে। বাংলাদেশে অনেক দর্শনীয় স্থান থাকায় ভারত থেকেও আসছেন বিপুল পরিমাণ যাত্রী।
যাত্রীদের অভিযোগ, ভারত ভ্রমণে বাংলাদেশ সরকারকে শিশুদের জন্য ৫৫২ টাকা ও বড়দের ১০৫২ টাকা ভ্রমণ কর এবং ভারত সরকারকে ভিসা ফি বাবদ ৮৪০ টাকা প্রদান করলে সে হিসাবে সেবার মান বাড়েনি। বন্দরে যাত্রী ছাউনি না থাকায় ঠান্ডা-রোদ ও ঝড়-বৃষ্টি মধ্যে সড়কের ওপর লাইন ধরে দাড়াতে হয় যাত্রীদের। এতে নারী, শিশু ও বয়স্করা বেশি ভোগান্তিতে পড়ছে।
ভারতগামী যাত্রী শিপ্রা রানি বলেন, ‘পূজায় ভারতে যাচ্ছি। তবে ভারত ভ্রমণে ভোগান্তির শেষ নেই। ভোর সাড়ে ৩টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়েও ইমিগ্রেশন শেষ করতে পারেনি। এছাড়া দালালদের দৌরাত্ম্য খুব বেশি। এখনই এসব সমস্যার সমাধান করে যাত্রীসেবা বাড়ানো জরুরি হয়ে পড়েছে।’
ভারত থেকে আসা যাত্রী গৌতম প্রামাণিক বলেন, ‘বাংলাদেশে এসেছি পূজা উৎযাপন ও স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে। সময় পেলে দর্শনীয় স্থানগুলোও ঘুরবো।’
বেনাপোল স্থলবন্দরের আর্মড ব্যাটালিয়ন ক্যাম্পের পুলিশ পরিদর্শক সঞ্জীব কুমার বাড়ৈ জানান, যাত্রী চাপ বাড়ায় কিছুটা বিশৃঙ্খলা ঘটছে। তবে কোনো ধরনের হয়রানি ছাড়া যাত্রী পারাপারে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে।
বেনাপোল বন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রেজাউল করিম জানান, স্বাভাবিক সময়ে এ পথে যাতায়াতকারী পাসপোর্টধারী যাত্রীর সংখ্যা ৪ হাজার হলেও বর্তমানে পূজার কারণে এ সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণে দাঁড়িয়েছে। আর যাত্রী সেবা বাড়াতে জায়গা অধিগ্রহণসহ নানান কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বিশ্বাস জানান, পূজা উপলক্ষে যাত্রী চাপ বেড়েছে। সে চিন্তা মাথায় নিয়ে অতিরিক্ত ডেস্ক এবং অফিসার বাড়ানো হয়েছে। যাতে যাত্রীদের কোন ভোগান্তি না হয়। ভারতে অফিসার এবং ডেস্ক বাড়ালে যাত্রীরা ভালোভাবে পার হতে পারতো।
খুলনা গেজেট/এনএম