বিশ্বকাপের মূল লড়াইয়ের আগে যেন ছন্নছাড়া বাংলাদেশ। প্রস্তুতি ম্যাচে বিবর্ণ পারফরম্যান্সে হতাশার হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে সাকিব আল হাসানের দল। ব্রিসবেনের অ্যালেন বোর্ডার ফিল্ডে আফগানিস্তানের বিপক্ষে লজ্জাজনকভাবে হেরেছে লাল-সবুজের দল। ২০ ওভারে স্কোরবোর্ডে ১০০’ও তুলতে পারেনি বাংলাদেশ। ৬২ রানের পরাজয়ে মূল মঞ্চে নামার আগে বড় সতর্কবার্তা পেল টিম ম্যানেজম্যান্ট।
১৬১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা দেখেশুনেই করে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ওভারে মেহেদি হাসান মিরাজ বাউন্ডারি হাঁকালেও পরের ২ বলে রান নিতে পারেননি। সেই ওভারর শেষ ২ বলে আরও ২টি বাউন্ডারি হাঁকান নাজমুল হোসেন শান্ত।
কিন্তু তৃতীয় ওভারের শেষ বলে এসে বাংলাদেশ প্রথম উইকেট হারিয়ে বসে। ফজল হক ফারুকির বল শান্তর স্ট্যাম্প ভেঙে দেয়। বলের গতি এতোটাই ছিল বেল উড়ে চলে যায় বাউন্ডারি লাইকের কাছে। এরপর চতুর্থ ওভারের শেষ বলে মুজিব উর রহমানের বলে স্টাম্পিং হন সৌম্য সরকার।
২ উইকেট হারিয়ে বসা বাংলাদেশকে বিপদ মুক্ত করতে মিরাজের সঙ্গে ক্রিজে আসেন সাকিব আল হাসান। কিন্তু অসাধারন এক ডেলিভারিতে সাকিবের স্টাম্প ভেঙে দেন ফারুকি। এরপরের বলে আফিফকে লেগ বিফরের ফাঁদে ফেলেন এই পেসার।
ক্রিজে নেমে ইয়াসির আলি রাব্বিও ফিরতে সময় নেননি। বাউন্স সামাল দিতে না পেরে টপ এজে উইকেটের পেছনে ০ রানে তালুবন্দি হন এই ব্যাটার। ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মাঝে একটু লড়াই করেন নুরুল হাসান সোহান। তবে ৮ বলে ১৩ রান করে ৫০’র আগে তিনিও ফেরেন। এক রান পর নাভিন উল হককে বড় শট মারতে গিয়ে স্টাম্প উড়ে যায় মিরাজের। ৩১ বলে ১৬ রানে ফেরেন তিনি। শেষের দিকে মোসাদ্দেকের লড়াইয়ে ১০০’র কাছে যায় বাংলাদেশ। ২৭ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
এর আগে টস হেরে বোলিং করতে নেমে প্রথম ওভারে দারুণ শুরু করেছিলেন হাসান মাহমুদ, দিয়েছিলেন মাত্র ২ রান। এরপর অবশ্য খানিকটা হাত খুলে খেলার চেষ্টা করেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও হজরতউল্লাহ জাজাই। তৃতীয় ওভারে হাসানের বলে চার ও ছক্কা মারলেও জাজাইকে থিতু হতে দেননি তাসকিন আহমেদ। নিজের দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে তাকে ফেরান তিনি। তাসকিনের ব্যাক অব লেংথ ডেলিভারিতে উড়িয়ে মারতে গিয়ে মোসাদ্দেকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ১৬ বলে ১৫ রান করা জাজাই।
এরপর দ্বিতীয় উইকেটে জুটি গড়েন রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইম্রাহীম জাদরান। দেখে শুনে দলকে ৫০’র ওপর নিয়ে যান তারা। সাকিবের ওভারে ছক্কাও হাঁকান গুরবাজ। কিন্তু এর পরের বলেই সফল হন সাকিব। বাংলাদেশের অধিনায়ককে আবারও ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে আফিফ হোসেনের তালুবন্দি হন গুরবাজ। সঙ্গী হারিয়েও ডারউইশ রাসুলিকে নিয়ে দলকে ১০০’র পথে নিতে থাকেন জাদরান। এগোতে থাকেন হাফ সেঞ্চুরির দিকে। কিন্তু দলীয় ১০০’র আগে ডারউইশ ও ব্যক্তিগত ৪৬ রানে জাদরান উইকেট ছুঁড়ে দেন হাসান ও তাসকিনকে।
৪ উইকেট হারিয়ে বসা আফগানদের আরও বিপদে ফেলেন নাজিবুল্লাহ জাদরান ও উসমান গনি। দলীয় ১২৭ রানে ৬ উইকেট গেলেও মোহাম্মদ নবি স্কোরবোর্ডে রান বাড়াতে থাকেন। তাসকিনের তৃতীয় শিকার হয়ে আজমতউল্লাহ ওমরজাই ফিরলেও, ৩য় ও ৫ম বলে তাকে ছক্কা হাঁকান নবি।
তাতেই ১৬০’র ঘরে পৌঁছে যায় আফগানিস্তান। আফগান দলপতির ১৭ বলে ৪১ রানের সুবাদে ১৬০ রানের পুঁজি পায় আফগানরা। যদিও এর আগে একবার আউট হতে পারতেন নবি, কিন্তু তার ক্যাচ ফেলেছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। জিততে হলে বাংলাদেশকে করতে হবে ১৬১ রান। সাকিব ও হাসান নিয়েছেন ২টি করে উইকেট।