রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কিশোরগঞ্জের মিঠামইনের কামালপুর গ্রামের বাড়িতে গেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার দুপুরে সরকারপ্রধান সেখানে পৌঁছলে তাঁকে স্বাগত জানান রাষ্ট্রপতির পরিবারের সদস্যরা। প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতির বাড়িতে জোহরের নামাজ পড়েন এবং মধ্যহ্নভোজে অংশ নেন।
এর আগে বেলা ১১টায় হেলিকপ্টারে হাওর উপজেলা মিঠামইনে পৌঁছান সরকারপ্রধান। সেখানে তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ সেনানিবাসের উদ্বোধন করেন।
‘ধান আর মাছের রাজধানী’ খ্যাত হাওরের নানা প্রকারের মাছ দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে আপ্যায়ন করা হয়। খাবারের মেনুতে ছিল স্থানীয় জাতের ঐতিহ্যবাহী রাতাবোরো চাউলের সাদা ভাত, রুই মাছ দোপেঁয়াজা, কাতলা মাছ দোপেঁয়াজা, চিতল মাছ দোপেঁয়াজা, আইড় মাছ দোপেঁয়াজা, পাবদা মাছ দোপেঁয়াজা, গোলসা টেংরা মাছ দোপেঁয়াজা, কালিবাউশ মাছ দোপেঁয়াজা, শোল মাছ ভুনা, বাইম মাছ ভুনা, চিংড়ি মাছ ভুনা, বোয়াল মাছ ভুনা, গ্রাস কার্প মাছ ভুনা, বাছা বাছ ভুনা, রিটা মাছ মাখা মাখা ঝোল, পাঙ্গাস মাছ মাখা মাখা ঝোল এবং মশুর ডাল, সালাদ ও রসমালাই।
খাবার আয়োজনের বিষয়ে রাষ্ট্রপতির ছেলে রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক এমপি জানিয়েছেন- খাবারের মেনুতে আরও রয়েছে রাজহাঁস ও পাতিহাঁসের মাংস। থাকবে মুরগি, খাসি আর গরুর মাংসও। সেই সঙ্গে থাকবে জেলার ব্র্যান্ড পণ্য অষ্টগ্রামের পনির আর নানা জাতের পিঠা। বঙ্গভবনের বাবুর্চিসহ পরিবারের গৃহিণীরাই এসব আয়োজন করছেন।
রাষ্ট্রপতির বাড়িতে বিশ্রাম নিয়ে বিকাল ৩টায় প্রধানমন্ত্রী মিঠামইন হেলিপ্যাডে সুধী সমাবেশে বক্তৃতা করবেন। এতে সভাপতিত্ব করবেন রাষ্ট্রপতির ছোটভাই মিঠামইন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুল হক।
এর আগে ১৯৯৮ সালের সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী মিঠাইনে গিয়েছিলেন। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এই এলাকা থেকে মোট সাত বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। সর্বশেষ ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে জাতীয় সংসদের স্পিকার হয়েছিল। স্পিকারের দায়িত্ব পালনকালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান মারা গেলে আবদুল হামিদকে রাষ্ট্রপতি করা হয়। এরপর তিনি টানা দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। তিনি রাষ্ট্রপতি হবার পর থেকেই বড় ছেলে রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক এই এলাকার সংসদ সদস্য।
হেলিপ্যাডের সুধী সমাবেশে ৮০০ আসন রাখা হলেও পুরো মিঠামইন ইতোমধ্যে লোকে লোকারণ্য হয়ে গেছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলা, এমনকি পাশের হবিগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া এলাকা থেকে শত শত মানুষ নৌপথে মিঠামইনে এসেছেন। বিভিন্ন এলাকা থেকে নির্দিষ্ট টিশার্ট পরে দীর্ঘ মিছিল নিয়েও অনেকে এসেছেন। জেলা সদরসহ জেলার সমতল উপজেলাগুলো থেকেও হাজার হাজার নেতাকর্মী করিমগঞ্জের বালিখলা ঘাট হয়ে নৌপথে মিঠামইন এসেছেন। সমাবেশ শেষে বিকাল ৪টা ৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় ফিরে যাবেন বলে প্রধানমন্ত্রীর প্রকোটল অফিসার-১ মোহাম্মদ শামীম মুসফিক স্বাক্ষরিত সফরসূচিতে উল্লেখ রয়েছে।
খুলনা গেজেট/ এসজেড