২০২৩ সালের হজ নিবন্ধনের শেষ দিন আগামী বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ)। এখন পর্যন্ত তিনদফা সময় বাড়ানো হলেও হজের কোটা খালি রয়েছে প্রায় ৪৯ হাজার।
ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ২০২৩ সালে বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজে যেতে পারবেন। কিন্তু ১২ মার্চ সকাল পর্যন্ত হজে যেতে চূড়ান্তভাবে নিবন্ধন করেছেন মাত্র ৭৮ হাজার ১১৩ জন। এ হিসেবে এখন পর্যন্ত ৪৯ হাজার ৮৫ হজযাত্রীর কোটা খালি রয়েছে।
এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালনের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ছয় লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নির্ধারণ করা হয়েছে ছয় লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা। গত বছরের চেয়ে এবার উভয় প্যাকেজেই বেড়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজযাত্রী প্রাক-নিবন্ধন সিস্টেমের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালে হজে যেতে ইচ্ছুক দুই লাখ ৪৯ হাজার ২২৪ জন প্রাক-নিবন্ধন করেছিলেন। এদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাক-নিবন্ধন করেছিলেন আট হাজার ৩৯১ জন। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাক-নিবন্ধন করেছিলেন দুই লাখ ৪০ হাজার ৮৩৩ জন।
প্রাক-নিবন্ধন করতে ৩০ হাজার টাকা (ফেরতযোগ্য) জমা দিতে হয়। আর নিবন্ধনের চূড়ান্ত সময়ে জমা দিতে হয় অবশিষ্ট টাকা। তবে পাহাড়সম এই খরচ না জোগাতে পেরে অনেকেই চূড়ান্ত নিবন্ধন করছেন না। বরং প্রাক-নিবন্ধনের টাকা ফেরত নেওয়ার আবেদন করছেন অনেকে।
সর্বশেষ রোববার ১২ মার্চ সকাল পর্যন্ত হজে যেতে চূড়ান্ত নিবন্ধন করেছেন মাত্র ৭৮ হাজার ১১৩ জন। এদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৯ হাজার ৩৩৭ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৬৮ হাজার ৭৭৬ জন।
উল্লেখ্য, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ-১ শাখার নির্দেশনা অনুযায়ী প্রাক-নিবন্ধনকারীদের হজের চূড়ান্ত নিবন্ধনের শেষ তারিখ ছিল গত ২৩ ফেব্রুয়ারি। প্রথম দফায় এই মেয়াদ ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়। কিন্তু কোটা পূরণ না হওয়ায় দ্বিতীয় দফায় ৭ মার্চ এবং তৃতীয় দফায় ১৬ মার্চ পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে। তবে মন্ত্রণালয় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে এবার আর সময় বৃদ্ধি করা হবে না।
এদিকে হজের প্যাকেজ মূল্য কমিয়ে পুনরায় প্যাকেজ ঘোষণা করতে রিট দায়ের করা হয়েছে। রিটে বাংলাদেশ বিমান ও সৌদি এয়ারলাইন্স ছাড়াও যেকোনো এয়ারলাইন্সে টিকিট কেটে হজে যাওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। রোববার (১২ মার্চ) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আশরাফ উজ জামান জনস্বার্থে এ রিট দায়ের করেন।
ধর্ম সচিব, বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
সোমবার (১৩ মার্চ) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চে রিট আবেদনটির ওপর শুনানি হতে পারে।
এর আগে ৬ মার্চ হজের প্যাকেজ মূল্য সংশোধন করে ৪ লাখ টাকা নির্ধারণ করতে সরকারকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও আল কুরআন স্টাডি সেন্টারের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট আশরাফ উজ জামান ধর্ম মন্ত্রণালয়কে এ নোটিশ পাঠান।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, সৌদি আরব, ইরান, তুরস্কের সরকারকে নোটিশের অনুলিপি পাঠানো হয়েছে। ৭ দিনের মধ্যে হজের প্যাকেজ পুনর্নির্ধারণ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও নোটিশে জানানো হয়। ৭ দিন পার হলেও হজের প্যাকেজ কমানোর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় এ রিট দায়ের করা হয়েছে বলে জানান আইনজীবী আশরাফ উজ জামান।
খুলনা গেজেট/ এসজেড