ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে বিস্ফোরিত জাহাজ সাগর নন্দিনী-২ থেকে তেল অপসারণের সময় ফের বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে ঘটনাস্থলে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৯ পুলিশ সদস্যসহ ১১ জন দগ্ধ ও আহত হয়েছেন।
সোমবার (৩ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টার দিকে শহরের পৌরসভার খেয়াঘাট সংলগ্ন সুগন্ধা নদীতে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই স্থানে সাগর নন্দিনী-২ ও সাগর নন্দিনী-৪ নোঙর করা ছিল। এতে শহরজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছেন। আগুনের লেলিহান শিখা দেখে নদী তীরের বাসিন্দারা বাড়ি-ঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য শহরের বিভিন্ন স্থানে ছুটছেন।
ওই স্থানে সাগর নন্দিনী-২ ও সাগর নন্দিনী-৪ নোঙর করা ছিল। পাশেই রয়েছে উদ্ধারকারী জাহাজ নির্ভীক। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাচ্ছে। ঘটনাস্থলে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশসহ বেশ কয়েকজন দগ্ধ হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় শহর জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। জাহাজের ভেতরে ঝালকাঠি থানার এসআই গণেশ চন্দ্র ঘরামীর নেতৃত্বে নৌ পুলিশের তিনজনসহ ১১ জন ওই জাহাজে দায়িত্বরত ছিলেন। তারা সবাই কম বেশি দগ্ধ হয়েছেন বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে পাঁচজনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে সাগর নন্দিনী ২ নামের একটি জ্বালানি তেলবাহী জাহাজে গত শনিবার দুপুরে বিস্ফোরণ হলে আগুন ধরে যায়। এতে ওই জাহাজের চার শ্রমিক দগ্ধ হয়ে মারা যায়। তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় দগ্ধ চারজন শ্রমিককে ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিট ও বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নদীতীরের বাসিন্দা মো. সেলিম বলেন, ‘আমি ঘরের মধ্যে ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ বিকট শব্দে পরপর দুটি বিস্ফোরণ হয়। বাইরে তাকিয়ে দেখি সাগর নন্দিনী ২ জাহাজে আবারও আগুন জ্বলছে। পরিবারের লোকজন নিয়ে শহরের ভেতরে নিরাপদে চলে আসি।’
নদীতীরের কামাল হোসেন বলেন, ‘যেভাবে আগুন জ্বলছে তাতে জাহাজটি সম্পূর্ণ পুড়ে যাবে। আগুনের তাপ নদীর পাড়ের মানুষও পাচ্ছে। কালো ধোয়া আকাশে ছড়িয়ে পড়েছে।’
ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক ফারাহ গুল নিঝুম বলেন, ‘একটি দুর্ঘটনার শোক সইতে না সইতেই আবারও বিস্ফোরণ ঘটেছে। সবাইকে আতঙ্কিত না হয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের ফায়ার সার্ভিস আগুন নেভাতে কাজ করছে।’
খুলনা গেজেট /কেডি