উপার্জনক্ষম বাবা আকষ্মিক অসুস্থ হয়ে ঘরে পড়ে আছেন। গোটা পরিবারে অন্ধকার নেমে আসে। এমন সময় সংসারের হাল ধরেন আফরিন সুলতানা। নিজের পড়া শুনার খরচ ও পাশাপাশি অসুস্থ বাবার চিকিৎসা আর সংসার চালাতে শুরু করেন টিউশনি। পাশাপাশি দর্জি ও ব্লকবটিকা প্রশিক্ষণ নিয়েছে। পড়াশুনা শেষ করে এই প্রশিক্ষণ কাজে লাগিয়ে নিজেই উদ্যাক্তা হতে চান। ফিরিয়ে আনতে চান পরিবারের স্বচ্ছলতা। কয়রা উপজেলার সদর ইউনিয়নের গোবরা গ্রামে তার বাড়ি।
শুধু আফরিন কিংবা শিউলী নয় সাবলম্বী হতে প্রশিক্ষণ নিয়েছে খুলনার কয়রা উপজেলার এরকম আর ৩৭৫ জন নারী। কেউ প্রশিক্ষিত হয়েছে ব্লকবটিকা ও দর্জি বিজ্ঞানে, কেউ আবার হাঁস-মুরগী পালনে। কেউ নিয়েছেন মাছ চাষের জন্য। উপকূলীয় নারীদের জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ নজির আহম্মেদ ওয়েলফার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের তত্ত্বাবধানে ১৫ দিনের প্রশিক্ষণ তারা।
তাদের আরেকজন কয়রার সদর ইউনিয়নের মদিনাবাদ তনিমা আলম সুমনা। তাঁর বাবাও বছর সাতেক আগে ব্রেন স্টোক করেন। পরিবারে নেমে আসে অন্ধকারের কালো ছায়া। নিজের চেষ্টায় উচ্চ ম্যাধমিক পাশ করে নিজ বাড়িতে একটি ছোট্ট পুকুরে মাছ চাষ শুরু করেন। নিজের কাধে তুলে নিয়েছেন সংসারের হাল। মাছ চাষের পাশাপাশি হাঁস-মুরগির খামারও করতে চান তিনি। তিনি মাছ চাষের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। পড়াশুনার পাশাপাশি তিনি তার খামারের পরিধি বাড়িয়ে এলাকায় বেকার নারীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে চান তিনি।
রবিবার ( ৮ জানুয়ারি) বেলা ১ টায় উপজেলা সদরের কপোতাক্ষ মহা-বিদ্যালয়ের হল রুমে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রেশমা আক্তারের সভাপতিত্বে প্রশিক্ষণ ভাতা প্রদান ও সনদপত্র বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোস্তাইন বিল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কপোতাক্ষ মহা-বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ অদ্রিস আদিত্য, অধ্যাপক বীদেশরঞ্জন মৃধা, তথ্য সেবা কর্মকর্তা ইসকিতা আফরিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ নজির আহম্মেদ ওশেলফার ফাউন্ডেশনের ম্যানেজার ইকবাল হোসেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ নজির আহম্মেদ ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর নিত্যানন্দ রায়, পাবলিক রিলেশন অফিসার কাজল মুন্সী।
খুলনা গেজেট/ এসজেড