সরকার দেশকে বিপর্যস্ত, দেউলিয়া ও ব্যর্থ রাষ্ট্র বানিয়েছে অভিযোগ করে বিএনপির কেন্দ্রীয় তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল বলেছেন, শিগগিরই সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনের ডাক আসবে। হরতাল আসবে, অবরোধ আসবে, গণভবন ঘেরাও কর্মসূচি আসবে।
এই আন্দোলনকে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ অভিহিত করে বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, যুদ্ধে জয়ী হতে পারলেই গণতন্ত্র ফিরবে, বাকস্বাধীনতা ফিরবে, মৌলিক মানবাধিকার ও সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। আর বিজয়ী না হলে রক্তেমাখা শহীদ নূরে আলম-আব্দুর রহিমের শার্ট পরাজিত হবে।
শুক্রবার (১২ আগষ্ট) বিকেলে খুলনায় বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। জ্বালানী তেলের মূল্যবৃদ্ধি, পরিবহন খাতে ভাড়া বৃদ্ধি, অসহনীয় লোডশেডিং ও সকল পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে মহানগর ও জেলা বিএনপি যৌথভাবে এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
বক্তৃতার শুরুতে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক শেখ সাদীকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার ও পেন্ডিং মামলায় চালান দেয়ার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন আজিজুল বারী হেলাল।
সরকারের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তুলে বিএনপি নেতা হেলাল বলেন, এরা জনগনের সাথে বিদ্যুৎ-গ্যাস-জ্বালানি তেল-পানি-সার-ব্যাংকের রিজার্ভ সব কিছু নিয়ে প্রতারণা ও মিথ্যাচার করেছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আওয়ামী লুটেরাদের আখড়ায় পরিণত করেছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন গত ৭ বছরে ৫৩ হাজার কোটি টাকা মুনাফা করেছে। মুনাফার টাকা কানাডার বেগমপাড়ায় পাচার করে এখন জ্বালানী তেলের দাম বাড়িয়েছে।
কার নির্দেশে ভোলায় দুই বিএনপি কর্মীকে হত্যা করা হলো প্রশ্ন তুলে হেলাল বলেন, পুলিশ কাদের নির্দেশে সেদিন গুলি চালিয়েছিল তার তদন্ত করতে হবে। সরকারের ভেতরে সরকার রয়েছে কিনা সে প্রশ্ন রাখেন তিনি?
বিএনপি সরকার পতনের ষড়যন্ত্র করছে, আওয়ামী লীগের এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আজিজুল বারী হেলাল বলেন, আমার নিবন্ধিত গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রকাশ্যে আপনাদের বিরোধিতা করি। গোপন ষড়যন্ত্র কেন করতে যাবো? আওয়ামী লীগ একটি অপশক্তি। আমরা তাদেরকে রাজপথে মোকাবেলা করবো। কোন চা খাওয়া নয়, কোন সংলাপ নয়, কোন ইভিএম নির্বাচনে অংশ নেয়া নয়।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। নির্বাচন হবে তত্ত¡াবধায়ক সরকারের অধীনে। সেই নির্বাচন হবে অবাধ ও সুষ্ঠু। এই নির্বাচনে দলকে নেত্রত্ব দেবেন দেশনায়ক তারেক রহমান। নির্বাচনের পর সকল দলকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে। আওয়ামী লীগ হবে বিরোধী দল।
খুলনা মহানগর বিএনপির আহবায়ক শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিথি ছিলেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, সহ প্রচার সম্পাদক কৃষিবীদ শামীমুর রহমান শামীম, নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি শেখ মুজিবর রহমান। বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির আহবায়ক আমির এজাজ খান, মহানগর সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, জেলা সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী, বিএনপি নেতা আবু হোসেন বাবু, খান জুলফিকার আলী জুলু, স ম আব্দুর রহমান, সৈয়দা রেহানা ঈসা, সাইফুর রহমান মিন্টু, মোল্লা খায়রুল ইসলাম, আব্দুর রকিব মল্লিক, মোস্তফা উল বারী লাভলু, কাজী মাহমুদ আলী, আজিজুল হাসান দুলু, শের আলম সান্টু, মোল্লা মোশারফ হোসেন মফিজ, আবুল কালাম জিয়া, বদরুল আনাম খান, মাহবুব হাসান পিয়ারু, শেখ তৈয়েবুর রহমান, চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেন, শামীম কবির, একরামুল হক হেলাল, আশরাফুল আলম নান্নু, মেজবাউল আলম, মাসুদ পারভেজ বাবু, হাসানুর রশিদ মিরাজ, এনামুল হক সজল, আব্দুর রাজ্জাক, আশফাকুর রহমান কাকন, শাহিনুল ইসলাম পাখী, মুর্শিদ কামাল, কে এম হুমায়ুন কবির, বিপ্লবুর রহমান কুদ্দুস, কাজী মিজানুর রহমান, এহতেশামুল হক শাওন, এ্যাড. তৌহিদুর রহমান চৌধুরী তুষার, নাজিরউদ্দিন আহমেদ নান্নু, শেখ ইমাম হোসেন, শেখ জামালউদ্দিন, আবু সাঈদ হাওলাদার আব্বাস, মোল্লা ফরিদ আহমেদ, আব্দুস সালাম, আব্দুর রহমান ডিনো, নাজমুল হুদা চৌধুরী সাগর, ফারুক হোসেন হিল্টন, তারিকুল ইসলাম, মোঃ জাহিদ হোসেন, মিজানুর রহমান মিলটন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির কর্মসূচিকে ঘিরে সমগ্র এলাকা জনসমুদ্রে রূপ নেয়। একের পর এক বিশাল বিশাল মিছিল এসে যোগ দেয় সমাবেশে। তিল ধারণের ঠাঁই ছিলনা কোথাও। সমাবেশ থেকে আইয়ুব-মোনায়েম-ইয়াহিয়া-এরশাদ গেছে যেই পথে/ হাসিনা যাবে সেই পথে, মুক্তি মুক্তি মুক্তি চাই, সাদী ভাইয়ের মুক্তি চাই সহ বিভিন্ন শ্লোগান দেওয়া হয়।