খুলনা, বাংলাদেশ | ১৭ মাঘ, ১৪৩১ | ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫

Breaking News

  কুষ্টিয়ার মিরপুরে ট্রাক-সিএনজি অটোরিকশার সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ৩
  রংপুরের চায়নার মোড় মহাসড়কে বাস-মাহিন্দ্রা সংঘর্ষে ৩ জন নিহত
  সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান গ্রেপ্তার
কক্সবাজারের হোটেলে ৫ সহস্রাধিক রোহিঙ্গা নারী

ভয়ংকর রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো, সক্রিয় ১০ দুর্বৃত্ত দল

রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে ১০টি দুর্বৃত্ত দল বর্তমানে সক্রিয় রয়েছে।  আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি বা আরসাসহ তিনটি সন্ত্রাসী গ্রুপ এবং সাতটি ডাকাত দল রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে সক্রিয় রয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ ক্যাম্পের ওপর রয়েছে আরসার নিয়ন্ত্রণ। জিরো লাইনে অবস্থিত তমব্রু কোনাপাড়া ক্যাম্পটিতে নিয়মিত টহল ও নজরদারি জোরদার করা যায়নি। এ কারণে কোনাপাড়া ক্যাম্পটি আরসার সাংগঠনিক কার্যক্রম, প্রশিক্ষণ, মাদক চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনার কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে।

বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। প্রতিবেদনে ৫ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা নারীকে কক্সবাজারে বিভিন্ন হোটেলে দেহব্যবসার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে তথ্য উপস্থাপন করা হয়।

কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ সুবিদ আলী ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটি সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান, মো. ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ এবং মো. নাসির উদ্দিন অংশ নেন।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে ১০টি দুর্বৃত্ত দল বর্তমানে সক্রিয় রয়েছে উল্লে­খ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, এর মধ্যে আরসা সক্রিয় রয়েছে উখিয়া, বালুখালী, পালংখালী, হোয়াইক্যংয়ে। আরএসও এবং মাস্টার মুন্না দল উখিয়া, পালংখালীতে, ইসলামী মাহাজ ও জাবু ডাকাত দল হোয়াইক্যংয়ে এবং নয়াপাড়া ক্যাম্পে চাকমা ডাকাত দল, নবী হোসেন ডাকাত দল, পুতিয়া ডাকাত দল, সালমান শাহ ডাকাত দল, খালেক ডাকাত দল সক্রিয় আছে।

প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, বেশিরভাগ ক্যাম্পের ওপর আরসার নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আরসা ও নবী হোসেন ডাকাত দল প্রায়ই মুখোমুখি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

এতে আরও বলা হয়, আরসার উপস্থিতি ও তাদের সন্দেহজনক কার্যক্রম নিরাপত্তার ঝুঁকি তৈরি করেছে। জিরো লাইনে অবস্থিত তমব্রু কোনাপাড়া ক্যাম্পটি আরসার সাংগঠনিক কার্যক্রম, প্রশিক্ষণ, মাদক চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনার কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে।

প্রতিবেদনে ২০২১ ও ২০২২ সালে সংঘটিত অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের চিত্র তুলে ধরে বলা হয়, সার্বিক অপরাধ কিছু কমেছে। তবে এ সময়ে বেড়েছে হত্যাকাণ্ড। ২০২১ সালে যেখানে ২২টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, ২০২২ সালে তা বেড়ে ৩২টি হয়েছে। আর ২০২১ সালের চুরি-ডাকাতির ঘটনা ৭৭ থেকে কমে ২০২২ সালে ৭৫টি, গোলাগুলির ঘটনা ৫১টা থেকে কমে ১৮টা, অপহরণের ঘটনা ১৭৩টি থেকে কমে ৮৬টি, আন্তঃকোন্দল ১১টি থেকে কমে একটি, মাদকের ঘটনা ২৬৮টি থেকে ২৪৯টি এবং অন্যান্য অপরাধ ৫৬৭টি থেকে কমে ৫৫৩টি সংঘটিত হয়েছে।

জানুয়ারি ২০২১ থেকে ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত ২২২টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে উল্লে­খ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, এর মধ্যে ৯৯টি দুর্ঘটনাজনিত। ৬০টি নাশকতামূলক ও ৬৩টির কারণ জানা যায়নি।

রোহিঙ্গা এলাকা এইচআইভি/এইডস, হেপাটাইটিস সি, ডিপথেরিয়া ইত্যাদির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ উল্লে­খ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, এখন পর্যন্ত কক্সবাজারে ৭১০ জন পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৬১২ জনই রোহিঙ্গা। ডিসেম্বর ২২ পর্যন্ত ৬১ জন রোহিঙ্গা এইচআইভিতে মৃত্যুবরণ করেছে। ৫ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা নারীকে কক্সবাজারে বিভিন্ন হোটেলে দেহব্যবসার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। আর রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে প্রতিদিন ৯৫ জন শিশু জন্মগ্রহণ করে। ২০২৫ সালে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ১২-১৩ লাখ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে।

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!