চৈত্রের কাঠফাটা রোদ্দুরে নাভিশ্বাস উঠছে সবার। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে তাপমাত্রা। জীবিকার প্রয়োজনে যাদের প্রতিদিন ঘর থেকে বের হতে হচ্ছে তাদের সম্মুখীন হতে হচ্ছে একাধিক সমস্যায়। গরম হলেও শরীর থেকে তেমন ঘাম বেরোচ্ছে না। এমন পরিস্থিতেই অনেকেই হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারেন।
মায়ো ক্লিনিক জানাচ্ছে, গ্রীষ্মের দিনে অত্যধিক তাপমাত্রাজনিত কারণে শরীর অতিরিক্ত গরম হয়ে যায়। এই সমস্যাকে বলা হয় হিট স্ট্রোক। অনেকক্ষণ তীব্র রোদে থাকার কারণে এই সমস্যা হয়। হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে শরীরের তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে যেতে পেরে।
কী কী লক্ষণ থাকে?
হঠাৎ করে হিট স্ট্রোক হয় না। বেশ কিছু লক্ষণ দেখা যায়। আগে থেকে এই লক্ষণগুলি জানা থাকলে ঝুঁকি অনেকটাই এড়ানো যায়।
১. শরীরের তাপমাত্রা খুবই বেড়ে যায়, তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে যেতে পারে
২. আক্রান্ত ব্যক্তি অদ্ভুত ব্যবহার শুরু করতে পারেন, তার খিঁচুনি হতে পারে
৩. খুব ঘাম হয়
৪. বমি বমি ভাব বা বমি হতে পারে
৫. দ্রুত শ্বাসপ্রশ্বাস
৬. হৃৎস্পন্দন বেড়ে যায়
৭. মাথা ব্যথা হয়
৮. আক্রান্ত ব্যক্তি হঠাৎ করে সংজ্ঞাহীন হয়ে যেতে পারেন
এই লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই সচেতন হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
কাদের হয় হিট স্ট্রোক?
ছোট-বড় সব ধরনের মানুষ হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারেন । যারা অনেক্ষণ ধরে রোদে কাজ করেন বা আগে থেকে কোনও হৃদরোগজনিত সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে হিট স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। এছাড়া যারা এই গরমে খুব পরিশ্রম করছেন, শরীরচর্চা করছেন, তাদেরও এই সমস্যা হতে পারে। এ কারণে দুপুরের দিকে অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম এড়িয়ে যেতে হবে। এছাড়া বাড়ির বয়স্ক ব্যক্তিদের দুপুরের দিকে বাইরে বের হতে দেবেন না। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত তারা ঘরেই থাকুন।
তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিন
কারও মধ্যে হিটর স্ট্রোকের কোনও লক্ষণ দেখা দিলে তাকে দ্রুত একটা ঘরে নিয়ে গিয়ে বসান। এসি বা ফ্যান চালিয়ে দিন। তার জামাকাপড় যতটা সম্ভব খুলে দিতে হবে। চোখে-মুখে-ঘাড়ে ঠান্ডা পানি দিন। তাকে পানি পান করাতেও পারেন। এতেই তার শরীরের তাপমাত্রা কমবে। রোগী একটু স্থির হলে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন।
হিট স্ট্রোক প্রতিরোধের কৌশল
স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবসাইট ওয়েব এমডিতে হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে কিছু নিয়মের কথা বলা হয়েছে। যেমন-
১. এই সময়ে হালকা-সুতি জামাকাপড় পরতে হবে
২. সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন
৩. পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন
৩. বাইরে বেশি সময় না কাটানোই ভালো
৪. খুব সকালে বা রাতের দিকে বাইরের কাজ সেরে ফেলুন,
৫. ছাতা, টুপি ব্যবহার করুন
৬. প্রস্রাবের রঙ হলুদ বা গাঢ় রঙের হলে অবশ্যই পানি পানের পরিমাণ বাড়ান
৭. কফি, অ্যালকোহল পান ইত্যাদি থেকে দূরে থাকুন।
খুলনা গেজেট/এনএম