সিটি কর্পোরেশন এলাকায় নাগরিক ফোরামের তিন মাসের জরিপের উত্তরদাতাদের মধ্যে ৫৯ শতাংশ ড্রেন পরিষ্কারে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সংখ্যালঘিষ্ট অংশের অভিযোগ নগরীতে নিয়মিত ড্রেন পরিষ্কার হয় না। পরিষ্কার হয় ১৫ দিন বা এক মাস পর পর। জরিপের এ ফলাফলকে অবাস্তব বলেছেন, কেসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।
নাগরিক ফোরামের পক্ষ থেকে ২২ মে-২৭ জুলাই কেসিসি’র বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালিত সোস্যাল অডিটে এ তথ্য প্রকাশ পায়। ৩১ টি ওয়ার্ডের প্রতিটির ১৩ জন করে নগরবাসী নাগরিক ফোরামকে এ তথ্য দিয়েছে। নাগরিক ফোরামের আয়োজনে রুপান্তর ও দ্যা এশিয়া ফাউন্ডেশন এর সহায়তায় সুশাসন উন্নয়নে জনসম্পৃক্তকরণ প্রকল্পের কেসিসি ব্যবস্থাপনার সেবার মান উন্নয়ন বিষয়ক গত সপ্তাহে নগর ভবনের এক পরামর্শ সভায় সুধীজনের সামনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
পরামর্শ সভায় উপস্থাপন করা হয়, কেসিসি’র গাড়ি অনিয়মিত। এজন্য মাঝে মাঝে ময়লা জমে যায়, দুর্গন্ধ ছড়ায়, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়, মশা, মাছি জন্মায়। নগরবাসীর এ অংশ নাগরিক ফোরামের কাছে অভিযোগ করে কর্পোরেশনের ভ্যান নিয়মিত ময়লা সংগ্রহে আসে না। বর্জ্য নেওয়ার সময় নোংরা পানি চুয়ে পড়তে থাকে। ৩৭২ জনের কাছে নাগরিক ফোরাম এ সম্পর্কে প্রশ্ন রাখে। ৭৮ শতাংশ উত্তরদাতা ময়লা অপসারণে সন্তেুাষ্ট নয়। ২২ শতাংশ কেসিসির সার্ভিসে সন্তুষ্ট। উত্তরদাতাদের মধ্যে প্রধান প্রধান সড়কে ঝাড়– দেয়া হয় বলে ৬২ শতাংশ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। উত্তরদাতাদের প্রধান অভিযোগ ঝাড়– দেয়া হয় অনিয়মিতভাবে, কিছু ওয়ার্ডে ঝাড়– দেয়া হয়ই না। ড্রেন পরিষ্কারের ক্ষেত্রে ৬৯ শতাংশ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। উত্তরদাতাদের ৩১ শতাংশ অভিযোগ ড্রেন দায়সারা গোছের পরিষ্কার করা হয়। মশক নিধনের ক্ষেত্রে ৮৪ শতাংশ সন্তোষ প্রকাশ করে। ১৬ শতাংশের অভিযোগ, পর্যাপ্ত পরিমাণ ওষুধ না ছিটানোর কারনে মশা মারা যায় না। নাগরিক সন্তুষ্টি জরিপ ফলাফল উপস্থাপন করেন, নাগরিক ফোরামের নগর শাখার আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম খোকন।
জরিপ প্রসঙ্গে কেসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল আজিজের অভিমত এটি অবাস্তব। ৩৭২ জনের উত্তরের মধ্য দিয়ে নগরীর ৩১ টি ওয়ার্ডের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সঠিক চিত্র ফুটে উঠবে না। তিনি বলেন, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নের জন্য ৭৬৭ জন কর্মী দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও ২শ’ জন আউটসোর্সিং শ্রমিক রয়েছে। নর্দমা পরিষ্কার নিয়মিত হয় বলে তিনি দাবি করেন। জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেনেজ প্রকল্পে ডিজাইন ডেভলপমেন্ট কনসালটেন্ট লিমিটেড ও কুয়েটের শিক্ষক প্রফেসর ড. মোঃ শাহাজান আলী পরামর্শ হিসাবে কাজ করছেন। তিনি বলেন, গৃহস্থলীর আবর্জনা ও উচ্চ ভবন নির্মাণের বালি পড়ে ড্রেনগুলো ভরাট হচ্ছে ।
অপর এক সূত্র বলেছে, কমল পানীয়’র খালি বোতল, পলিথিন, ওয়ান টাইম চায়ের কাপ, ওয়ান টাইম প্লেট ও বাসাবাড়ির বর্জ্য ড্রেনে ফেলার ফলে স্তুপ হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এচিত্র খানজাহান আলী রোড, স্যার ইকবাল রোড, ৪ নং ড্রেন, বাস্তুহারা কলোনী, মিস্ত্রিপাড়া খাল, ক্ষেত্রখালী খাল, দুনায়ালী খাল, তালতলা খাল, বিআইডিসি রোডের।
সিটি কর্পোরেশন এলাকার ৪৫ বর্গ কিলোমিটারের ১২শ’ কিলোমিটারের ড্রেনে ময়লার স্তুপ জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এতে নগর জীবনে দুর্ভোগ নেমে আসে। বর্ষা মৌসুমে নগরবাসীর কর্মঘন্টা নষ্ট হয়। খুলনার এ দুর্ভোগ দীর্ঘদিন ধরে। জলাবদ্ধতা নিরসনে তিন বছর মেয়াদে ৮ শ’ কোটি টাকার প্রকল্প চলছে।
খুলনা গেজেট/ টি আই