৮ দিন কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি গবেষণারত তানজিলুর রহমানের মা আনিছা সিদ্দিকা। সোমবার খুলনার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস. এম আশিকুর রহমান তার আবেদন মঞ্জুর করেন। আজ সন্ধ্যায় আনিছা সিদ্দিকা খুলনা জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান।
এর আগে গত ২০ আগস্ট সকালে নগরীর বয়রা হাজী ফয়েজ উদ্দিন সড়কের বাবার বাড়ি থেকে আনিছা সিদ্দিকাকে গ্রেপ্তার করে নগরীর খালিশপুর থানা পুলিশ। গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে খালিশপুর থানার ওসি মনিরুল গিয়াস সাংবাদিকদের বলেছিলেন, অন্তর্ঘাতমূলক ষড়যন্ত্র করার জন্য সমবেত হওয়া আনিছা সিদ্দিকাসহ মোট ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে খালিশপুর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয়েছে।
তবে আনিছা সিদ্দিকার ছেলে যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি গবেষণারত তানজিলুর রহমান অভিযোগ করেন, ফেসবুকে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে নিয়ে লেখালেখি করায় তার মামা বাড়ি ভাঙচুর চালায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগ-যুবলীগের লোকজন। সেখানে গিয়ে ভাঙচুরের প্রতিবাদ করায় তার মাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
ছেলের ফেসবুক স্ট্যাটাসে মা গ্রেপ্তার-সংবাদ নিয়ে দেশে ও বিদেশে সমালোচনার ঝড় ওঠে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোও আনিছা সিদ্দিকার মুক্তি দবি করেন। সোমবার সকালে মার্কিন দূতাবাসও এ সংক্রান্ত সংবাদ শেয়ার করে।
সোমবার বিকালে আনিছা সিদ্দিকার আইনজীবী মনিরুল ইসলাম পান্না বলেন, গত ২২ আগস্ট মহানগর হাকিমের আদালতে প্রথম জামিনের আবেদন করা হয়। কিন্তু জামিন পাওয়া যায়নি। গত ২৪ আগস্ট আবারও জামিনের আবেদন করা হলে তাও নাকচ করেন আদালত। ২৭ আগস্ট খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতে পুনরায় জামিনের আবেদন করা হয়। যা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ক্রিঃ মিস ৮৮২/২৩ নাম্বারে রেকর্ডভুক্ত হয় এবং ৩১ আগস্ট নথি প্রাপ্তি স্বাপেক্ষে শুনানীর জন্য দিন ধার্য্য হয়। আজ ২৮ আগস্ট আদালতে নথি আসায় আইনজীবী পুনরায় শুনানীর আবেদন করেন। মহানগর দায়রা জজ আদালতের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস. এম আশিকুর রহমান জামিন শুনানী করেন। শুনানিতে বয়স ও আর কোন মামলা না থাকায় তার জামিন মঞ্জুর করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে শুনানীতে অংশ নেন মহানগর দায়রা জজ আদালত কে এম ইকবাল হোসেন।
আনিছা সিদ্দিকার স্বামী আলমগীর শিকদার বলেন, সন্ধ্যায় আনিছা সিদ্দিকা কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তিনি শারীরিকভাবে খুবই দুর্বল হয়ে পড়েছেন।
খুলনা গেজেট/এমএম