ফরিদপুরে কাজল রেখা (৩২) নামের এক পাটকল শ্রমিককে ধর্ষণের হত্যার দায়ে পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। সোমবার (২৪ জুলাই) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে এ আদেশ দেন ফরিদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুল রহমান। আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্বপন কুমার পাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মধুখালী উপজেলার আড়পাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম আড়পাড়া গ্রামের চুন্নু সিকদার (৩২), ইসলাম মীর (৩৬), আতিয়ার মোল্লা (৪৬), নাসির খান (৪৪) ও কামারখালী বাজার এলাকার মো. নাজমুল হোসেন (৩৬)। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মধুখালীর রাজধরপুর গ্রামের প্রাইড জুট মিলে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার বরলীদাহ গ্রামের মৃত রাম গোপাল বিশ্বাসের স্বামী পরিত্যক্তা মেয়ে কাজল রেখা (৩২)। চাকরির সুবাদে তিনি রাজধরপুর গ্রামের লাকী বেগমের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। তাকে বাসা থেকে মিলে আনা-নেওয়া করতেন চুন্নু সিকদার নামের এক নসিমন চালক। পরে কাজল রেখা এক ব্যক্তির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এ ঘটনা জেনে চুন্নু সিকদার কাজল রেখাকে সম্পর্ক বাদ দিতে বলেন। কিন্তু কাজল চুন্নুর কথায় রাজি না হলে এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাদানুবাদ হয়।
২০১৯ সালের ১৫ অক্টোবর কাজল রেখার নাইট ডিউটি ছিল। ওই দিন রাত সাড়ে ১১টা থেকে রাত দেড়টার মধ্যে যেকোনো সময় রাজধরপুর গ্রামের বাবু মিলিটারি নামের এক ব্যক্তির কলাবাগানে নিয়ে চুন্নু সিকদার কাজলকে ধর্ষণ করেন। এ সময় বাকি চারজন দেখে ফেলায় তারাও তাকে ধর্ষণ করেন। পরে তারা কাজলকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরদিন ১৬ অক্টোবর সকাল ৭টার দিকে এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ বাবু মিলিটারির কলাবাগান থেকে কাজল রেখার মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় কাজলের মা কল্যাণী বিশ্বাস বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে মধুখালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন মধুখালী থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল আলম ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর পাঁচজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্বপন কুমার পাল বলেন, এ রায়ে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হবে। এর ফলে সমাজ থেকে অপরাধ প্রবণতা কমে আসবে।
খুলনা গেজেট/এমএম