মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ফ.ম মোজাম্মেল হক এম.পি বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিচার হয়েছে। কিন্তু পর্দার অন্তরালে যারা ছিলেন তাদের বিচারের এখন সময় এসেছে। কমিশন গঠন করে সেই সমস্ত মদদ দাতাদের খুঁজে বের করতে হবে। বিশ্ববাসীর সামনে, জাতির সামনে তাদের চিহিৃত করা দরকার। এদের অনেকে মরে গেছে কিন্তু জাতির এ ইতিহাস জানা উচিত। বঙ্গবন্ধু হত্যা কোন ব্যক্তির হত্যা নয়। মুষ্টিমেয় কয়েকজন দুস্কৃতিকারী এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে তা নয়।এটা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র ছিলো।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭ তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। গোপালগঞ্জের শেখ ফজলুল হক মনি স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
১৯৭৫-এর কুশীলবরা আবার হত্যাকন্ড ঘটাতে চায় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমরা যেমন বলি একাত্তরের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার। আপনারা শুনেছেন কিছু দিন আগে বলেছে ৭৫-এর হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার। একাত্তরের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার অর্থ আমরা বুঝি। সেই হাতিয়ার গর্জে উঠার কারণে পাকিস্তান পরাজিত হয়েছে। আমরা দেশকে স্বাধীন করেছি। ৭৫ এর হাতিয়ার বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা।তারা আবার হত্যাকান্ড ঘটাতে চায়। তার আলামত আপনারা প্রত্যক্ষভাবে দেখেছেন ২১ আগস্ট ২০০৪ সালে।কে এর মদদদাতা। বঙ্গবন্ধুর খুনি জিয়ার ছেলে তারেক জিয়া বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে তার হাওয়া ভবনে বসে ষড়যন্ত্র করে হত্যা করতে চেয়েছিলো। এটা আদালত কর্তৃক প্রমাণিত হয়েছে। সে পাকিস্তান থেকে আর্জেস গ্রেনেড এনে সরবরাহ করেছে খুনিদের।
বিএনপি নেত্রীকে উদ্দেশ্য করে মন্ত্রী বলেছেন, যারা মায়ে-পুতে এতিমের টাকা মেরে খেয়েছে।যাদের কাছে এতিমের টাকা নিরাপদ নয়, তাদের কাছে জাতীয় সম্পদ, রাষ্ট্রের সম্পদ নিরাপদ কি ভাবে হয়? আজকে তারা সামনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসার চিন্তা করে না। তাই পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসার জন্য যা যা করণীয় জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সেই ষড়যন্ত্র করছে। আমরা যদি সচেতন না হই এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে তাহলে যারা বলে ৭৫ এর হাতিয়ার, তাহলে তারা সফলকাম হবে। আর আমরা যদি সচেতন থাকি, ঐক্যবদ্ধ থাকি, তাহলে এই দুঃস্বপ্ন কখনোই বাস্তবায়িত হবে না।
মন্ত্রী আরো বলেন, খুনিরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে কেবল একজন ব্যক্তি বা একটি পরিবারকে হত্যা করেনি, বাংলাদেশকে হত্যা করেছিলো। কারণ বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক এবং অভিন্ন। দুটোকে আলাদা করা যাবে না। মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ।খুনি মুস্তাক খুনি জিয়া।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি-র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এমপি।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মশিউর রহমান, গোপালগঞ্জ বশেমুরবিপ্রবি-র উপাচার্য প্রফেসর ড. একিউএম মাহবুব, গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চৌধুরী এমদাদুল হক, সাধারন সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা, পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দীকা, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ লুৎফার রহমান বাচ্চু বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে জেলার ১৮টি কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ উপিস্থিত ছিলেন।
খুলনা গেজেট/ টি আই