না সার্বিক অবস্থা ভালো ছিল কখনও, না সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের যা অবস্থা, তাতে ভালো কিছুর আশা করাই কঠিন। এবার এশিয়া কাপে তো গ্রুপ পর্ব পার হওয়া নিয়েই আছে বড় সংশয়। তবে সেই বাস্তবতা জানা ও মানার পরও টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদের স্বপ্নের সীমানায় আছে ফাইনাল।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে আগামী ২৭ অগাস্ট শুরু হবে এবারের এশিয়া কাপ। গত এশিয়া কাপে আমিরাতেই ফাইনাল খেলে শেষ ওভারে ভারতের কাছে হেরেছিল বাংলাদেশ। তবে সেই আসরটি ছিল ওয়ানডে সংস্করণে।
২০১৬ এশিয়া কাপে টি-টোয়েন্টি সংস্করণেই অবশ্য ফাইনালে খেলেছিল বাংলাদেশ। সেবারও হারতে হয় ভারতের কাছে।
সব মিলিয়ে সবশেষ চার এশিয়া কাপের তিনটিতেই ফাইনাল খেলেছে বাংলাদেশ। তবে এবারের বাস্তবতায় ফাইনালের আগেই আছে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ।
গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের সঙ্গী আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের যে হাল, তাতে এই দুই দলকে হারিয়ে পরের ধাপে যাবে দল, এই বিশ্বাস খুব বেশি লোকের থাকার কথা নয়।
খালেদ মাহমুদ যদিও আছেন বিশ্বাসীদের দলে। মিরপুরে সোমবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে টিম ডিরেক্টর বললেন, ফাইনালকে লক্ষ্য করেই পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন তারা।
“আমাদের প্রথম দুটি ম্যাচ, আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে। ম্যাচগুলো আমরা জিততে চাই। শারজাহ ও দুবাইতে খেলা। উইকেট ও ওখানকার কন্ডিশন আমাদের জানা। ওখানে কী হবে, আমরা জানি। ওসব মাথায় রেখেই আমরা পরিকল্পনা করছি।”
“এশিয়া কাপের দ্বিতীয় পর্বে যাওয়া নিয়ে অনেকের মধ্যেই প্রশ্ন, যেহেতু আমরা এই ফরম্যাটে ভালো করছি না। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, আমরা এটা পারব, সেখানে ভালো করতে পারব। আগেও বাংলাদেশ এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলেছে। ফরম্যাট ৫০ ওভার হোক বা টি-টোয়েন্টি, আমরা ফাইনাল অবশ্যই খেলতে চাই। চাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে, ভালো ক্রিকেট খেলতে।”
খালেদ মাহমুদের এই বিশ্বাসের একটা বড় ভিত্তি সাকিব আল হাসানের টি-টোয়েন্টি নেতৃত্বে ফেরা। জিম্বাবুয়ে সফরের আগে থেকে ভয়ডরহীন ক্রিকেটের গান গাওয়া হচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেটে। কিন্তু মাঠের ক্রিকেটে সেই সুর-তাল দেখা যায়নি। সাকিবের নেতৃত্বে দল তাল ধরতে পারবে বলেই ধারণা টিম ডিরেক্টরের।
“জিম্বাবুয়ে যাওয়ার আগেই বলেছিলাম, ‘ফিয়ারলেস’ কথাটায় বারবার গুরুত্ব দিচ্ছি। সেখানে প্রথম দুই টি-টোয়েন্টিতে আমরা ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলেছি। কিন্তু শেষ ম্যাচে পারিনি। যেভাবে চাই, সেভাবে খেলতে পারিনি। সাকিব ফিরেছে (নেতৃত্বে), এটা খুবই ইতিবাচক দিক। এই ফরম্যাটে সাকিব সবচেয়ে অভিজ্ঞ। দুনিয়াজুড়ে এই ক্রিকেট সে অনেক খেলে।”
“সাকিব একটু আগ্রাসী অধিনায়ক। আমরা ওরকম ক্রিকেটই খেলতে চাই । আমি বলছি না যে বাংলাদেশ হুট করে বদলে গিয়ে এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে। কিন্তু আমরা ওই পথটা ধরতে চাই, কীভাবে আমরা এই ফরম্যাটে ভালো করতে পারব।”
ভয়ডরহীন ক্রিকেটের সম্ভাব্য চিত্র কল্পনা করেছেন খালেদ মাহমুদ, তাতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ব্যাটিংয়ের। টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটিংই বাংলাদেশের মূল সমস্যা। এশিয়া কাপ থেকেই ব্যাটিংয়ে আগ্রাসী ঘরানা দেখতে চান টিম ডিরেক্টর।
“১২০ বলের খেলা, সময়টা খুব কম সিদ্ধান্ত নেওয়ার। গিয়েই আপনাকে মারতে হবে, রানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে খেলতে হবে। এই আগ্রাসন, ওই ভয়ডরহীন ক্রিকেট, আমরা চাই যে ছেলেরা খেলুক। আমি বিশ্বাস করি আমরা এশিয়া কাপেও এভাবে চিন্তা করব। পরিকল্পনা সেভাবেই থাকবে।”
এশিয়া কাপে গ্রুপ পর্বে ৩০ অগাস্ট শারজাহতে আফগানিস্তানের সঙ্গে খেলবে বাংলাদেশ, ১ সেপ্টেম্বর দুবাইয়ে প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা।
খুলনা গেজেট/এইচআরডি