খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  মহাখালীতে সড়ক-রেললাইন অবরোধ শিক্ষার্থীদের, সারা দেশের সঙ্গে ঢাকার ট্রেন চলাচল বন্ধ
  ভারতের সাথে বন্দি বিনিময় চুক্তির ভিত্তিতে সরকার শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে : চিফ প্রসিকিউটর
  জুলাই-আগস্ট গণহত্যার মামলায় আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ ১৩ জনের শুনানি চলছে
  শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গণহত্যা মামলার তদন্ত শেষ করা ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ ট্রাইব্যুনালের

প্রবাদপ্রতীম অভিনেতা প্রদীপ মুখোপাধ্যায়ের জীবনাবসান

কলকাতা প্রতি‌নি‌ধি

প্রয়াত সত্যজিৎ রায়ের ‘সোমনাথ’। রবিবার সকাল ৮টা বেজে ১৫ মিনিট নাগাদ জীবনাবসান হয় প্রবাদপ্রতিম অভিনেতা প্রদীপ মুখোপাধ্যায়ের । ‘জন অরণ্য’ ছবিতে তাঁর অনবদ্য অভিনয় সকলের মনে এখনও তাজা। ফুসফুসে সংক্রমণ নিয়ে সম্প্রতি নাগেরবাজারের দমদম ক্যান্টনমেন্ট মিউনিসিপ্যাল হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। শারীরিক অবস্থার ক্রমশ অবনতি হতে থাকায় রবিবারই তাঁকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়েছিল।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে এদিন সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন প্রদীপ মুখোপাধ্যায়।

গত ২২ অগাস্ট থেকে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। ৩০৬ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন ছিলেন অভিনেতা। রবিবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। ভেন্টিলেশন সাপোর্টে রাখা হয়েছিল ‘জন অরণ্য’-এর ‘সোমনাথ’-কে।

কিছুদিন আগেও পরিচালক নির্মল চক্রবর্তীর ছবিতে কাজ করছিলেন তিনি। সিনেমার নাম ‘দত্তা’। ওই সিনেমার শ্যুটিং চলাকালীন নাকি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন প্রদীপ মুখোপাধ্যায়। এরপরেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। অভিনেতার প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে টলিউডে।

সাতের দশকে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে হাতেখড়ি হয় প্রদীপ মুখোপাধ্যায়ের। ১৯৭৬ সালে সত্যজিৎ রায়ের হাত ধরে জন অরণ্যতে ছবিতে তাঁর অভিনয়। যা আজও দর্শককে মুগ্ধ করে। এরপর একে একে ১৯৭৮ সালে কাজ করেছেন গোলাপ বউ, দৌড় , দুরাত্মা , দুরের নদী , অশ্লীলতার দায়ে , ললিতা , অন্বেষণ , চপার , মধুগঞ্জনের সুমতি , সতী, মানবপ্রেমিক , সুমতি , আনন্দনিকেতন , পুরুষোত্তম , হিরের আংটি । এরপর সত্যজিৎ রায়ের শাখা প্রশাখা-তেও অভিনয় করেছেন প্রদীপ মুখোপাধ্যায়। এছাড়াও তাঁকে দেখা গিয়েছিল আমি ও মা , বাক্স রহস্য , কালরাত্রি , দহন, চাকা, উৎসব , মন্দ মেয়ের উপাখ্যান , সংগ্রাম , ফালতু , বিহার , ইতি , গোরস্থানে সাবধান , আমি আদু , শত্রু , মায়াবাজার , যেখানে ভূতের ভয় , মাছ মিষ্টি মোর , স্বভূমি , গয়নার বাক্স , বাদশাহী আংটি , সজারুর কাঁটার মতো জনপ্রিয় ছবিগুলিতে। হিন্দি ছবি কাহানি ২ , দ্য পার্সেল ছবিগুলিতেও কাজ করেছেন তিনি।

প্রদীপ মুখোপাধ্যায় মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা-মা সম্মোহন মুখোপাধ্যায় এবং ভক্তি মুখোপাধ্যায়ের। কলকাতার সিমলার চোরবাগান এলাকায় বেড়ে ওঠেন । তিনি ১৯৬৫ সালে হেয়ার স্কুল থেকে তার উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষা সমাপ্ত করেন এবং ১৯৭০ সালে কলকাতার সিটি কলেজ থেকে স্নাতক হন। তিনি আইন নিয়ে পড়াশুনা করেন এবং ১৯৭৩ সালে আইনে স্নাতক হন।

প্রদীপ মুখোপাধ্যায় কলেজে পড়াকালীন নাটকের সাথে যুক্ত হন এবং নাট্য একাডেমিতে যোগ দেন। তিনি কলকাতার তপন থিয়েটারে বেশ কয়েকটি নাটকে অভিনয় করেন। আইনে স্নাতক হওয়ার পর, তিনি একজন আইনজীবী হিসেবে পূর্ণ-সময় কাজ করেন এবং সপ্তাহান্তে নাটকে অভিনয় করতেন। ১৯৭৪ সালে, তিনি সত্যজিৎ রায়ের সাথে সাক্ষাৎ হয়, যিনি নক্ষত্র থিয়েটার গ্রুপে অভিনয় করার সময় তার অভিনয়ে মুগ্ধ হয়ে তাকে কলকাতা ট্রিলজির শেষ সিনেমা জন অরণ্য-এ অভিনয় করান। এই চলচ্চিত্রটি সমালোচকদের প্রশংসা লাভ করে এবং ১৯৭৬ সালে কার্লোভি ভ্যারি পুরস্কার সহ বেশ কয়েকটি পুরস্কার জিতেছিল।

পরবর্তীতে তার কর্মজীবনে, তিনি দূরত্ব (১৯৮১) এবং উৎসব (২০০১) প্রশংসিত চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন ।

প্রদীপ মুখার্জি ১৯৭৭ সালে বিয়ে করেন এবং তার একটি ছেলে এবং একটি মেয়ে রয়েছে। অভিনয়ের পাশাপাশি, তিনি পূর্ব কলকাতার পাতিপুকুর এলাকার লেক টাউনে ট্যাক্স কনসালটেন্ট হিসেবে পুরো সময় কাজ করতেন ।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!