টস জয়, দুর্দান্ত শুরুর পর প্রতিপক্ষ যখন স্কোরবোর্ডে ১৭০ রান তুলে ফেলে, তখন চোখ বন্ধ করে যে কেউ বলে দিতে পারবে, যে বোলিং করা দলের মিস ফিল্ডিং করে অকাতরে রান বিলিয়েছে।
পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা এশিয়া কাপ ফাইনালে স্রেফ এ কাজটাই হয়েছে। দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে টস জিতে হারের নজির নেই। এই মাঠে টস জিতে চোখ বন্ধ করে ফিল্ডিং নেন যে কোনো অধিনায়ক এবং প্রতিপক্ষ যত রানই করুক, অনায়াসে সেই রান তাড়া করে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে টস জয়ী দল।
ব্যতিক্রম যে একেবারে নেই তা নয়। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর দুবাইয়ে মোট ২২টি ম্যাচ হয়েছে এই ফাইনালসহ। এর মধ্যে চারটি দল রান তাড়া করতে গিয়ে হেরেছে। চতুর্থ দলটি পাকিস্তান। জিতেছে তিনটি দল। এর মধ্যে ভারত দু’বার, নিউজিল্যান্ড এবং শ্রীলঙ্কা।
একে তো এশিয়া কাপের ফাইনাল, তার ওপর এত এত সুবিধা ম্যাচ থেকে পেয়েছে পাকিস্তান, অন্য কোনো দল এসব পেলে, অনায়াসে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তো। কিন্তু পাকিস্তান পারেনি কেবল বাজে ফিল্ডিংয়ের কারণে।
শুরুতে নাসিম শাহ এবং হারিস রউফ যে দুর্দান্ত বোলিং করছিলেন তাতেই ৫৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বসে শ্রীলঙ্কা। সেখান থেকে ১০০’ও পার হবে কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দেয়।
কিন্তু শুরুর দুর্দান্ত সূচনাই সম্ভবত পাকিস্তানিদের মনে আলস্যভাব তৈরি করে দিয়েছিল। যার ফলে একের পর এক মিস ফিল্ডিং, শাদাব খান যেভাবে ক্যাচ মিস করলেন, আসিফ আলি নিশ্চিত ক্যাচ ধরে ফেলছিলেন; কিন্তু শাদাব খান গিয়ে তাকে ধাক্কা দিয়ে সেটিকে ছক্কায় পরিণত করলেন। শেষ মুহূর্তে বাজে ফিল্ডিং এবং লুজ বল দিয়ে একের পর এক বাউন্ডারি এবং ছক্কা হজম করে পাকিস্তানিরা লঙ্কানদের রান তুলে দেয় ১৭০-এ।
ম্যাচ শেষে প্রথমে এই হারের জন্য বাজে ফিল্ডিংকে দায়ী করলেন উইকেটরক্ষক ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ান। শুরুতে টস নিয়ে বলেন, ‘যে কোনো দলই টস নিয়ে চিন্তা করবে। তারা ভাববে টস জিতলেই বুঝি ম্যাচ জয়! কিন্তু শ্রীলঙ্কা টস নিয়ে ভাবেনি। তারা ম্যাচ নিয়ে ভেবেছে।’
ফিল্ডিং নিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা অবশ্যই জয়ের দাবিদার। প্রথমত তারা আমাদের ভুলগুলোর পূর্ণ সুযোগ নিয়েছে। আমরা অনেক ভুল করেছি। আমরাও মানুষ, ভুল হতেই পারে। অথচ, টুর্নামেন্টজুড়েই আমরা ভালো খেলেছি।’
অধিনায়ক বাবর আজম বলেন, ‘অভিনন্দন শ্রীলঙ্কাকে। দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলেছে। বিশেষ করে আমরা শুরুতে যেভাবে চেপে ধরেছিলাম, একটা জুটিই সেখান থেকে বের করে নিয়েছে তাদেরকে।… আমরা যেভাবে চেয়েছি সেভাবে শেষ করতে পারিনি। আমাদের ফিল্ডিং আজ কোনোভাবেই ভালো ছিল না। খুবই বাজে হয়েছে। আমাদের মিডল অর্ডার যেভাবে চেয়েছিলাম, সেভাবে ক্লিক করেনি।’
হাসারাঙ্গার ক্যাচ ধরতে গিয়ে আসিফ আলি আর শাদাব খানের সংঘর্ষ এবং শাদাবের আহত হয়ে পড়ে থাকার পর টুইট করে শোয়েব আখতার। তিনি লিখেন, ‘সে (শাদাব) আমাদের সেরা ফিল্ডার। এটা সম্ভবত তার জন্য একটা বাজে দিন। তবে, আমাদের দলের আরও ভালোভাবে ক্যাচিং কল কিভাবে দিতে হয়, তা শেখা উচিৎ। এ বিষয়টা এবারের এশিয়া কাপেই কয়েকবার ঘটেছে।’