শুরুর বিপর্যয় ঠেলে অভিজ্ঞ ব্যাটে মুন্সিয়ানা দেখালেন সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম। শেষ দিকে ঝলমলে এক ইনিংস খেললেন মেহেদী হাসান মিরাজও। আইরিশদের করা ২১৪ রানের বিপরীতে মুশফিকের সেঞ্চুরি ও সাকিব-মিরাজের ফিফটির্ধ্বো ইনিংসের পর সবকটি উইকেট হারিয়ে দলীয় ৩৬৯ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। তবে তার আগে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে স্বাগতিকদের লিড বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫৫ রান।
মুশফিক-সাকিবদের ব্যাটে দাপটের দিনে বল হাতে আলো কাড়লেন আইরিশ বোলার অ্যান্ড্রি ম্যাকব্রিন। এদিন একাই ৬ উইকেট নিয়েছেন এই অফ স্পিনার।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম দিন শেষে ৩৪ রানে ২ উইকেট হারিয়ে অস্বস্তিতে ছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে দ্বিতীয় দিনে আজ (বুধবার) বাংলাদেশকে টেনে তোলার ভার ছিল মুমিনুল হক ও মুশফিকের কাঁধে। কিন্তু আগের দিনের চেয়ে মাত্র ৬ রান যোগ করতেই বোল্ড হয়ে ফেরেন মুমিনুল।
অবশ্য সেই চাপে স্বাগতিকদের ভেঙে পড়তে দেননি সাকিব ও মুশফিক। দুজনেই মিলে গড়েন ১৫৯ রানের অনবদ্য এক জুটি। অবশ্য সেঞ্চুরির আক্ষেপ নিয়ে ফিরতে হয়েছে সাকিবকে। শতরান থেকে মাত্র ১৩ রান দূরে থাকতে অফ-স্টাম্পের অনেক বাইরের বল টেনে লেগে খেলতে গিয়ে উইকেটরক্ষকের তালুবন্দী হয়েছেন তিনি। এর আগে সাদা পোশাকে সর্বশেষ সেঞ্চুরি করেছিলেন ২০১৭ সালের ১৪ মার্চ। দীর্ঘ ৬ বছরের সেঞ্চুরিখরা তার আজও কাটানো হলো না।
অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনের স্ট্যাম্পের বাইরের বলে মারতে গিয়ে ৮৭ রানে সাকিব উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন। এর আগে মাত্র ৪৫ বলে সাদা পোশাকে নিজের ৩১তম ফিফটি তুলে নেন সাকিব। ফিফটি পূর্ণ করতে তিনি পরপর দুটি চারের বাউন্ডারি খেলেছিলেন। পরবর্তীতে ১১১ বলে ৮৭ রান করতে সাকিব হাঁকিয়েছেন ১৪টি চার।
সাকিব আক্ষেপ নিয়ে ফিরলেও দিনটা রাঙালেন মুশফিক। মার্ক অ্যাডায়ারের বল পেছনে কাটব্যাক করেই চারের বাউন্ডারি। আর এর মাধ্যমে পূর্ণ করলেন সাদা পোশাকে নিজের দশম সেঞ্চুরি। তবে তেমন উদযাপন করতে দেখা যায়নি। দুই হাত উঁচু করে সাদামাটা উচ্ছ্বাস, যেন তেমন কিছুই হয়নি। টেস্টে দেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান করা এই ব্যাটার দিনের শুরু থেকেই ব্যাটে বেশ দৃঢ়তা দেখিয়েছেন। তার প্রতিদানও পেলেন ঠিকঠাক। দশম সেঞ্চুরির দেখা পেতে তিনি খেলেছেন ১৩৫ বল।
এর আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০২২ সালের ১৫ মে নবম সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছিলেন মিস্টার ডিফেন্ডেবল। মিরপুরে অনুষ্ঠিত সেই ম্যাচে তিনি করেছিলেন হার না ১৭৫ রান। দশম সেঞ্চুরি পেতে তাকে এক বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। অবশ্য দুর্দান্ত খেলতে থাকা মুশফিকও থেমেছেন ব্যক্তিগত ১২৬ রানে। অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে তিনি কামিন্সে তালুবন্দী হন।
শেষ দিকের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে লড়াই করছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ক্যারিয়ারের চতুর্থ টেস্ট ফিফটি পূর্ণ করতে এদিন ৬৬ বল খেলেছেন মিরাজ। ৬ চারের সঙ্গে মেরেছেন ২টি ছক্কা।
মুশফিকুর রহিম আউট হওয়ার সময় ৩১ রানে অপরাজিত ছিলেন মিরাজ। অপরপ্রান্তে তাইজুল ইসলাম, শরিফুল ইসলাম ও ইবাদত হোসেন দ্রুত ফিরে গেলেও দলের রান বাড়ানোর অভিযানে অবিচল ছিলেন এই অলরাউন্ডার। তবে শেষ পর্যন্ত ৫৫ রানের মাথায় হোয়াইটের বলে টাকারের হাতে স্টাম্পিং হয়ে সাজঘরে ফেরেন।
আয়ারল্যান্ড ১ম ইনিংস: ২১৪
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: (আগের দিন ৩৪/২) ৮০.৩ ওভারে ৩৬৯ (মুমিনুল ১৭, মুশফিক ১২৬, সাকিব ৮৭, লিটন ৪৩, মিরাজ ৫৫, তাইজুল ৪, শরিফুল ৪, এবাদত ০, খালেদ ৪*; অ্যাডায়ার ১৭-২-৬৪-২, হিউম ১১-২-৩৭-০, ম্যাকব্রাইন ২৮-২-১১৮-৬, ক্যাম্পার ৮-১-৫৪-০, হোয়াইট ১৩.৩-০-৭১-২, টেক্টর ৩-০-২১-০)।
খুলনা গেজেট/ এসজেড