প্রকৃতির অকৃত্রিম বন্ধু শামুক বিক্রি করে চলছে হতদরিদ্র পরিবারের জীবন-জীবিকা। তেরখাদা উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী উপজেলায় মাছের ঘেরে সাদা মাছ ও চিংড়ির ঘেরে উৎকৃষ্ট খাবার হিসেবে ব্যবহার করা হয় শামুকের ভেতরের শাষ। শামুক ভেঙে ভিতরের শাষ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছে উপজেলার শতাধিক পরিবার। শামুক নিধনের ফলে প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্টের আশঙ্কা পরিবেশবাদীদের।
তেরখাদা উপজেলার খাল-বিল, ডোবা ও জলাশয়ে শামুক কুড়িয়ে বিক্রির মাধ্যমে বাড়তি আয়ও হচ্ছে। বিলের এসব শামুক যাচ্ছে বিভিন্ন মাছের খামার ও চিংড়ি ঘেরে। ৫০ কেজি ওজনের প্রতিবস্তা শামুক স্থানীয়ভাবে বিক্রি হচ্ছে পাঁচশ’ থেকে সাড়ে ছয়শ’ টাকা করে। উপজেলার তেরখাদা, সাচিয়াদাহ, ছাগলাদাহ, বারাসাত, আজগড়া ও মধুপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন শতশত বস্তা শামুক কেনাবেচা হচ্ছে। শামুক বিক্রি করে এলাকার নিম্নআয়ের প্রায় অর্ধশতাধিক কর্মজীবি মানুষ রোজ হাজার টাকা কামাই করতে পারছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ছোট ছোট নৌকায় করে ভুতিয়ার বিল, বাসুয়াখালী বিলসহ বিভিন্ন বিল থেকে শামুক কুড়িয়ে আনা হচ্ছে। একেকজন দিনে ৩ থেকে ৪ বস্তা শামুক কুড়াতে পারছেন। লক্ষ্য করা গেছে, ভুতিয়ার বিলের পাড়সহ বিলের পার্শ্ববর্তী এলাকার সড়কের পাশে শামুক কেনাবেচা হচ্ছে। স্থানীয় পাইকাররা এসব শামুক সংগ্রহের পর বস্তাবন্দি করছেন।
উপজেলা সদরের কাচিকাটা এলাকার ইমরান শেখ নামে এক ব্যক্তি বলেন, তার আন্ডারে ৭/৮ জন বিলে শামুক কুড়ান। প্রতিবস্তা শামুকের জন্য তাদেরকে দিতে হচ্ছে সাড়ে চারশ’ টাকা। প্রতিবস্তা শামুকের জন্য পাইকার তাকে ৫০ টাকা করে কমিশন দিচ্ছেন। গড়ে প্রতিদিন ২৫/৩০ বস্তা শামুক কেনাবেচা করছেন তিনি। তার মত আরো অনেকেই আছেন বর্ষা মৌসুমে শামুক কেনাবেচা করছেন।
নলিয়ারচর এলাকার আব্দুর রহিম জানান, এসব শামুক ট্রাকে করে খুলনা জেলার বিভিন্ন চিড়িংর ঘের মালিকদের কাছে বিক্রি করা হয়। ঘের মালিকরা এ গুলো প্রক্রিয়াজাত করে চিড়িংর খাবার তৈরী করে থাকেন। বর্ষা মৌসুমে এলাকায় তেমন কোন কাজ না থাকায় শামুকের বাণিজ্য করছেন তারা। অপরদিকে বিনা পুঁজিতে এলাকার অনেকই আছেন সংসারের বাড়তি আয় উপার্জনের জন্য বিভিন্ন জলাশয়ে শামুক কুড়াচ্ছেন।
এদিকে একই এলাকায় শামুক ভাঙার সঙ্গে জড়িত উর্মিলা বিশ্বাস বলেন, আমরা গরীব মানুষ। এই কাজ করে আমাদের ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ ও সংসার চালাতে হয়।
খুলনা গেজেট/ টি আই