খুলনার ডুমুরিয়ায় শিম চাষে বিপ্লব ঘটিয়েছে জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত সবজি চাষি আবু হানিফ মোড়ল। চলতি মৌসুমে আগাম জাতের বিষমুক্ত ও পুষ্টি সমৃদ্ধ শিম চাষ করে তিনি স্বাবলম্বী। ডুমুরিয়া উপজেলার খর্নিয়া গ্রামের মৃত সুলতান মোড়লের ছেলে আদর্শ কৃষক আবু হানিফ মোড়ল ।
তিনি এবার খুলনা সাতক্ষীরা মহাসড়কের পাশে ডোংরা বিলে সাড়ে সাত বিঘা মৎস্য ঘেরের আইলে ১ একর ৪০ শতাংশ জমিতে বিষমুক্ত শিম চাষ করেছেন।যা বৈশাখ মাসের মাঝামাঝিতে তিনি বীজ রোপন করেন। সঠিক পরিচর্যা ও নিয়মিত সার প্রয়োগ করলে মাত্র ৬০/৬৫ দিনে শিম উত্তোলন করা সম্ভব বলে তিনি জানান। রাসায়নিক সার ছাড়া ভার্মি কম্পোস্ট ও পোকা দমনে হলুদ কার্ড ও সেক্স ফ্লেমন ফাঁদ ব্যবহার করে তিনি ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। শ্রমিক, সুতা, বাঁশ, সেচসহ ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা তাকে খরচ করতে হয়েছে। বর্তমানে একশত পনের টাকা কেজি দরে প্রতি সপ্তাহে ২শ` থেকে ৩শ`কেজি শিম বাজারজাত করছেন। কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ না আসলে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার শিম বিক্রিয় করতে পারবেন বলে সে আশাবাদী। এছাড়া সাথী ফসল হিসেবে মাচায় করলা ও তরমুজ এবং ঘেরে মৎস্য চাষ করেও তিনি সফলতা অর্জন করেছেন। তার দেখাদেখি সমগ্র ডোংরা বিলে কম খরচে অধিক লাভের আশায় ঘেরের আইলে আগাম শিমচাষে ঝূঁকে পড়েছে কৃষকরা। মহাসড়ক থেকে দক্ষিণে তাকালেই দেখা যায় থোকায় থোকায় পরিপুষ্ট শিম ও শিমের ফুল, নজর কাড়ার মত। গত বছর কৃষি মন্ত্রী কৃষিবিদ ড. আব্দুর রাজ্জাক দক্ষিনাঞ্চল সফরে এসে এ শিমক্ষেত পরিদর্শন করেন এবং এ চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করেন। এ বছর তার শিম বীজ দেশের নওগাঁ, বরিশাল, রাজবাড়ী, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহসহ বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ হয়ে থাকে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ ইনসাদ ইবনে আমিন জানান, ডুমুরিয়া উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে ২শ’ ২৫ হেক্টর জমিতে শিমের চাষ করেছেন। অধিকাংশ ইউনিয়নের মাটি খুবই উর্বর। তাই এখানকার কৃষকদের সবজি বাগান গড়ে তোলার পরামর্শ দেওয়া হয়। কৃষি অফিসের পরামর্শে এখন ওইসব এলাকায় ব্যাপক সবজি চাষ হচ্ছে এবং কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। বর্তমানে উন্নত জাতের শিম এলাকার চাহিদা পূরণ করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হচ্ছে।
টি আই