খুলনাবাসীর বহু আকাঙ্ক্ষিত এবং প্রত্যাশিত ভৈরব সেতুর রেলিগেট প্রান্তের ১৪ নং পিলারের পাইল ক্যাপ ঢালাইয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সকাল থেকে শুরু হয় এই পাইল ক্যাপ ঢালাইয়ের প্রস্তুতি। দুপুরের পর শুরু হওয়া ঢালাইয়ের কাজ শেষ হয় রাত ৮ টায়। এ নিয়ে ভৈরব সেতুর মোট ৪ টি পিলারের পাইল ক্যাপ ঢালাইয়ের কাজ সম্পন্ন হলো। ইতিপূর্বে সেতুর দিঘলিয়া প্রান্তে ২৪ এবং ২৫ নং পিলারের পাইল ক্যাপ ঢালাইয়ের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর ইতিমধ্যে পিলার দুইটি দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। একইভাবে সেতুর শহরাংশে রেলিগেট প্রান্তে ১৩ নং পিলারের ঢালাইয়ের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর সেটিও দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে।
আজ মঙ্গলবার সকালে ১৪ নং পিলারের ঢালাইয়ের প্রস্তুতি এবং দুপুরে ঢালাইয়ের কাজ সরজমিনে পরিদর্শন করেন সেতুর তদারকি সংস্থা খুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আনিসুজ্জামান মাসুদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সেতুর কনসালটেন্ট ফার্মের টিম লিডার প্রকৌশলী রইসউদ্দিন, সওজ এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ হাবিবুর রহমান, সেতুর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওয়াহিদ কনন্সট্রাকশন লিঃ (করিম গ্রুপ) এর প্রকৌশলী মোঃ মাহাবুবুর রহমানসহ অন্যান্য প্রকৌশলীবৃন্দ।
প্রসঙ্গতঃ ভূমি অধিগ্রহণে দীর্ঘসূত্রীতার কারণে ভৈরব সেতুর কাজে আশানুরূপ অগ্রগতি হচ্ছিল না। গত ৩১ আগস্ট খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা থেকে সেতুর তদারকি সংস্থা খুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) এর নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে সেতুর দিঘলিয়া প্রান্তের ১০ দশমিক ৩৭৬৭ একর অধিগ্রহণকৃত জমির কাগজপত্র হস্তান্তর করা হয়।
২০১৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর ভৈরব সেতু নামে প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পায়। এরপর ২০২০ সালের ২৭ জুলাই খুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) এর খুলনা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ভৈরব নদীর উপর সেতু নির্মাণ কাজের দরপত্র আহবান করেন। প্রক্রিয়া শেষে ২০২০ সালের ১২ নভেম্বর ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশন লিঃ (করিম গ্রুপ) নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ভৈরব সেতুর নির্মাণ কাজ দেওয়ার বিষয়ে অনুমোদন দেওয়া হয়। এর ১৩ দিন পর ২৬ নভেম্বর উক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। সেতুটির মোট দৈর্ঘ্য হবে ১ দশমিক ৩১৬ কিলোমিটার। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৬’শ ১৭ কোটি ৫৩ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে মূল সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০৩ কোটি টাকা। ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮১ কোটি টাকা। বাকি টাকা সেতু সংক্রান্ত অন্যান্য কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে। ২০২২ সালের ২৫ নভেম্বর ভৈরব সেতুর নির্মাণকাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেতুর নির্মাণ কাজ সম্ভব নয় বলে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর থেকে দেড় বছর সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/ টি আই