চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) একজন প্রকল্প পরিচালককে মারধর করেছে ঠিকাদাররা। রবিবার (২৯ জানুয়ারি) বিকালে নগরের টাইগারপাস অস্থায়ী কার্যালয়ের চতুর্থ তলায় প্রকল্প পরিচালক গোলাম ইয়াজদানীর কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। ঠিকাদাররা প্রকল্প পরিচালকের টেবিল ও নামফলকও ভেঙে ফেলেন। হামলার শিকার ইয়াজদানীর দাবি, কাজ না পেয়ে তার ওপর অতর্কিতভাবে হামলা করেছে ‘সংঘবদ্ধ’ ঠিকাদাররা।
ঘটনাস্থলে থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ‘পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে আছে’ জানিয়ে খুলশি থানার ওসি সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছি। ভুক্তভোগীর অভিযোগ পেলে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
চসিক সূত্র জানায়, রবিবার বিকাল পৌনে ৪টায় টাইগারপাসে চসিকের অস্থায়ী প্রধান কার্যালয়ে নিজের দপ্তরে আসেন প্রকল্প পরিচালক মো. গোলাম ইয়াজদানী। এ সময় ২০-২২ জন ঠিকাদার অনুমতি না নিয়ে কক্ষে ঢুকে অর্তকিতভাবে তার ওপর চড়াও হনঅ। ইজদানীকে তারা কিলঘুষি মারতে থাকেন। এ সময় তাকে রক্ষা করতে এলে অফিস সহকারী তিলক দে-কেও মারধর করেন ঠিকাদাররা।
তিলক দে সাংবাকিদের বলেন, স্যারের অনুমতি না নিয়ে ২০ থেকে ২৫ জন লোক ঢুকে কথা বলার একপর্যায়ে স্যারকে মারধর করতে থাকে। তাকে উপর্যুপরি কিল-ঘুষি মারতে থাকেন কয়েকজন। স্যারের নামফলক ও টেবিলের কাচ ভেঙে ফেলে তারা। আমি স্যারকে রক্ষা করতে গেলে তারা আমাকেও বেধড়ক মারধর করে। প্রায় ১০/১২ মিনিট তাণ্ডব চালিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে তারা।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদকর্মীরা। এ সময় মারধরের শিকার প্রকল্প পরিচালক মো. গোলাম ইয়াজদানী সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, তদবির করে সড়কের কাজ না পাওয়ায় কিছু ঠিকাদার আমার কার্যালয়ে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। আমাকে কিল-ঘুষি মেরে আহত করেছে।
প্রসঙ্গত, মো. গোলাম ইয়াজদানী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী। ২০২২ সালের ১৪ আগস্ট তাকে ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওতায় বিমানবন্দর সড়কসহ নগরের বিভিন্ন সড়ক উন্নয়ন ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে অফিস আদেশ জারি করে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
ঠিকাদারদের অভিযোগ, পছন্দের লোকদের কাজ পাইয়ে দেওয়ার দীর্ঘদিনের ক্ষোভ থেকে এমন ঘটনা ঘটেছে। নাম প্রকাশ না করে এক ঠিকাদার জানান, নগরের বিভিন্ন সড়কের উন্নয়ন কাজ পেতে দরপত্রে অংশ নিলে তার (প্রকল্প পরিচালক) পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ দিয়ে নানা অজুহাতের আশ্রয় নেন ইয়াজদানী। শুধু তিন থেকে চারজন ঠিকাদারকে তিনি কাজ পাইয়ে দেন। এ কারণে তার ওপর বিক্ষুব্ধ ঠিকাদাররা আজ এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে।
খুলনা গেজেট/কেডি